রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি আপাতত স্থগিত
Published: 25th, September 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ–উপাচার্যসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের ডাকা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরের সামনে এ ঘোষণা দেন ফোরামটির সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলিম।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে আবদুল আলিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মৌখিক প্রতিশ্রুতি এবং রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি দৃশ্যমান না হলে আবার কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনসাত দিনের আলটিমেটাম দিয়ে ‘শাটডাউন’ প্রত্যাহার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের, অনড় শিক্ষকেরা২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি বলেন, শাখা জিয়া পরিষদ ও ইউট্যাবের শিক্ষকদের নিয়ে উপাচার্যের আহ্বানে এক আলোচনা সভা হয়। আলোচনা শেষে উপাচার্য ২০ সেপ্টেম্বরের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। তাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৬ অক্টোবর রাকসু নির্বাচনের আগে আবার নতুন করে কর্মসূচি দেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল আলিম বলেন, ‘রাকসু কার্যক্রম স্বাভাবিক ও গতিশীল রাখার জন্য আমাদের কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। আমাদের দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, এর ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুনরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে চতুর্থ দিনের ‘পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন’, প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের মানববন্ধন২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫এর আগে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। উপাচার্য বলেন, শিক্ষক ফোরামের নেতাদের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ হয়েছে।
পোষ্য কোটার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার আওতায় যে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছিল, সেটি আপাতত স্থগিত আছে। বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখার জন্য সবাইকে বুদ্ধি ও বিবেক অনুযায়ী একটি বোঝাপড়ার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। বোঝাপড়াটা খুব বেশি দরকার। রাকসুর ব্যালট পেপার থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ। এই সময়ের মধ্যে সমস্যাগুলোর সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর ১০ শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। একপর্যায়ে গত শনিবার জুবেরী ভবনে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও কর্মকর্তারা কর্মবিরতিতে যান।
আরও পড়ুনকর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠক, কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স প ট ম বর কর মকর ত উপ চ র য
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার
পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।
গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন:
‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার
বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।
এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।
নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী