সিসিকের সাবেক মেয়রের নেতৃত্বে সিলেটে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি
Published: 12th, October 2025 GMT
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংস্কারসহ উন্নয়নে সিলেটবাসীর ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে নানা কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রবিবার (১২ অক্টোবর) এক ঘণ্টার প্রতীকী ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত নগরের দোকানপাট বন্ধ রেখে চলে এই কর্মসূচি।
নগরের কোর্ট পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয় কেন্দ্রীয় প্রতিবাদ সমাবেশ। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করেন আরিফুল হক চৌধুরী।
সমাবেশে সিলেটের বিভিন্ন সামাজিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগদান করেন।
এর আগে শনিবার (১১ অক্টোবর) দিনভর নগরজুড়ে কর্মসূচি ঘিরে চলে ব্যাপক প্রচারণা হয়। মাইকিং করা হয় এবং বিভিন্ন এলাকায় প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়। সিলেটের বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন আরিফুল হক চৌধুরী।
দুপুরে সমাবেশ আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘সড়কপথ, রেলপথ ও আকাশপথে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম দুরাবস্থা আজ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যানজট, রেলপথে বগি সংকট ও টিকিট কালোবাজারি, আর আকাশপথে বিমানের টিকিটমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি- সব মিলিয়ে সিলেটবাসী অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন।’’
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সিলেটবাসীর যাতায়াতের বিড়ম্বনা চরমে পৌঁছেছে। তাই উন্নয়ন চাই-স্বচ্ছ, টেকসই ও পরিকল্পিত যোগাযোগ ব্যবস্থা চাই।’’
তিনি আরো জানান, ‘‘আজকের এক ঘণ্টার এই কর্মসূচি সিলেটবাসীর ঐক্য ও প্রতিবাদের প্রতীক। যদি সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিকার না আসে, তাহলে আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আরিফুল হক চৌধুরীর বাসভবনে সুশীল সমাজ, শিক্ষক, পরিবহন ও ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে রবিবারের এই প্রতীকী কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে আরো দাবি জানানো হয়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ দ্রুত শেষ করা, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে নতুন ট্রেন ও বগি সংযোজন এবং সিলেট-ঢাকা রুটে বিমানভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে আনার।
ঢাকা/নূর/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা
জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।
দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপটহাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’
এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)
আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।
দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকতএই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।
আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।
দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫