উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক: ৩৬৭ সংস্কার প্রস্তাবের ৩৭টি বাস্তবায়িত
Published: 14th, August 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৩৬৭টি প্রস্তাবকে আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। যার মধ্যে ৩৭টি সংস্কার প্রস্তাব এরই মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৩৮তম বৈঠকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম জানান, এর আগে ১২১টি সংস্কার প্রস্তাব আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে আরো ২৪৬টি। সব মিলিয়ে এখন ৩৬৭টি সংস্কার প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
আরো পড়ুন:
দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকার উদ্দেশে কুয়ালালামপুর ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
আশু বাস্তবায়নের তালিকায় নতুন যুক্ত হওয়া সংস্কার সুপারিশগুলোর মধ্যে শ্রম কমিশনের ৮২টি, নারী কমিশনের ৭১টি, স্থানীয় সরকার বিষয়ক ৩৭, স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিশনের ৩৩টি এবং গণমাধ্যম বিষয়ক সংস্কার কমিশনের ২৩টি সুপারিশ রয়েছে। এছাড়া আরো ৩১৬টি সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য পর্যালোচনাধীন আছে।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের সুপারিশ করতে সরকার মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল, সব কয়টি কমিশন তাদের সংস্কার সুপারিশ এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার সদ্যসমাপ্ত মালয়েশিয়া সফর সফল হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম জানান, মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা সে দেশের শ্রমিকদের মতো সামাজিক সুরক্ষা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে, একইসঙ্গে বাংলাদেশি শ্রমিকরা বাংলায় তাদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানাতে পারবে।
এটা একটা ল্যান্ডমার্ক ট্যুর ছিল দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মালয়েশিয়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তারক্ষী, কেয়ার গিভার ও বাংলাদেশের যারা সে দেশে পড়াশোনা করছে তাদের জন্য যথাযথ মর্যাদার চাকরির সুযোগ তৈরির অনুরোধ জানানো হয়েছে। মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। এর বাইরে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ কাঠামো' অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা আগে ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ)' হিসেবে পরিচিত ছিল। এছাড়া ‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মী পুনঃএকত্রীকরণ নীতি, ২০২৫' অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ, এ নীতির মাধ্যমে বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিবে সরকার।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স স ক র প রস ত ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ঘিরে আতঙ্ক নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ঘিরে দেশে কোনো আতঙ্ক নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সবকিছু স্বাভাবিক। সড়কে কোনো আতঙ্ক নেই। তবে ছোটখাটো দু-একটা ঘটনা ঘটছে।
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বরিশাল, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ কিছুটা কঠিন জায়গা। তবে ওই সব জেলায় এখন পর্যন্ত বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি। শুধু করাত দিয়ে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বড় গাছ হওয়ায় সরাতে সময় লাগে। মহাসড়ক থেকে সরাতে সময় লাগছে। রায়কে ঘিরে কেউ কেউ ককটেল ফাটাচ্ছে। যারা ফাটাচ্ছে তারা ধরা পড়ছে।
শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের বিষয়ে উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বলা দরকার যে তোমরা স্কুল–কলেজে পড়াশোনা করো। এটা দেখার জন্য আমরা আছি। আমরা দেখব।’ উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেকে উসকে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা সদস্য পাঠানো হয়েছে।
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে আবার চিঠি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইল উপদেষ্টা বলেন, ‘দরকার পড়লে ভারতকে আমরা আবার চিঠি দেব।’
মানুষ, পুলিশ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল নিক্ষেপকারীদের গুলি করতে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী যে নির্দেশ দিয়েছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আত্মরক্ষার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নিজে বিপদে থাকলে গুলি পরিচালনা করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে।