৫৬৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালমানসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে বিটিআরসির মামলা
Published: 19th, September 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তাঁর ছেলে শায়ান রহমানসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে ৫৬৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
বৃহস্পতিবার রাতে বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গুলশান থানায় এই মামলা করেন।
শুক্রবার রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার তারেক মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় সালমান এফ রহমান, তাঁর ছেলেসহ ২৭টি আইজিডব্লিউ (ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে) অপারেটরকে আসামি করা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৭৩, ৭৪ ও ৭৬ ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মামলার আসামিরা আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরামের সদস্য। বিদেশ থেকে কোনো ফোন কল এলে সেগুলোকে দেশি অপারেটরে স্থানান্তরের জন্য বিগত সরকারের আমলে আইজিডব্লিউ লাইসেন্স দেওয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরামের বিরুদ্ধে টাকা না দিয়ে চলে যাওয়া এবং অল্প কিছু টাকার যন্ত্রপাতি বসিয়ে শত শত কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
গত ৭ জুলাই ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময়ে আইসিএক্স (ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ), আইজিডব্লিউ ও আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) লাইসেন্সধারী ‘দলীয় অপারেটরদের’ অনেকে সরকারের দুই হাজার কোটি টাকার বেশি অনাদায়ি রেখে কোম্পানি বন্ধ করে চলে গেছেন বলে অভিযোগ করেন।
আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ২০১৩ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে সাতটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম বা আইওএফ নামে একটি জোট গঠনের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
আইজিডব্লিউসহ টেলিকম খাতের মধ্যস্তরের কোম্পানিগুলোকে কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি বসিয়ে শত শত কোটি টাকা তুলে নেওয়ার সুযোগ বিগত সময়ে দেওয়া হয়েছে বলেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেন প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট রহম ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় শতাধিক উদ্যোক্তা, গাছী ও গবেষক নিয়ে রাবিতে গুড় সম্মেলন
দেশের ৬৪টি জেলা থেকে প্রায় ছয় শতাধিক গুড় উৎপাদনকারী, গাছী, উদ্যোক্তা এবং গবেষক নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় ‘গুড় সম্মেলন ২০২৫’।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ‘রস ও গুড়’ এবং রাবি উদ্যোক্তা ডেভেলপমেন্ট ক্লাবের আয়োজনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখকের রাবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা
বিশ্ব শিক্ষক দিবস: রাবিতে ৩ অধ্যাপককে সম্মাননা
এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের আপ্যায়নে ছিল চা, তাও খেজুরের বিচি দিয়ে তৈরি। খাবার খাওয়ার পর ডেজার্ট হিসেবে ছিল ঘ্রাণ ছড়ানো নতুন খেজুর গুড়ের পায়েশ। এসময় কয়েকটি স্টলে গুড় উৎপাদন, গুড় গবেষণা, বাজারজাতকরণ ও বিভিন্ন প্রকার গুড়ের প্রদর্শনী করা হয়। খেজুরপাতা দিয়ে তৈরি মসজিদ, জায়নামাজ, তসবীহ ছিল অন্যতম আকর্ষণ।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া গবেষক ও উদ্যোক্তা সৈয়দ মুহাম্মদ মঈনুল আনোয়ার বলেন, “আমরা চাই গুড়ের মত একটা সম্ভবনাময় শিল্পকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে। গুড়কে বিশুদ্ধভাবে সরবরাহ করা এবং বিদেশে গুড় রপ্তানি করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। অন্যদিকে বিদেশ থেকে আমরা চাইনিজ জায়নামাজ, মেসওয়াক, তসবীহসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে থাকি। কিন্তু আমরা চাইলেই খেজুর গাছের বিভিন্ন অংশ দিয়ে দৈনন্দিন বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারি।”
সম্মেলনে অংশ নেওয়া আরেক উদ্যোক্তা বলেন, “এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। সম্মেলনে এসে আমরা জানতে পেরেছি কীভাবে ভালো গুড় উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ভোক্তাদের কাছে বাজারজাতকরণ করা যায়। এই সম্মলনের মাধ্যমে আমরা যতটা সচেতন হব, ঠিক ততটাই উপকৃত হবে ভোক্তারা।”
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন বলেন, “আমরা যে গুড় খেয়ে থাকি সেখানে কোনো ক্যামিকাল থাকে না কিন্তু আমরা যে চিনি খাই সেটা অনেক প্রকার ক্যামিকাল দিয়ে তৈরি। গরম চায়ে আমরা যখন চিনি ব্যবহার করছি, তখন আরো প্রায় ২৭ প্রকার ক্যামিক্যাল উৎপন্ন হচ্ছে, যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অন্যদিকে গুড়ের ব্যবহারে এমন কোনো ক্ষতি নেই। এটা অর্গানিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত। গুড়ের ব্যবহারের প্রচলন আমাদের বাড়াতে হবে।”
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসআরআই-এর মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “হোয়াইট সুগার এবং লবণ এগুলো হচ্ছে হোয়াইট পয়জন। হোয়াইট সুগার বাদ দিয়ে গুড় অথবা ব্রাউন সুগার বেছে নেওয়া উচিত। গুড় শরীরকে ঠান্ডা রাখে। আমরা চা, শরবত অথবা মিষ্টিজাতীয় খাবারে গুড় ব্যবহার করতে পারি।”
উদোক্ত্যাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা বিরাট অংশজুড়ে আছেন। চাকরিপ্রত্যাশীদের চাকরির পেছনে না দৌড়ে উদোক্ত্যা হওয়া উচিত। এতে একাধারে যেমন সে নিজে সাবলম্বী হতে পারবে, পাশাপাশি আরো দশজন বেকার সাবলম্বী হবে।”
ঢাকা/ফাহিম/রাসেল