ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এখন থেকে ব্যাংকের যেকোনো কার্ড থেকে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ওয়ালেটে টাকা পাঠানো যাবে। এই প্রক্রিয়ায় প্রতি হাজারে খরচ হবে ৮.৫ টাকা। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই লেনদেন প্রক্রিয়া চালু হবে।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ (পিএসডি) থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক

সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কমানো সম্ভব: গভর্নর

আগে শুধুমাত্র এনপিএসবি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আন্তঃব্যাংক লেনদেন করা যেত। এখন সেই সুবিধার পরিধি বাড়িয়ে ব্যাংক টু এমএফএস এবং ব্যাংক টু পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) লেনদেনের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দেশে নগদ অর্থের লেনদেন কমিয়ে ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানোর লক্ষ্যে এনপিএসবি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সব ব্যাংক, এমএফএস প্রোভাইডার, প্রেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের মধ্যে সহজে অর্থ স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে এই সুযোগ চালু করা হয়েছে। আগামী ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে এই ইন্টার-অপারেবল ব্যবস্থায় লাইভ লেনদেন শুরু হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইন্টার-অপারেবল ব্যবস্থায় অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রেরক ব্যাংক, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার এবং এমএফএস প্রোভাইডার তার গ্রাহক (প্রেরক) থেকে এই চার্জ আদায় করা হবে।

এর মধ্যে এমএফএসে লেনদেনের ক্ষেত্রে হাজারে সর্বোচ্চ ৮.

৫০ টাকা ফি বা চার্জবাবদ আদায় করতে পারবে। ব্যাংক টু ব্যাংক লেনদেনে হাজারে ১.৫০ টাকা, এছাড়া ব্যাংক টু পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) লেনদেনে হাজারে ২ টাকা চার্জ প্রযোজ্য। এই চার্জ প্রেরক গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করা হবে, তবে প্রাপক গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো ফি বা চার্জ নেওয়া যাবে না।

ইন্টার-অপারেবল লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংক, এমএফএস বা পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডাররা তাদের নির্ধারিত লেনদেন সীমা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

এনপিএসবি-এর আওতায় ইন্টারনেট ব্যাংকিং ফান্ড ট্রান্সফার ব্যবহার করে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে তহবিল স্থানান্তরের ক্ষেত্রে আগের নির্দেশনা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ঢাকা/নাজমুল/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র কর এনপ এসব ইন ট র ল নদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিকাশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর সেবা চালু হচ্ছে, খরচ হাজারে সাড়ে ৮ টাকা

দেশে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএফএস) একে অপরের মধ্যে পারস্পরিক লেনদেন চালু হচ্ছে। এর ফলে বিকাশ, নগদ ও রকেটের মতো যেকোনো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাব দিয়ে নিজেদের মধ্যে তাৎক্ষণিক লেনদেন করা যাবে। পাশাপাশি যেকোনো ব্যাংকে টাকা পাঠানো যাবে। এর মাধ্যমে কমে আসবে নগদ টাকা লেনদেন। আগামী ১ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় এই সেবাটি চালু হবে। এর মাধ্যমে দেশের আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এই ব্যবস্থায় কত খরচ হবে তা–ও নির্ধারণ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশে নগদ অর্থ লেনদেন কমানোর জন্য এনপিএসবি অবকাঠামো ব্যবহার করে সব ব্যাংক, এমএফএস প্রতিষ্ঠান এবং লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আন্তলেনদেন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে ব্যাংক, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো এই লেনদেন শুরু করবে।

খরচ কত পড়বে

এই ব্যবস্থায় গ্রাহককে সর্বোচ্চ কত টাকা খরচ দিতে হবে, তা–ও নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংক থেকে যেকোনো ব্যাংক, এমএফএস ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারকে এক হাজার টাকা পাঠালে গ্রাহককে ১ টাকা ৫০ পয়সা মাশুল গুনতে হবে। বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা থেকে যেকোনো এমএফএস, ব্যাংক ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারের হিসাবে এক হাজার টাকা পাঠালে খরচ দিতে হবে সাড়ে ৮ টাকা। পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসাব থেকে যেকোনো ব্যাংক বা এমএফএসে টাকা পাঠালে প্রতি হাজারে খরচ দিতে হবে ২ টাকা।

বিনিময় ব্যর্থ

আইসিটি বিভাগের উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (আইডিয়া) প্রকল্পের আওতায় ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম (আইডিটিপি) ‘বিনিময়’ চালু হয় ২০২২ সালের নভেম্বরে। ব্যাংক ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মধ্যে আর্থিক লেনদেনের জন্য প্ল্যাটফর্মটি চালু করা হয়েছিল। বিনিময় চালুর পরও সেবাটি আর চালু হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর গত জানুয়ারি মাসে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, এমএফএসের মধ্যে আন্তলেনদেন পরিচালনার জন্য বিনিময় নামের যে প্ল্যাটফর্ম করা হয়েছিল, সেটি ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের শেল কোম্পানি। এমএফএসে আন্তলেনদেন ব্যবস্থা এগোতে না পারার একটা বড় কারণ, এটি আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেওয়া হয়েছিল।

নথিপত্র অনুযায়ী, সজীব ওয়াজেদ ছাড়াও এ প্ল্যাটফর্ম থেকে সুবিধা নিয়েছেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ছেলে জারেফ হামিদ। বিনিময় প্ল্যাটফর্মটি ওরিয়ন ইনফরমেটিক্স, মাইক্রোসফট, ফিনটেক লিমিটেড ও সেইন ভেঞ্চারস যৌথভাবে তৈরি করে। এর মধ্যে ফিনটেক লিমিটেড নসরুল হামিদের স্ত্রী সীমা হামিদ ও ছেলে জারেফ হামিদের, যা ২০২২ সালে নাম পরিবর্তন করে হয় ভেলওয়্যার লিমিটেড। এর মালিকানায় আছে জারেফ হামিদ ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি প্রাইম হোল্ডিংস এলএলসি। বিনিময় পরিচালনার জন্য ভেলওয়্যারের সঙ্গে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চুক্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিনিময় তৈরির আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একই ধরনের সেবা চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেবাটি চালুর কথা ছিল। তখন এ নিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে শেষ পর্যন্ত সেবাটি আর চালু হয়নি। পরে সরকারি প্রকল্পের আওতায় বিনিময় চালু হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিকাশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর সেবা চালু হচ্ছে, খরচ হাজারে সাড়ে ৮ টাকা
  • আসছে শাখাবিহীন ডিজিটাল ব্যাংক