ঘর পুড়ে ছাই, শাকিলের আশা বেঁচে আছে ট্রাঙ্কে
Published: 26th, November 2025 GMT
রাজধানীর করাইল বস্তির ক ব্লকে স্ত্রী ও ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে সংসার শাকিল হাসানের। বনানীর একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি শেষে বিকেলে ঘরে ফিরে স্ত্রী ও মেয়েকে একটু কাছে পাওয়া—এসবই ছিল তাঁর ছোট্ট শান্তির সংসার।
কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার রাতে আগুনের লেলিহান শিখা শাকিলের সেই শান্তি একমুহূর্তে ছাই করে দিয়েছে। ঘর, ঘরের আসবাব, অল্প কিছু টাকা, কাপড়—সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এসবের মধ্যে রক্ষা পেয়েছে কেবল টিনের একটি ট্রাঙ্ক। এই ট্রাঙ্কের ভেতরে ছিল শাকিলের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ব্যাংকের কাগজপত্র, পড়াশোনার সনদ এবং আগামী দিনের লড়াইয়ের রসদ।
আজ বেলা ১১টার দিকে পুড়ে যাওয়া ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় শাকিল হাসানের সঙ্গে। এ সময় তিনি ওই ট্রাঙ্কের ভেতর থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো বের করছিলেন।
শাকিল বলেন, আগুন লাগার সময় তিনি অফিসে ছিলেন। খবর পেয়ে অফিস থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে পৌঁছে দেখেন, আগুন তাঁর ঘর গ্রাস করার কাছাকাছি।
ঘরে তালা দিয়ে স্ত্রী আর মেয়ে আগেই নিরাপদ দূরত্বে সরে গিয়েছিল জানিয়ে শাকিল বলেন, পরিবার নিরাপদে আছে—বিপদে এটাই সাহস দেয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিন ঘর পর তাঁর মামার ঘরেও আগুন লাগে।
‘স্ত্রী আর মেয়ে নিরাপদে আছে, এই সাহস পেয়ে তালা খুলে ঝুঁকি নিয়ে ঘরে ঢুকি। ঢুকেই এক কোণে ১০ বাই ১৮ ইঞ্চির ট্রাঙ্কটি চোখে পড়ল। জানতাম, এর ভেতর আমার সব গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র আছে। ওয়ার্ডরোবে সামান্য টাকা ছিল, কিন্তু সেটা বের করার সময় ছিল না। আগুন একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছে। মুহূর্তের সিদ্ধান্তে ট্রাঙ্কটি নিয়ে নিচে নেমে পানির হাউসে ফেলে দিই। এরপর উঠে দেখি, আমার ঘরের চালেও দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আর সময় পাইনি, জীবন বাঁচাতে ঘর ছেড়ে বের হতে হয়েছে’, এভাবেই নিজের ঘরে আগুন লাগার বর্ণনা দিয়েছেন শাকিল।
এখানে শাকিলের ঘর ছিল। এখন ট্রাঙ্কটি ছাড়া আর কিছু নেই। আজ বুধবার, রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আবারও ইনজুরিতে নেইমার, ফিরতে পারবেন ২০২৬ সালে
দুর্ভাগ্য যেন পিছু ছাড়ছেই না নেইমারের। আবারও তিনি চোটে পড়েছেন। এবার হাঁটুতে সমস্যা। এ চোট তাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে পাঠাচ্ছে।
এর ফলে চলতি মৌসুমে সান্তোসের হয়ে বাকি তিন ম্যাচেও দেখা যাবে না ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারকে। লিগ টেবিলে ১৭তম স্থানে থাকা সান্তোস রেলিগেশনের শঙ্কায় টিকে থাকার লড়াইয়ে আছে। আর এমন সময়ে নেইমারের অনুপস্থিতি দলটির জন্য বড় দুঃসংবাদ।
আরো পড়ুন:
এস্তেভাওয়ের পেনাল্টিতে বাঁচল ব্রাজিল
কাসেমিরোর গোলে সেনেগালকে হারালো ব্রাজিল
গত এক সপ্তাহ ধরে নেইমার বাম হাঁটুতে অস্বস্তি টের পাচ্ছিলেন। মঙ্গলবারের (২৫ নভেম্বর) পরীক্ষায় ধরা পড়ে মেনিসকাসে সমস্যা। এ নিয়ে চলতি বছরেই চতুর্থবারের মতো শারীরিক সমস্যায় পড়লেন তিনি। এই নতুন ধাক্কা নেইমারের ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নকেই আরো ক্ষীণ করে দিল।
সান্তোসের জন্য সামনে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। খেলা ছিল ইন্টারন্যাসিওনালের বিপক্ষে। কিন্তু মিরাসলের বিপক্ষে আগের ম্যাচে হাঁটুর ব্যথা অনুভব করায় সেই ম্যাচেও মাঠে নামতে পারেননি নেইমার। ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম গ্লোবোএসপোর্তে জানিয়েছে, মেডিক্যাল পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়েছে তার মেনিসকাসে আঘাত রয়েছে।
এর মানে, সান্তোসের বাকি তিন লিগ ম্যাচেও তাকে পাওয়া যাবে না। যে তিন ম্যাচ দলটির লিগে টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে নেইমারের মাঠে ফেরা কার্যত ২০২৬ সালেই গড়াবে।
দুই বছর আগে ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ার পর থেকেই ছন্দ ফিরে পাচ্ছেন না তিনি। এ বছরও একের পর এক চোটে ভুগতে হয়েছে তাতে। সব মিলিয়ে মোটে ২৫ ম্যাচ খেলেছেন। গোল ৭টি। জানুয়ারিতে সান্তোসে ফেরাটা ছিল ২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই। কিন্তু নিয়তি যেন অন্য পরিকল্পনা করেছিল।
এ অবস্থায় ভিলা বেলমিরোতে তার ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মাঠের পারফরম্যান্স ও গোলের সংখ্যা তার বিশাল বেতনকে ন্যায্যতা দিচ্ছে না। আর যদি দলটি রেলিগেট হয় তাহলে নতুন করে চুক্তি করতে পারা প্রায় অসম্ভবই হয়ে যাবে।
নেইমারের জন্য সামনে পথ তাই আরও কঠিন। চোট, অনিশ্চয়তা ও সময়ের বিরুদ্ধে এক লড়াই।
ঢাকা/আমিনুল