নারীর জন্য নিরাপদ নগরীর দাবিতে ১৬ দিনের প্রচারাভিযানে একশনএইড
Published: 26th, November 2025 GMT
নারী ও কন্যাশিশুদের জন্য নিরাপদ নগরী গড়ে তোলার দাবিতে ১৬ দিনব্যাপী জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ প্রচারাভিযান শুরু করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশ। বিশ্বজুড়ে পালিত এই ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে ‘নিরাপদ নগরী, নির্ভয় নারী’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন শহরে এবং স্থানীয় পর্যায়েও উদ্যোগের কথা জানানো হয়েছে সংস্থাটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
কর্মসূচির শুরুতে শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্টোরিজ অব কারেজ’ শীর্ষক প্রদর্শনী। এতে নারীদের সাহস এবং প্রতিকূলতা মোকাবিলার গল্পগুলো তুলে ধরা হয়। এরপর চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘একোজ অব হার লাইফ’ নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ করা হয়। নাটকটিতে গণপরিবহন, জনপরিসর এবং সেবাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের দৈনন্দিন হয়রানি ও নিরাপত্তাহীনতার বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে নগরীতে অনলাইন ও অফলাইনে নারীরা কেমন নিরাপদ আছেন—সে বিষয়টি তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশের উইমেন রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার ইকুইটি টিমের লিড মরিয়ম নেছা।
নিরাপদ নগরী ক্যাম্পেইনের আওতায় একশনএইড বাংলাদেশের পরিচালিত গবেষণার তথ্য উল্লেখ করেন সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির। তিনি বলেন, ২০২১ ও ২০২২ সালে ৪২ শতাংশ নারী তাঁদের অনলাইন উপস্থিতি কমিয়ে দিয়েছে। ৬৩ শতাংশ নারী ভয় বা আশঙ্কা নিয়ে বাইরে বের হন এবং গণপরিবহনে ২২ শতাংশ নারী হয়রানির শিকার হন। এই তথ্যগুলো প্রমাণ করে যে নারীরা অনলাইন বা অফলাইন কোনো ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়।
‘একোজ অব হার লাইফ’ নাটকে উঠে আসে নারীদের দৈনন্দিন হয়রানি ও নিরাপত্তাহীনতার বাস্তব চিত্র.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র পদ নগর
এছাড়াও পড়ুন:
মেট্রোরেলের কার্ডের অনলাইন রিচার্জ চালু, জানুন কীভাবে করবেন
মেট্রোরেলের স্থায়ী কার্ড রিচার্জ করতে আর স্টেশনে যেতে হবে না। আজ মঙ্গলবার থেকে যেকোনো স্থান থেকে এই কার্ডে টাকা রিচার্জ করা যাবে ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, নগদ, রকেটসহ সব ধরনের অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
আজ দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনে মেট্রোরেলের র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ডে অনলাইন রিচার্জের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক, সেতু ও রেল মন্ত্রণালয়) শেখ মইনউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নিখিল কুমার দাস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ মইনউদ্দিন বলেন, এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের গণপরিবহনে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হবে। অনলাইন রিচার্জ সুবিধার মাধ্যমে র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস ব্যবহারকারীরা যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে নিরাপদে, দ্রুততার সঙ্গে তাঁদের যাতায়াত সুবিধার জন্য কার্ড রিচার্জ করতে পারবেন।
গণপরিবহনে দক্ষতা বৃদ্ধি, সুশাসন নিশ্চিতকরণ ও যাত্রী সেবার মানোন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন নিখিল কুমার দাস। তিনি বলেন, অনলাইন রিচার্জ সেবা চালু হওয়ায় যাত্রীরা আরও দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ ব্যবস্থার সুবিধা পাবেন। ভবিষ্যতে গণপরিবহনের সেবাকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করতে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন।
নীলিমা আখতার বলেন, বহুল কাঙ্ক্ষিত এই সেবার মাধ্যমে যাত্রীদের সময় সাশ্রয় হবে। নগদহীন ও ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার প্রসার ঘটবে। গণপরিবহন ব্যবস্থায় আধুনিকীকরণ আরও সুদৃঢ় হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে যাত্রীরা একটি স্মার্ট ও ঝামেলামুক্ত যাতায়াতের অভিজ্ঞতা পাবেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোল্লা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক শরাফত উল্লাহ খান, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলম, এসএসএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশনের প্রতিটিতে দুটি করে মোট ৩২টি অ্যাড ভ্যালু মেশিন (এভিএম) বসানো হয়েছে। এই মেশিনে র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড স্পর্শ করানোর পর অনলাইন রিচার্জ সম্পন্ন হবে। পরবর্তীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। আগামী মাসে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধার জন্য মেট্রোরেলের অ্যাপ চালু হবে।
যেভাবে রিচার্জ করবেনপ্রথমবার অনলাইন রিচার্জ করার জন্য ওয়েবসাইট/অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে।
অনলাইন রিচার্জের ক্ষেত্রে র্যাপিড পাস কার্ডটি ইতিমধ্যে নিবন্ধন করা না থাকলে নিবন্ধন করতে হবে।
যেকোনো একটি পেমেন্ট মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইনে কার্ড রিচার্জ করতে হবে।
অনলাইনে রিচার্জ করার পর এভিএম কার্ড স্পর্শ করার আগ পর্যন্ত তা (রিচার্জ) অপেক্ষমাণ (পেন্ডিং) দেখাবে।
অনলাইন রিচার্জের পর কার্ডটি এভিএম মেশিনে স্পর্শ করে রিচার্জ করা ব্যালেন্স যুক্ত হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে।
রিচার্জ সফল হলে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বরে একটি এসএমএস দেওয়া হবে।
একটি কার্ডে একবারে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা, সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যাবে।
এ ছাড়া একবারে শুধুমাত্র একটি পেন্ডিং অনলাইন রিচার্জ থাকতে পারবে। আগের রিচার্জ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নতুন অনলাইন রিচার্জ করা যাবে না।
কার্ড যদি ব্ল্যাক লিস্টেড, রিফান্ডেড বা অবৈধ হয়, তাহলে রিচার্জ করা যাবে না। ব্যবহারকারী তাঁর রিচার্জ হিস্ট্রি অ্যাপ্লিকেশন বা ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে দেখতে পারবেন।
ব্যবহারকারী চাইলে কার্ড এভিএম মেশিনে স্পর্শ করার আগে ৭ দিনের মধ্যে রিচার্জ বাতিলের জন্য অনুরোধ করতে পারবেন। রিচার্জ বাতিলের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কাটা হবে।
কার্ড ব্ল্যাক লিস্ট-সংক্রান্ত কারণে পেন্ডিং ট্রানজেকশনের ক্ষেত্রেও গ্রাহক রিফান্ড রিকোয়েস্ট করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রেও ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কাটা হবে।
আরও পড়ুনঘরে বসে মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ চালু হচ্ছে ২৫ নভেম্বর১৯ নভেম্বর ২০২৫