দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় অভিনেতা ও সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ আজ রোববার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জহিরুল ইসলাম।

দুদক ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আজ সকাল ১০টার দিকে গ্রেপ্তার আসাদুজ্জামান নূরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে হাজতখানা থেকে আদালতে তোলা হয়। পরে তাঁর জামিন শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আসাদুজ্জামান নূরের আইনজীবী কাউসার আহমেদ আদালতে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আসাদুজ্জামান নূর একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, অভিনেতা, নাট্যকার ও বিজ্ঞাপন নির্মাতা। তাঁর মেরুদণ্ডের সমস্যা রয়েছে। তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাঁর হার্টে চারটি রিং পরানো। তিনি খুবই অসুস্থ।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুদকের মামলায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা।’

তবে দুদকের পিপি জহিরুল ইসলাম আদালতকে বলেন, আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এ লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আসাদুজ্জামান নূরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শুনানির সময় আসাদুজ্জামান নূর আসামির কাঠগড়ায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে তাঁকে আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। বেলা একটার দিকে হাজতখানা থেকে তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ৩০ জুলাই ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো.

আজিজুল হক বাদী হয়ে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আস দ জ জ ম ন ন র র ল নদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আসাদুজ্জামান নূরের জামিন আবেদন নাকচ

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় অভিনেতা ও সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ আজ রোববার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জহিরুল ইসলাম।

দুদক ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আজ সকাল ১০টার দিকে গ্রেপ্তার আসাদুজ্জামান নূরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে হাজতখানা থেকে আদালতে তোলা হয়। পরে তাঁর জামিন শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আসাদুজ্জামান নূরের আইনজীবী কাউসার আহমেদ আদালতে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আসাদুজ্জামান নূর একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, অভিনেতা, নাট্যকার ও বিজ্ঞাপন নির্মাতা। তাঁর মেরুদণ্ডের সমস্যা রয়েছে। তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাঁর হার্টে চারটি রিং পরানো। তিনি খুবই অসুস্থ।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুদকের মামলায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা।’

তবে দুদকের পিপি জহিরুল ইসলাম আদালতকে বলেন, আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এ লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আসাদুজ্জামান নূরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শুনানির সময় আসাদুজ্জামান নূর আসামির কাঠগড়ায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে তাঁকে আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। বেলা একটার দিকে হাজতখানা থেকে তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ৩০ জুলাই ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ