হংকংয়ের একটি বহুতল ভবন কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ২৭৯ জনের। আগুনে দগ্ধ হয়েছেন অনেকে। বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে শহরের তাই পো এলাকায় আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে রাতে হতাহতের খবর জানান শহরের প্রধান নির্বাহী জন লি।

বুধবার রাতেও কমপ্লেক্সের ৩২ তলা ভবনগুলোয় আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছিল। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগুনের তীব্র উত্তাপের কারণে ভবনগুলোর ওপরের দিকে যাওয়া যাচ্ছে না। রাতের অন্ধকার নেমে আসার কারণেও আগুন নেভাতে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। গতকাল রাত পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।

ওয়াং ফুক কোর্ট আবাসিক কমপ্লেক্সে মোট আটটি ভবন রয়েছে। ভবনগুলোয় মোট অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা ২ হাজার। এসব অ্যাপার্টমেন্টে ৪ হাজার ৬০০ জনের বেশি বাসিন্দা বাস করেন। আগুন লাগা ভবনের ভেতরে কতজন আটকা পড়েছেন, তা জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। তবে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে তারা।

আগুনে যখন আবাসিক কমপ্লেক্সটি জ্বলছিল, তখন অনেকেই পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন। তাঁদের অনেককে আহাজারি করতে দেখা যায়। এমনই একজন ৭১ বছর বয়সী ওং। তাঁর স্ত্রী আগুন লাগা ভবনগুলোর একটিতে আটকা পড়েছিলেন। হ্যারি চেউং নামের আরেকজন বলেন, ‘হয়তো আজ রাতে আর বাসায় ফিরতে পারব না। রাতে কোথায় থাকব আমি?’

আগুনের কারণে হংকংয়ে যান চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। শহরের পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, সেখানকার প্রধান দুটি মহাসড়কের একটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। যানবাহনগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হয় অন্য দিকে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার শহরের অন্তত ছয়টি স্কুল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে শহরের শিক্ষা ব্যুরো।

আগুন লাগার পর বুধবার রাতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সরকারি দপ্তরগুলোকে আগুন নিয়ন্ত্রণের সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। হতাহতের ঘটনা যেন কম হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেন তিনি।

এর আগে ১৯৯৬ সালে হংকংয়ের কোউলুন এলাকায় একটি বাণিজ্যিক ভবনে আগুনে ৪১ জন নিহত হন। বুধবারের আগুন লাগার ঘটনার আগে এটিই ছিল শহরটির সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগ ন ল গ র কমপ ল ক স ভবনগ ল শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

আদমজীতে ভূমিকম্পে হেলে পড়েছে ৪ তলা ভবন, চরম আতঙ্ক

সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী নতুন বাজার এলাকায় একটি চারতলা ভবন হেলে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে সারাদেশ, আর তার সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে। 

এই কম্পনে বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ২৫টিরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী নতুন বাজার এলাকায় একটি চারতলা ভবন হেলে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আদমজী নতুন বাজার এলাকায় সায়েমের মালিকানাধীন চারতলা ভবনটি ভূমিকম্পের তীব্র ঝাঁকুনিতে পাশের একটি ভবনের উপর হেলে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এলাকার এক বাসিন্দা জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভূমিকম্প শুরু হলে আমরা দ্রুত ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসি। পরে দেখতে পাই সায়েমের মালিকানাধীন চারতলা ভবনটি পাশের ভবনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।

তবে হেলে যাওয়া ভবনের মালিক সায়েমের বোন সিফা জানান, ভূমিকম্পের কারণে নয়, বরং সিটি করর্পোরেশনের ড্রেন নির্মাণের ফলেই তাদের বাড়িটি আগেই হেলে ছিল।

এদিকে, নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা সুজন নামে এক ব্যক্তি তার উদ্বেগের কথা জানিয়ে বলেন, ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্পেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে কী হবে? এই হেলে পড়া ভবনটির এখন কোনো ব্যবস্থা না করা হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

ভূমিকম্পের ফলে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় স্কুল, আবাসিক ভবনসহ প্রায় ২৫টিরও বেশি ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং কিছু ভবন হেলে পড়েছে।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে এসে জেলা প্রশাসক মো: রায়হান কবির বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় যে সমস্ত ভবনগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা দেখে এখন পর্যন্ত ২৫টি বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। তবে যেই ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা সনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। যেকোনো বড় বিপর্যয় এড়াতে কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের ভবনগুলোর কাঠামোগত স্থিতিশীলতা মূল্যায়ন করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ
  • আদমজীতে ভূমিকম্পে হেলে পড়েছে ৪ তলা ভবন, চরম আতঙ্ক