বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার অভিযোগ
Published: 26th, November 2025 GMT
বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই অভিযোগ করেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। ট্রাইব্যুনাল আগামী রোববার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
অভিযোগে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে ফজলুর রহমান বলেছেন, তিনি এই ট্রাইব্যুনাল মানেন না। তাঁর যুক্তি, এই ট্রাইব্যুনাল তৈরি হয়েছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য। এই ট্রাইব্যুনালে অন্য কোনো বিচার হতে পারে না।
প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, ক্রাইম এগেইনস্ট পিসের বিচার করতে পারেন। এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে। ফজলুর রহমানের মাথায় শুধু যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি আছে।
টক শোর আরেকটি অংশ তুলে ধরে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘এই কোর্টের গঠনপ্রক্রিয়া বলে—এই কোর্টে বিচার হইতে পারে না। এই কোর্টে যাঁরা বিচার করতেছেন, আমার ধারণা এঁদের মধ্যে ভেতরে একটা কথা আছে।’
টক শোর এই দুটি অংশ তুলে ধরে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, ফজলুর রহমান সুপ্রিম কোর্টের একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে এ ধরনের মন্তব্য করার পরিণতি জানেন। তারপরও ফজলুর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ট্রাইব্যুনালের গঠনপ্রক্রিয়া, বিচার নিয়ে প্রতিনিয়ত বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ট্রাইব্যুনালকে অবমূল্যায়ন করে বক্তব্য দিয়েছেন। এতে প্রতীয়মান হয়, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আদালত অবমাননা করছেন।
আজ এ অভিযোগ উপস্থাপনের সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর সদস্য-২ বিচারক মো.
প্রসিকিউশনকে শোনার পর আদেশে বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী বলেন, এটি খুবই গুরুতর অভিযোগ। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আগামী রোববার আবার শুনানি হবে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন ফজলুর রহমান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফজল র রহম ন অপর ধ উপস থ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
রস ছাড়াই গুড় তৈরি, রাজশাহীতে ৫ কারখানায় জরিমানা
রাজশাহীর বাঘায় খেজুরের রস ছাড়াই চিনি, রং, ফিটকিরি, হাইড্রোজসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান মিশিয়ে ভেজাল গুড় উৎপাদনের প্রমাণ পেয়েছে র্যাব-৫ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় উপজেলার আড়ানি পৌরসভার শাহাপুর এলাকায় যৌথ এ অভিযান শুরু হয়ে বেলা পৌনে ১২টায় শেষ হয়।
অভিযানে পাঁচটি ভেজাল গুড় তৈরির কারখানা শনাক্ত করা হয়। ভোক্তা অধিকারের ভ্রাম্যমাণ আদালত সাল্টু, লাল্টু ও মুক্তার আলীকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন। ইনারুলকে ২০ হাজার টাকা এবং মো. এনারুলকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সব মিলিয়ে পাঁচটি কারখানাকে মোট ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযান শেষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ইব্রাহীম হোসেন বলেন, “কারখানাগুলোতে চিনি, রং, হাইড্রোজসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান মিশিয়ে খেজুরের গুড় তৈরি করা হচ্ছিল। এখানে খেজুর বা আখের রসের ছিটেফোঁটাও পাওয়া যায়নি। এসব ভেজাল গুড় মানুষের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। পাঁচটি কারখানা মালিককে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভেজাল নির্মূলে ভবিষ্যতেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
র্যাব-৫ রাজশাহীর উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “এরা আসলে মাদকের চেয়েও খারাপ কাজ করছে। মানুষের খাবারের মধ্যে এমন বিপজ্জনক জিনিস মিশিয়ে দেওয়া ভয়াবহ অপরাধ। চিনি, রং, ফিটকিরি ও হাইড্রোজ মিশিয়ে তারা গুড় তৈরি করত এবং সেগুলো সারাদেশে পাঠানো হতো। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আলামত জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযানে জরিমানাও করা হয়েছে। আমাদের এ অভিযান চলমান থাকবে।”
ঢাকা/কেয়া/এস