ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের দিনে কী বলেছিলেন বাইডেন, যাতে ক্ষুব্ধ হলেন কমলা
Published: 20th, September 2025 GMT
কমলা হ্যারিস তখন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। সেদিন ট্রাম্প ও কমলার নির্বাচনী বিতর্ক ছিল। বিতর্কের মঞ্চে ওঠার কয়েক ঘণ্টা আগে কমলাকে ফোন করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কথায় কথায় তিনি বলেন, তাঁর (বাইডেন) ভাইয়ের প্রভাবশালী সহযোগীরা কমলাকে সমর্থন জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ একটি দিনে বাইডেনের এমন কথায় ‘চটে’ যান কমলা। বাইডেনের এমন কথা তাঁকে ‘হতাশ’ করে।
নিজের নতুন প্রকাশিতব্য বইয়ে বাইডেন সম্পর্কে এমন ‘রাগ ও হতাশার’ কথা লিখেছেন কমলা। বইটির নাম ‘হানড্রেড অ্যান্ড সেভেন ডেজ’ বা ‘১০৭ দিন’। ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারকালের স্মৃতিচারণামূলক বই এটি। এটি আগামী সপ্তাহে (২৩ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হবে। বইটির প্রকাশক বিশ্বখ্যাত মার্কিন প্রকাশনা সংস্থা সাইমন অ্যান্ড শুস্টার। প্রকাশের আগে এ বইয়ের একটি কপি গার্ডিয়ানের হাতে এসেছে।
আরও পড়ুনকমলার বইয়ে ‘পর্দার অন্তরালের গল্প’০১ আগস্ট ২০২৫বইয়ে কমলা লিখেছেন, তখন সেপ্টেম্বর মাস। তিনি ফিলাডেলফিয়ায় একটি হোটেলে উঠেছিলেন। ট্রাম্পের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য কঠিন বিতর্কে অংশ নিতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই সময় শুভকামনা জানাতে ফোন করেন জো বাইডেন। জানতে চান, নির্বাচনের আগে তিনি (কমলা) আবারও ফিলাডেলফিয়ায় ফিরবেন কি না।
প্রেসিডেন্টের এমন প্রশ্নে অবাক হন কমলা। এ প্রসঙ্গে নিজের বইয়ে তিনি লিখেছেন, ‘বাইডেন ফোন করে জানান, তাঁর ভাই ফোন করেছিলেন। তিনি ফিলাডেলফিয়ায় প্রকৃত ক্ষমতাধর একটি দলের সঙ্গে কথা বলার কথা জানিয়েছেন।’ তখন বাইডেন কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে জিজ্ঞেস করেন, তিনি তাঁদের চেনেন কি না? কমলা জবাবে বলেন, ‘না, তিনি চেনেন না।’
কমলা লিখেছেন, তিনি মনে করতেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বিতর্ক ‘একটি বড় মুষ্টিযুদ্ধের মতো’ হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বজুড়ে এর বিশাল প্রভাব পড়বে। তাই তাঁকে তাঁর সেরাটাই দিতে হবে।কমলা লিখেছেন, ‘এরপর বাইডেন আসল কথাটা বলেন। বাইডেন জানান, তাঁর ভাই তাঁকে বলেছেন, এসব লোক তাঁকে (কমলা) সমর্থন করবেন না। কারণ, আমি তাঁর সম্পর্কে খারাপ কথা বলেছি। যদিও এ বিষয়টি বাইডেন বিশ্বাস করেন না বলে আমাকে জানান।’
ক্ষমতাধর ওইসব ব্যক্তির সঙ্গে তাঁকে সরাসরি যোগাযোগ করিয়ে দিতে বাইডেনকে বলেছিলেন কমলা। কিন্তু বাইডেন ফোনে সেটা করেননি। বরং তিনি (বাইডেন) মাস তিনেক আগে ট্রাম্পের সঙ্গে নিজের বিপর্যয়কর বিতর্কের অভিজ্ঞতা নতুন করে বলার চেষ্টা করেছিলেন বলে স্মৃতিচারণায় উল্লেখ করেছেন কমলা।
আরও পড়ুনট্রাম্প কেন কমলা হ্যারিসের সব নিরাপত্তা–সুবিধা সরিয়ে নিলেন৩১ আগস্ট ২০২৫‘জো (বাইডেন) তখন হইচই করে নিজের আগের বিতর্কের অভিজ্ঞতার কথা বলতে থাকেন। বলেন, ‘আমি এর আগেও তাঁর (ট্রাম্পের) বিরুদ্ধে জিতেছিলাম। কিন্তু শেষবার আমি ভালো বোধ করিনি।’
কমলা লিখেছেন, ‘বাইডেন জোর দিয়ে বলতে থাকেন, বিতর্কে পিছিয়ে পড়াটা ভোটারদের কাছে তাঁর খুব বেশি ক্ষতি করেনি। তবে আমি তাঁর এসব কথা খুব একটা শুনছিলাম না।’
কমলা লিখেছেন, তিনি মনে করতেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বিতর্ক ‘একটি বড় মুষ্টিযুদ্ধের মতো’ হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বজুড়ে এর বিশাল প্রভাব পড়বে। তাই তাঁকে তাঁর সেরাটাই দিতে হবে।
কমলা লিখেছেন, ‘আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না, কেন তিনি (বাইডেন) ঠিক তখনই আমাকে ফোন করলেন। ফিলাডেলফিয়ার কিছু ক্ষমতাধর ব্যক্তির অবস্থান সম্পর্কে জানিয়ে আমার মধ্যে অকারণ দুশ্চিন্তা ঢুকিয়ে দিয়ে বিভ্রান্ত করলেন।’
জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিস.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব তর ক র র ব তর ক প রক শ ফ ন কর ন কমল
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় শতাধিক উদ্যোক্তা, গাছী ও গবেষক নিয়ে রাবিতে গুড় সম্মেলন
দেশের ৬৪টি জেলা থেকে প্রায় ছয় শতাধিক গুড় উৎপাদনকারী, গাছী, উদ্যোক্তা এবং গবেষক নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় ‘গুড় সম্মেলন ২০২৫’।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ‘রস ও গুড়’ এবং রাবি উদ্যোক্তা ডেভেলপমেন্ট ক্লাবের আয়োজনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখকের রাবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা
বিশ্ব শিক্ষক দিবস: রাবিতে ৩ অধ্যাপককে সম্মাননা
এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের আপ্যায়নে ছিল চা, তাও খেজুরের বিচি দিয়ে তৈরি। খাবার খাওয়ার পর ডেজার্ট হিসেবে ছিল ঘ্রাণ ছড়ানো নতুন খেজুর গুড়ের পায়েশ। এসময় কয়েকটি স্টলে গুড় উৎপাদন, গুড় গবেষণা, বাজারজাতকরণ ও বিভিন্ন প্রকার গুড়ের প্রদর্শনী করা হয়। খেজুরপাতা দিয়ে তৈরি মসজিদ, জায়নামাজ, তসবীহ ছিল অন্যতম আকর্ষণ।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া গবেষক ও উদ্যোক্তা সৈয়দ মুহাম্মদ মঈনুল আনোয়ার বলেন, “আমরা চাই গুড়ের মত একটা সম্ভবনাময় শিল্পকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে। গুড়কে বিশুদ্ধভাবে সরবরাহ করা এবং বিদেশে গুড় রপ্তানি করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। অন্যদিকে বিদেশ থেকে আমরা চাইনিজ জায়নামাজ, মেসওয়াক, তসবীহসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে থাকি। কিন্তু আমরা চাইলেই খেজুর গাছের বিভিন্ন অংশ দিয়ে দৈনন্দিন বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারি।”
সম্মেলনে অংশ নেওয়া আরেক উদ্যোক্তা বলেন, “এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। সম্মেলনে এসে আমরা জানতে পেরেছি কীভাবে ভালো গুড় উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ভোক্তাদের কাছে বাজারজাতকরণ করা যায়। এই সম্মলনের মাধ্যমে আমরা যতটা সচেতন হব, ঠিক ততটাই উপকৃত হবে ভোক্তারা।”
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন বলেন, “আমরা যে গুড় খেয়ে থাকি সেখানে কোনো ক্যামিকাল থাকে না কিন্তু আমরা যে চিনি খাই সেটা অনেক প্রকার ক্যামিকাল দিয়ে তৈরি। গরম চায়ে আমরা যখন চিনি ব্যবহার করছি, তখন আরো প্রায় ২৭ প্রকার ক্যামিক্যাল উৎপন্ন হচ্ছে, যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অন্যদিকে গুড়ের ব্যবহারে এমন কোনো ক্ষতি নেই। এটা অর্গানিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত। গুড়ের ব্যবহারের প্রচলন আমাদের বাড়াতে হবে।”
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসআরআই-এর মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “হোয়াইট সুগার এবং লবণ এগুলো হচ্ছে হোয়াইট পয়জন। হোয়াইট সুগার বাদ দিয়ে গুড় অথবা ব্রাউন সুগার বেছে নেওয়া উচিত। গুড় শরীরকে ঠান্ডা রাখে। আমরা চা, শরবত অথবা মিষ্টিজাতীয় খাবারে গুড় ব্যবহার করতে পারি।”
উদোক্ত্যাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা বিরাট অংশজুড়ে আছেন। চাকরিপ্রত্যাশীদের চাকরির পেছনে না দৌড়ে উদোক্ত্যা হওয়া উচিত। এতে একাধারে যেমন সে নিজে সাবলম্বী হতে পারবে, পাশাপাশি আরো দশজন বেকার সাবলম্বী হবে।”
ঢাকা/ফাহিম/রাসেল