ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মেঘনা নদী থেকে ছিনতাই হওয়া ৬ হাজার ৩০০ বস্তা ডিএপি সার উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। এ সময় সার বহনকারী বাল্কহেডটি আটক করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। রোববার রাত আটটার দিকে উদ্ধার অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে নৌ পুলিশ।

নৌ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে এমভি হাসান নামের একটি বাল্কহেডে ৬ হাজার ৩৪০ বস্তা ডিএপি সার বোঝাই করে সিলেটের সুনামগঞ্জের বিএডিসি গুদামের উদ্দেশে রওনা হয়। প্রতি বস্তা সারের বাজারমূল্য ১ হাজার ৪৫০ টাকা। বাল্কহেডে ৯১ লাখ ৯৩ হাজার টাকার সার ছিল। বাল্কহেডটিতে সার ডিলারের একজন প্রতিনিধি এবং কয়েকজন শ্রমিক ছিলেন।

নৌ পুলিশ আরও জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় সারবোঝাই বাল্কহেডটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের মানিকনগর ঘাটে নোঙর করে। ইঞ্জিনের ত্রুটি কথা বলে বাল্কহেডটি পরদিন বৃহস্পতিবার একই ঘাটে অবস্থান করে। গত শুক্রবার ভোরে সারবোঝাই বাল্কহেড পুনরায় চলা শুরু করে। মেঘনা নদীতে ঘণ্টাখানেক চলার পর একটি ট্রলার থেকে দুজন দুর্বৃত্ত এসে বাল্কহেডটিতে ওঠে। এরপর দুর্বৃত্তরাসহ বাল্কহেডের লোকজন ডিলারের প্রতিনিধিকে হাত-মুখ বেঁধে ট্রলারে উঠিয়ে দেয়। পরে সার বহনকারী বাল্কহেডটি ছিনিয়ে নিয়ে তারা চলে যায়। ডিলারের প্রতিনিধিকে নিয়ে ট্রলারটি নদীতে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বিকেল চারটার দিকে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আব্দুল্লাহর চর নামক স্থানে পৌঁছে। সেখানে মারধর করে সার ডিলারের প্রতিনিধিকে ট্রলার থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এর পর থেকে বাল্কহেডের সব কর্মচারীর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পরে নৌ পুলিশের একাধিক দল অভিযানে নামে। প্রযুক্তির সহায়তায় তারা নবীনগর উপজেলার কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও বাজারসংলগ্ন তিতাস নদীর শাখা দেওজুড়ী খালে সারবোঝাই বাল্কহেডটি শনাক্ত করে নৌ পুলিশ। সেখানে অভিযান চালিয়ে সারসহ বাল্কহেডটি আটক করা হয়।

নৌ পুলিশ জানতে পারে, দুই থেকে তিনটি ট্রলি গাড়িতে করে কিছু সার নামানো হয়েছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় বাজার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদী তীরবর্তী গ্রামে নবীনগর থানা এবং স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করে আনুমানিক ৮০০ বস্তা সার উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার অভিযানে থাকা নরসিংদীর মির্জাচার নৌ পুলিশের পরিদর্শক মো.

আবদুর রউফ রোববার রাত পৌনে আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এখনো অভিযানে রয়েছি। নবীনগরের কাউতলা থেকে সার ও বাল্কহেড আটক করেছি। তবে অভিযান এখনো শেষ হয়নি।’

এ বিষয়ে নৌ পুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, নৌ পুলিশের তৎপরতায় এবং সারা দিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনায় লুণ্ঠন হওয়া প্রায় কোটি টাকার প্রায় সব সার উদ্ধার করা হয়েছে। সার বহনকারী বাল্কহেড আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় নরসিংদীর রায়পুরা থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র উদ ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

ছিনতাই হওয়া ৬ হাজার বস্তা সার উদ্ধার, বাল্কহেড আটক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মেঘনা নদী থেকে ছিনতাই হওয়া ৬ হাজার ৩০০ বস্তা ডিএপি সার উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। এ সময় সার বহনকারী বাল্কহেডটি আটক করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। রোববার রাত আটটার দিকে উদ্ধার অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে নৌ পুলিশ।

নৌ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে এমভি হাসান নামের একটি বাল্কহেডে ৬ হাজার ৩৪০ বস্তা ডিএপি সার বোঝাই করে সিলেটের সুনামগঞ্জের বিএডিসি গুদামের উদ্দেশে রওনা হয়। প্রতি বস্তা সারের বাজারমূল্য ১ হাজার ৪৫০ টাকা। বাল্কহেডে ৯১ লাখ ৯৩ হাজার টাকার সার ছিল। বাল্কহেডটিতে সার ডিলারের একজন প্রতিনিধি এবং কয়েকজন শ্রমিক ছিলেন।

নৌ পুলিশ আরও জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় সারবোঝাই বাল্কহেডটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের মানিকনগর ঘাটে নোঙর করে। ইঞ্জিনের ত্রুটি কথা বলে বাল্কহেডটি পরদিন বৃহস্পতিবার একই ঘাটে অবস্থান করে। গত শুক্রবার ভোরে সারবোঝাই বাল্কহেড পুনরায় চলা শুরু করে। মেঘনা নদীতে ঘণ্টাখানেক চলার পর একটি ট্রলার থেকে দুজন দুর্বৃত্ত এসে বাল্কহেডটিতে ওঠে। এরপর দুর্বৃত্তরাসহ বাল্কহেডের লোকজন ডিলারের প্রতিনিধিকে হাত-মুখ বেঁধে ট্রলারে উঠিয়ে দেয়। পরে সার বহনকারী বাল্কহেডটি ছিনিয়ে নিয়ে তারা চলে যায়। ডিলারের প্রতিনিধিকে নিয়ে ট্রলারটি নদীতে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বিকেল চারটার দিকে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আব্দুল্লাহর চর নামক স্থানে পৌঁছে। সেখানে মারধর করে সার ডিলারের প্রতিনিধিকে ট্রলার থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এর পর থেকে বাল্কহেডের সব কর্মচারীর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পরে নৌ পুলিশের একাধিক দল অভিযানে নামে। প্রযুক্তির সহায়তায় তারা নবীনগর উপজেলার কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও বাজারসংলগ্ন তিতাস নদীর শাখা দেওজুড়ী খালে সারবোঝাই বাল্কহেডটি শনাক্ত করে নৌ পুলিশ। সেখানে অভিযান চালিয়ে সারসহ বাল্কহেডটি আটক করা হয়।

নৌ পুলিশ জানতে পারে, দুই থেকে তিনটি ট্রলি গাড়িতে করে কিছু সার নামানো হয়েছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় বাজার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদী তীরবর্তী গ্রামে নবীনগর থানা এবং স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করে আনুমানিক ৮০০ বস্তা সার উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার অভিযানে থাকা নরসিংদীর মির্জাচার নৌ পুলিশের পরিদর্শক মো. আবদুর রউফ রোববার রাত পৌনে আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এখনো অভিযানে রয়েছি। নবীনগরের কাউতলা থেকে সার ও বাল্কহেড আটক করেছি। তবে অভিযান এখনো শেষ হয়নি।’

এ বিষয়ে নৌ পুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, নৌ পুলিশের তৎপরতায় এবং সারা দিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনায় লুণ্ঠন হওয়া প্রায় কোটি টাকার প্রায় সব সার উদ্ধার করা হয়েছে। সার বহনকারী বাল্কহেড আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় নরসিংদীর রায়পুরা থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ