অনেকেই অন্যকে নিয়ে ট্রল করতে বেশি আগ্রহী
Published: 12th, August 2025 GMT
প্রথম আলো:
শুনলাম ব্রাত্য বসুর সিনেমায় অভিনয় করবেন?
চঞ্চল চৌধুরী : ঠিকই শুনেছেন, ব্রাত্য বসুর নতুন একটি সিনেমায় অভিনয়ের চূড়ান্ত আলাপ আছে। এর বাইরে আরও কয়েকটি ছবি নিয়ে কথা চলছে। অনেক দিন দেশের বাইরে আসা হয়নি। মাঝে ‘উৎসব’ মুক্তি পেয়েছে, এটা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এবার এলাম ব্রাত্য বসুর সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হতে।
প্রথম আলো :
ছবিটি সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন.
চঞ্চল চৌধুরী : আপাতত কিছুই বলা যাবে না। এটুকু বলতে পারি, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি ছোটগল্প অবলম্বনে ছবিটি তৈরি হচ্ছে, নাম ‘শিকড়’। অক্টোবর থেকে শুটিং।
উৎসব সিনেমার পোস্টারউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এক ঢেউয়ে নিভে গেছে মুন্ডাদের কারাম উৎসবের প্রদীপ
খুলনার সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রার কয়েকটি গ্রামে ছড়িয়ে আছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী মুন্ডাদের দেড় হাজারের বেশি পরিবার। নিজেদের পরিচয়ে গর্বিত এই জনগোষ্ঠীর গ্রামীণ সংস্কৃতির বড় আয়োজন ছিল কারাম উৎসব। একসময় বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকঢোল, করতাল আর মাদল তালে মেতে উঠতেন মুন্ডা তরুণ-তরুণীরা। হতো নাচ–গান, পূজা ও খাওয়াদাওয়া, যা চলত গভীর রাত পর্যন্ত। এখন সে উৎসব নেই, শুধু গল্প হয়ে বেঁচে আছে মানুষের স্মৃতিতে।
এ অবস্থায় আজ ৯ আগস্ট শনিবার পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। তখন থেকে প্রতিবছর আদিবাসীদের অধিকার, সম্মান ও সংস্কৃতি রক্ষায় এদিন পালন করা হয়।
কয়রার নলপাড়া গ্রামের নমিতা রানী মুন্ডা এখনো আশায় বুক বাঁধেন, হয়তো কোনো এক ভোরে আবার কারাম উৎসব ফিরবে। তাঁর ভাঙা ঘরের বারান্দায় বসে কারাম উৎসবের কথা তুলতেই আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘২০০৯ সালের আইলার আগেই শেষবার হইছিল। এরপর আর হয়নি। কারামগাছই তো নেই, উৎসব হবে কীভাবে?’
কারামগাছ—যেটাকে স্থানীয়ভাবে খিলকদম বলা হয়। এই গাছের ডাল ছাড়া কারাম উৎসব অপূর্ণ। মুন্ডারা বিশ্বাস করেন, এই গাছের ডালে লুকানো আছে সমৃদ্ধি আর মঙ্গল।
সম্প্রতি কয়রা উপজেলার মুন্ডাপাড়ার উঠান থেকে উঠান ঘুরে জানা গেল, গল্পের মতো—কীভাবে এক ঢেউয়ে, এক ঝড়ে হারিয়ে গেছে একটি গোটা উৎসব। তাঁদের কথায়, ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় বাঁধভাঙা নোনাপানির ঢেউয়ে ডুবে যায় উৎসবের মাঠ, উঠান আর বেদি। জমির লবণাক্ততা এমনভাবে জমে বসে, যে কারামগাছ আর বাঁচে না। মাঝেরপাড়ার পরশুরাম মুন্ডা বলেন, ‘গাছ নাই, উদ্যোগী মানুষও নাই। এই গ্রামের নকুল মুন্ডা বাইচে থাকলি হয়তো উৎসব কুরত। নকুল মুন্ডার ছাওয়ালডাও (ছেলে) বেকার হুয়ি পাড়ি দেছে পাশের দেশ ভারতে।’
কয়রার বতুলবাজার এলাকায় গিয়ে কথা হয় স্বপন মুন্ডার সঙ্গে। তিনি পেশায় দিনমজুর। ঘরের ছাউনি ঠিক করার ফাঁকে বললেন, ‘আগে কত আনন্দ হইতো! নাচ-গান, খাওয়াদাওয়া। এক রাত এক দিন চইলতো কারাম উৎসব। কিন্তু আইলার পর সব শেষ।’ পাশ থেকে স্ত্রী রেনু বালা মুন্ডা শোনালেন তেতো বাস্তবতা, ‘উৎসব করতে কত টাকা লাগে জানেন? একটু আগে আলু ধার কইরে আনছি, উনি আছে উৎসবের চিন্তায়! গরিবের আবার উৎসব?’
কাটকাটা গ্রামের লক্ষী রানী মুন্ডার শৈশব কেটেছে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নে। বিয়ের পর কয়রায় এসে আর দেখেননি সেই উৎসব। তিনি বলেন, ‘বাপের বাড়িতে ছোটবেলায় কত দেখিছি। এখন আর হয় না। শুনিছি উত্তরাঞ্চলের দিকিত্তে কেউ কারামগাছের চারা আইনে এলাকায় লাগাইল, কিন্তু বাঁচানো যায়নি।’
যে জায়গায় কারাম উৎসবের বেদি সাজানো হতো, সেখানে এখন কেবল শূন্যতা। কয়রার মাঝেরপাড়া গ্রামের নকুল মুন্ডার বাড়ি–সংলগ্ন কারাম উৎসবের স্থান। সম্প্রতি তোলা