জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে ফুটে উঠেছে উৎসবের আমেজ। রঙিন কাগজ, বেলুন আর রঙতুলির সাজে সেজে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। সব আয়োজন ঘিরে মূল উদ্দেশ্য ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের (১৯তম ব্যাচ) বরণ করা।

এ আয়োজনের নেতৃত্ব দিয়েছে সদ্য সিনিয়র হওয়া ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা, যাদের প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর হয়ে উঠেছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।

রবিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ১১টায় ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে বরণ করে নেওয়া হয় এ নবীন শিক্ষার্থীদের। এছাড়া প্রত্যেক বিভাগ থেকে পৃথকভাবে নানা আয়োজনে বরণ করে নেওয়া হয় তাদের।

আরো পড়ুন:

নবীনদের বরণ করে নিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শাবিতে লোকপ্রশাসনকে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

সকাল ৯টা থেকেই নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন শুরু হয়। চুরুলিয়া মঞ্চ, জয়ধ্বনি মঞ্চ, চক্রবাক ক্যাফেটেরিয়া, নজরুল ভাস্কর্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি স্পটে ছিল তাদের পদচারণা।

নবীন শিক্ষার্থী ফাহাদ বলেন, “প্রথমে খুব টেনশন হচ্ছিলো—এতো দূরে এসে কোথায় থাকব, কীভাবে মানিয়ে নেব। তবে সিনিয়র ভাইদের সহায়তায় সব সহজ হয়ে গেছে। পরিবার থেকে এই প্রথম দূরে থাকছি, শুরুতে অস্বস্তি লাগলেও ব্যাচমেটদের সঙ্গে পরিচয়ের পর অনেকটা স্বস্তি পেয়েছি। আমাদের ঘিরে এত আয়োজন দেখে সত্যিই ভালো লাগছে।”

শিক্ষার্থী সামিরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “আজ জীবনের অন্যতম সুন্দর একটি দিন কাটাচ্ছি। আব্বু-আম্মু এসেছেন আমার সঙ্গে, তাই আনন্দটা আরো বেড়ে গেছে। কাঙ্ক্ষিত বিভাগে ভর্তি হতে পেরে আমি খুব খুশি। সিনিয়রদের ব্যবহারও অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ। আশা করি এই ক্যাম্পাসে দারুণ সময় কাটাতে পারব।”

শুধু শিক্ষার্থী নয়, অভিভাবকদের মধ্যেও ছিলো আনন্দের ছোঁয়া। ঢাকা থেকে আসা এক অভিভাবক বলেন, “আজকের দিনটি আমার সন্তানের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ, ভবন আর গাছপালা সত্যিই সুন্দর। দোয়া করি—এখান থেকে ছেলে-মেয়েরা যেন ভালো ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারে।”
 

ঢাকা/মুজিবুর/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নব ন শ ক ষ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার

পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।

গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

আরো পড়ুন:

‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার

বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার 

এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।

এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।

নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”

ঢাকা/শাহীন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ