সিদ্ধিরগঞ্জে এক কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
Published: 20th, September 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে বিশেষ অভিযান চালিয়ে এক কেজি গাঁজাসহ গুলজার হোসেন (৪৯) নামে এক চিহ্নিত মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে মিজমিজি আব্দুল আলী পুল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত গুলজার হোসেন ঢাকা দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর পূবালী আবাসিক এলাকার মৃত নওয়াব আলীর ছেলে। তিনি বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি চৌধুরীপাড়া এলাকার পাহাড়ীর বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম রেজা জানান, ওয়ারেন্ট তামিল ও বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে, মিজমিজি আব্দুল আলী পুল এলাকায় আব্দুল হোসেনের দোকানের সামনে এক ব্যক্তি মাদক বিক্রির জন্য অবস্থান করছে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করলে গুলজার হোসেনকে আটক করা হয়। পরে তার হাতে থাকা বাজারের ব্যাগ তল্লাশি করে পলিথিনে মোড়ানো এক কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২০ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, গুলজার হোসেন একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি দরে গাঁজা সংগ্রহ করে সিদ্ধিরগঞ্জ ও এর আশপাশের এলাকায় মাদকসেবীদের কাছে খুচরা বিক্রি করে আসছিল।
তিনি আরও জানান, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী নিয়মিত মামলা দায়ের করে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের নীরবতার কারণেই সংখ্যালঘুদের ওপর বারবার আক্রমণ হচ্ছে
বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি মন্দির ও মণ্ডপে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। সরকারের নীরবতার কারণেই সংখ্যালঘুদের ওপর বারবার এমন আক্রমণ হচ্ছে। এ নিয়ে সংখ্যালঘুদের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে হবে।
‘আসন্ন দুর্গাপূজার নিরাপত্তা, অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর, বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাষ্ট্রের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সনাতন পার্টি।
সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায়। তিনি অনুষ্ঠান সঞ্চালনাও করেন। লিখিত বক্তব্যে সুমন কুমার বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর এ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অতীতের যেকোনো সরকারের চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বেশি উপেক্ষিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত ও বৈষম্যের শিকার।
এ সময় আসন্ন দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসহ তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি জানান সুমন কুমার রায়। পাশাপাশি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ অন্যদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তিনি।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দুর্গাপূজার নিরাপত্তার জন্য সরকারের কাছে সাহায্য চাইতে হয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে বলেন, দুর্গাপূজার মাত্র কয়েক দিন বাকি আছে। গত সাত দিনে ছয়টি জেলায় দুর্গাপ্রতিমার ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। সরকারের নীরবতায় এ দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর বারবার আক্রমণ করা হচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুবিষয়ক সম্পাদক মকবুল হোসাইন বলেন, পূজামণ্ডপে কেউ অপরাধ করলে তাঁদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তিনি দেশে শান্তি, সম্প্রীতি, শৃঙ্খলা, মানবতাকে রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন খান বলেন, দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি দাবি নয়, এটি অধিকার। রাসুলের (সা.) বাণী মেনে চললে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার সুযোগ নেই।
গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, চারদিকে যখন প্রতিমা ভাঙা শুরু হয়ে যায়, তখনই বুঝবেন যে দুর্গাপূজা আসছে। আগামী দুর্গাপূজায় আর যেন এমন একটি ঘটনাও না ঘটে। বাংলাদেশে তাঁরা কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে ধর্মীয় উৎসব করতে চান না। সেটা ঈদে মিলাদুন্নবী হোক, বৌদ্ধপূর্ণিমা হোক বা দুর্গাপূজা। জনগণের সমর্থন নিয়ে নিরাপদে সমস্ত পূজা, পার্বণ, উৎসব পালন করতে চান তাঁরা।
পুলিশ, আনসার দেখে ভক্তরা বেশ ভয় পেয়ে যান উল্লেখ করে সুব্রত চৌধুরী বলেন, এখান থেকে বেরোনোর জন্য জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে দুর্গাপূজায় দুই কোটি টাকা অনুদান দিত। অন্তর্বর্তী সরকার গত বছর সেই অনুদান চার কোটি টাকা করেছে। এ বছর পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, ‘অন্যায় হচ্ছে। কারা প্রশাসনে ঢুকে আছে, আপনারা জানেন। এখানে অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু করার নেই। গণতন্ত্রই পারে সব জায়গায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে।’
হাসান শাহ সুরেশ্বরী দীপু নুরি বলেন, আজকের দিনে এসে হিন্দু সম্প্রদায় সংখ্যালঘু। যাঁরা সুফিবাদী, মাজারপন্থী, অলি-আউলিয়াপন্থী, তাঁরা হিন্দু সম্প্রদায়ের থেকেও অধিক সংখ্যালঘু। এই সরকারের আমলে হিন্দু সম্প্রদায় যতটুকু আক্রান্ত হয়েছে, তার চেয়ে তাঁরা (সুফিবাদী, মাজারপন্থী, অলি-আউলিয়াপন্থী) বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। মাজারগুলো উৎসবের মতো করে ভাঙা হচ্ছে। এখন তাঁরাই সাচ্চা মুসলমান, যাঁরা অন্য ধর্মকে নিয়ে বেশি বিষোদ্গার করতে পারেন। হাসান শাহ সুরেশ্বরী দীপু নুরি বলেন, যারা (মাজারপন্থী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, নারী, খেলাধুলা, স্থাপত্য-ভাস্কর্য) সম্ভাব্য ভুক্তভোগী, তাদের একটি যোগসূত্র তৈরি করতে হবে।