যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের আগমন নিয়ন্ত্রণ করতে এইচ-ওয়ান বি ভিসার বার্ষিক ফি ১ হাজার ৫০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ডলারে উন্নীত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আরো পড়ুন:

বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারফোর্সের যৌথ অনুশীলন সমাপ্ত

ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের খরচ বেড়েছে যুক্তরাজ্যে

প্রতিবেদনে বলা হয়, এইচ-ওয়ান বি একটি বিশেষ ভিসা কর্মসূচি, যার আওতায় মার্কিন কোম্পানিগুলো অস্থায়ীভাবে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ দিয়ে থাকে। ২০০৪ সাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি বা প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর ৮৫ হাজার বিদেশি কর্মীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ও কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়।

মূলত বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রকৌশল বিদ্যা এবং ব্যাবসায় প্রশাসনে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হয় এ ভিসার আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অ্যামাজন, মাইক্রোসফট, মেটা, অ্যাপল, গুগল প্রভৃতি বড় কোম্পানিগুলো এই ভিসা কর্মসূচির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী। শত শত বিদেশি কর্মী এই কোম্পানিগুলোতে কাজ করেন। এতদিন কোম্পানিগুলোকে বছরে ১ হাজার ৫০০ ডলার ফি দিতে হতো। এখন তা বেড়ে ১ লাখ ডলার করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকর্মীদের স্টেম ওয়ার্কার বলা হয়। মার্কিন পরিসংখ্যান দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, ২০০০ সালে দেশটিতে বিদেশি স্টেম ওয়ার্কার সংখ্যা যত ছিল, এইচ-ওয়ান বি ভিসা কর্মসূচির চালু হওয়ার পর সেখানে আরো ২৫ লাখ বিদেশি স্টেম ওয়ার্কার যোগ হয়েছেন। ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই কর্মীদের হার বেড়েছে ৪৪.

৫ শতাংশ, যার অধিকাংশই ভারত ও চীন থেকে আসা।

শুক্রবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, “বড় বড় কোম্পানিগুলো প্রতি বছর লাখ লাখ বিদেশি কর্মীকে যুক্তরাষ্ট্রে আনছে। এই ভিসা ফি বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা তাদের এই বার্তা দিতে চাই যে, যদি আপনারা দক্ষ কর্মী চান- তাহলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ডিগ্রি নেওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়োগ করুন, অথবা মার্কিনিদের প্রশিক্ষিত করুন। বাইরের লোকজনদের আমাদের চাকরি কেড়ে নিতে দেবেন না।”

রয়টার্স বলছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি খাত বড়সড় ধাক্কা খেতে চলেছে। বেশিরভাগ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাই দক্ষ বিদেশি কর্মীদের উপর নির্ভর করে থাকে। বেশিরভাগ কর্মী যান ভারত এবং চীন থেকে। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নিয়মে আলাদা করে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি। যেকোনো দেশের দক্ষ কর্মচারীর ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তবে প্রধানত ভারত ও চিনের কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি পাওয়া এর পর কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে এইচ–ওয়ান বি ভিসা থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছেন ভারতীয় কর্মীরা। ভারত থেকে ৭১ শতাংশ আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানেই আছে চীন। সেখান থেকে ১১.৭ শতাংশ ভিসার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।

এইচ–ওয়ান বি ভিসার জন্য ফি এক ধাক্কায় এতটা বেড়ে যাওয়ায়, ভারত–সহ বিশ্বের অন্য দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মী নিয়োগে কোম্পানিগুলো কতটা উৎসাহী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ নিয়ে অ্যামাজন, অ্যাপেল, গুগল এবং মেটার মতো সংস্থা এখনও মুখ খোলেনি।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র কর ম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

কলকাতার বাজারে পৌঁছালো বাংলাদেশের ইলিশ, আকাশ ছোঁয়া দাম

 

আবেগের কারণে চাহিদা আছে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের, তবে বাজার নষ্ট করেছে গুজরাটের ইলিশ। যে বাঙালি একবার ৫০০/৬০০ রুপির ইলিশ খেয়েছে সে সহজেই ১৭০০/২০০০ রুপির ইলিশ কিনবে না। বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশ কলকাতার বাজারে পৌঁছাতেই এমন অভিযোগ করছেন ভারতের মাছ ব্যবসায়ীরা।

আরো পড়ুন:

৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের ভারতীয় জলসীমায় গ্রেপ্তার ১৩ বাংলাদেশি

জলবায়ু পরিবর্তনে বদলাচ্ছে রোগের চিত্র, বাড়ছে বিরল সংক্রমণ 

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কলকাতার পাইকারি বাজারের হাত ধরে খুচরো বাজারে এসে গেল বহু প্রতীক্ষিত পদ্মার ইলিশ। প্রথম দিনে দাম ছিল তুঙ্গে, তাই কলকাতা ও শহরতলীর ক্ষুদ্র খুচরো ব্যবসায়ীদের মধ্যে পদ্মার ইলিশের চাহিদা ছিল তুলনামূলক কম। 

প্রথম দফায় মঙ্গলবার রাতে ৮টি ট্রাকে ৩৮ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ বেনাপোল সীমান্ত বেরিয়ে ভারতে আসে। বৃহস্পতিবার সেই ট্রাক পৌঁছে যায় হাওড়ার পাইকারি বাজারে। এদিন সকাল থেকেই কলকাতা এবং হাওড়ার বাজারের খুচরো মাছ ব্যবসায়ীরা সেই মাছ সংগ্রহ করার জন্য নিলামে অংশ নেন। তবে প্রথম দিনের পাইকারি দামে হতাশ খুচরো ব্যবসায়ীরা। 

ব্যবসায়ীরা বলেন, মোটামুটি তারা প্রথম দিন পাইকারি বাজারে যে বাজারদর দেখছেন তাতে  ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির ইলিশের দাম ১৫০০-১৭০০ রুপি। ১ কেজির বেশি ওজন হলে ১৮০০ থেকে ২০০০ রুপির মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। খুচরো বাজারে এই দাম বেশ কিছুটা বাড়বে। তবে এই দাম চূড়ান্ত নয়।

বাঘাযতীনের খুচরো মাছ ব্যবসায়ী শম্ভু দাস বলেন, ১ কেজি সাইজের ইলিশ আমি ১৬০০ রুপি বলেছিলাম কিন্তু ওরা ১৭০০ রুপির নিচে দেবে না। খরচ দিয়ে বাজার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া এবং সেখানে কিছু বাড়তি দামে বিক্রি করা। এত দামি মাছ আমাদের বাজারে চলবে না। 

তিনি আরো বলেন, পদ্মা ইলিশের ব্যাপক চাহিদা কলকাতার বাজারে ছিল, তবে বাজার নষ্ট করেছে গুজরাটের ইলিশ। যদি গুজরাটের ইলিশে বাজার সয়লাব না হতো তাহলে বাজার একই রকম থাকতো।

কাঁচরাপাড়ার খুচরো মাছ ব্যবসায়ী মনোজ কুমার সাউ বলেন, প্রথমদিন, দাম বেশি, তাই আমরা হিমশিম খাচ্ছি, গুজরাটের ইলিশের সঙ্গে দামের পার্থক্য প্রায় হাজার রুপি। তাই বাজারে চাহিদা বোঝার আগে বেশি পরিমাণে ইলিশ নেওয়ার সাহস পাচ্ছি না। অন্যান্য বছর যেখানে ৫০/১০০ কেজি মাছ নিই, এবার ২৯ কেজি নিচ্ছি। কারণ গুজরাটের দামের সঙ্গে আমি অ্যাডজাস্ট করতে পারব না। যে ক্রেতা একবার ৫০০/৬০০ রুপির ইলিশ খেয়েছে সে ২০০০ রুপির ইলিশ খাবে না। পদ্মার ইলিশের চাহিদা আছে তাই নিলে হয়তো চলবে, কিন্তু যে ক্রেতা দুই কেজি নিত সে হয়তো এক কেজি কিনবে।

উত্তর কলকাতার এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরও অভিযোগ, পদ্মার ইলিশের বাজার খারাপ করেছে গুজরাটের ইলিশ। তিনি বলেন, অনেক ক্রেতা আছে তারা শুধু বাংলাদেশের ইলিশ পছন্দ করে, তাই সব ক্রেতার চাহিদার কথাই মাথায় রেখে কম করে হলেও ইলিশ কিনতে হচ্ছে। তার আশা, পরপর আর কিছুদিন আসা শুরু হলে দাম কিছুটা হয়তো কমবে। 

ইলিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ মাকসুদ আনোয়ার বলেন, বাংলাদেশে ইলিশের ল্যান্ডিং যথেষ্টই কম। তাই ইলিশ আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে গুজরাটের ইলিশ এবার ক্রেতাদের বিকল্প অপশন দিচ্ছে। ফলে যোগান ও চাহিদার উপর নির্ভর করে ইলিশের দাম বাড়তে ও কমতে পারে।

এই ব্যবসায়ীর আশঙ্কা, বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১২০০ মেট্রিক টন আমাদানির অনুমতি দিলেও  ৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই ইলিশ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ। এত অল্প দিনে ৫০০ মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ হয়তো তারা আমদানি করতে পারবেন না।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আমার অর্ধেক বয়সি পুরুষ আমাকে ডেটে নিয়ে যেতে চায়’
  • কলকাতার বাজারে পৌঁছালো বাংলাদেশের ইলিশ, আকাশ ছোঁয়া দাম
  • অটিজম শিশু ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশিক্ষণ, ফি মাত্র ১৫০০ টাকা