পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুইটি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ না দেওয়ার বা ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা দিয়েছে। কোম্পানি দুইটি হলো- এপেক্স ট্যানারি লিমিটেড ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্স পিএলসি।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিগুলো পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এপেক্স ট্যানারি: কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৪.

৬২ টাকা। আগের হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৮.৩১ টাকা। কোম্পানিটির ২০২৫ সালের গত ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩০.১৯ টাকায়। কোম্পানিটির ঘোষিত ‘নো ডিভিডেন্ড’ সহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ৩০ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে আগামী ১০ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে।

লংকাবাংলা ফাইন্যান্স: কোম্পানিটির ওই বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ০.৫১ টাকা। আগের হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৭০ টাকা। কোম্পানিটির ২০২৫ সালের গত ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৮.৩২ টাকায়। কোম্পানিটির ঘোষিত ‘নো ডিভিডেন্ড’ সহ অন্যান্য আলোচ্য বিষয়সমূহ শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ১১ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এলক্ষ্যে আগামী ১০ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিগুলোর শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্যসীমা থাকবে না।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে বিনিয়োগ ছাড়া কি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়া সম্ভব

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে নতুন করে আলোচনার প্রয়োজন নেই; বরং প্রয়োজন আলোচনাকে বাস্তব সমাধানের দিকে নেওয়া।

কিছুদিন আগে একটা গোলটেবিল প্রোগ্রামের কি–নোট উপস্থাপন করি এবং আলোচনায় উপস্থিত সবাই মোটামুটি একমত যে, বাংলাদেশ যদি ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে যেতে চায়, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগ ও চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়নের বিলম্ব করার সুযোগ নেই; যদিও কিছু ব্যাপারে মানুষের মনে প্রশ্ন আছে।

এখন এ কথা শুনতে যতটা সহজ, বাস্তবে ততটা নয়। কারণ, বন্দর শুধু একটা অবকাঠামো নয়, বরং এটা দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য, লজিস্টিকস, মুদ্রানীতি, রাজনৈতিক অর্থনীতি ও প্রশাসনিক সংস্কারের কেন্দ্রবিন্দু।

চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের অর্থনীতির প্রধান প্রবেশদ্বার। দেশের ৯২ শতাংশ সমুদ্র–বাণিজ্য ও ৯৮ শতাংশ কনটেইনার কার্গো এখান দিয়ে ওঠানো নামানো হয়।

২০২৫ অর্থবছরে রেকর্ড ৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন টিইইউ হ্যান্ডল করা হয়েছে। কিন্তু এই বৃদ্ধির মধ্যেও বন্দরের কার্যকারিতা এক জায়গায় আটকে আছে।

আরও পড়ুনচট্টগ্রাম বন্দর: আমাদের সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁসটি...২৫ অক্টোবর ২০২৫

সিঙ্গাপুর বন্দর বছরে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন টিইইউ হ্যান্ডল করে, কলম্বো ৭ দশমিক ২ মিলিয়ন টিইইউ। তার তুলনায় চট্টগ্রামের ৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন টিইইউ এখনো আঞ্চলিক মানের অনেক নিচে।

বিশ্বব্যাংকের কনটেইনার পোর্ট পারফরম্যান্স অনুযায়ী চট্টগ্রামের অবস্থান ৩৩৭তম/৪০৫। টার্মিনালের ক্রেন উৎপাদনশীলতা মাত্র ১৮-২১ মুভ/ঘণ্টায়, যেখানে আন্তর্জাতিক মান ৩৫-৪৫।

বিশ্বব্যাংক তার অক্টোবরের প্রতিবেদনেও এ কথা তুলে ধরেছে। এনসিটিতে ব্যবহৃত বেশির ভাগ গ্যান্ট্রি ক্রেন ২০ থেকে ৩০ বছরের পুরোনো।

প্রায়ই ব্রেকডাউন হয়, স্পেয়ার পার্টসের অভাবে সপ্তাহের পর সপ্তাহ অচল থাকে। একটি আধুনিক টার্মিনালে যেখানে ৯৫ শতাংশের বেশি আপটাইম থাকে, সেখানে এনসিটির আপটাইম ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ।

এর মানে হলো, বিদ্যমান অবকাঠামোই আমাদের অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়।

২০২৫ সালের আগস্টে এনসিটি একাই রেকর্ড ১ লাখ ২২ হাজার ৫১৭ টিইইউ হ্যান্ডল করেছে (+ ২৮% আগের একই সময়ে বছরের তুলনায়)।

জুলাই-সেপ্টেম্বরে এনসিটির ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গেছে। কিন্তু সিডিডিএলের মধ্যস্থতা সত্ত্বেও অপেক্ষার সময় এখনো ৭ দিনের ওপর।

আরও পড়ুনচট্টগ্রাম বন্দর: মার্কিন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অসম চুক্তিটির কথা মনে পড়ে২৪ জুন ২০২৫

ফলাফল একটাই—জাহাজকে বহির্নোঙরে ৭ থেকে ১০ দিন অপেক্ষা করতে হয়, প্রতিদিন অতিরিক্ত খরচ ১২ থেকে ২০ হাজার ডলার।

প্রতিবছর এ বিলম্বে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ১ দশমিক ৫ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ বহন করেন।

এ খরচ শেষ পর্যন্ত পণ্যের দামে, রপ্তানির সময়সীমায় এবং দেশের লজিস্টিক খরচে উঠে আসে। সোজা কথায়, বন্দর জ্যাম মানেই জাতীয় অর্থনীতির জ্যাম।

যাঁরা বন্দর পরিচালনা, মেশিনারি রক্ষণাবেক্ষণ, অটোমেশন কিংবা ডিজিটাল টিওএস বোঝেন, তাঁরা জানেন, একটা টার্মিনালের দক্ষতা বাড়ানো মানে শুধু নতুন ক্রেন বসানো নয়।

এটা হলো দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ পরিকল্পনা, প্রশিক্ষিত জনবল, ডিজিটালাইজেশন, গ্লোবাল শিপিং নেটওয়ার্কে প্রবেশ এবং দৃঢ় ম্যানেজমেন্ট শৃঙ্খলা।

সে জন্যই সরকার এনসিটি ও এলসিটিতে জিটুজি ও পিপিপি মডেলে বিদেশি অপারেটর আনার উদ্যোগ নিয়েছে।

আরও পড়ুনচট্টগ্রাম বন্দর: ঘরের চাবি কি পরের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে১২ জুন ২০২৩

লালদিয়া টার্মিনালে এপিএম টার্মিনাল (মারসেক গ্রুপ) এবং নিউমুরিং টার্মিনালে ডিপি ওয়ার্ল্ডের প্রস্তাব আলোচনায় এসেছে।

লালদিয়া টার্মিনালের চুক্তি নিয়ে প্রথম আলোয় একটা বিশ্লেষণ আসার পর দেখা যায়, দেশের এখানে একটাই রিস্ক, সেটা হচ্ছে যদি হরতাল–অবরোধে পোর্ট বন্ধ থাকে, তাহলে দেশকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

রাজনীতিবিদেরা কি এ ব্যাপারে গ্যারান্টি দেবেন? আশার কথা, দেশের এত হরতাল–অবরোধে সাধারণত পোর্ট বন্ধ থাকে না।

দুই প্রকল্পে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসবে, যেখানে সরকারের নিজেদের বাজেট থেকে কোনো খরচ লাগবে না। আমাদের আর্থিক চাপও আসবে না।

ডিপি ওয়ার্ল্ডের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বলছে, তারা সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে, জাহাজের অপেক্ষার সময় ৪০ শতাংশ কমাতে পারে, ডুয়েল টাইম কমিয়ে আনে এবং পুরো টার্মিনালকে তথ্যভিত্তিক করে তোলে।

এ ব্যাপারে ২০২৫ সালের ২৩ জুন প্রথম আলো অনলাইনে  প্রকাশিত আমার লেখা ‘যে কারণে চট্টগ্রামে বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ দরকার’ শীর্ষক কলামে বিস্তারিত বলা আছে।

কর্ণফুলীর ডান তীরে পতেঙ্গায় লালদিয়ার চরের চিত্র। এখানে কনটেইনার টার্মিনাল তৈরির জন্য ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে চুক্তি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সীমানাপ্রাচীরে ঢাকা এই চর ঘাসে ভরা। গতকাল বিকেলে পতেঙ্গার লালদিয়ার চরের বিজয়নগর এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা: আরও ৩ ইউনিটের প্রবেশপত্র প্রকাশ
  • গোল্ডেন সন কোম্পানির লোকসান বেড়েছে
  • ইউনিটহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না ভ্যানগার্ড এএমএল ফান্ড
  • বিএনসিসিতে বিভিন্ন গ্রেডে নিয়োগ, পদসংখ্যা ৩৭
  • সিলকো ফার্মার প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে ৫.৮৮ শতাংশ
  • টেকনো ড্রাগসে ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (০১ ডিসেম্বর ২০২৫)
  • সুপ্রিম কোর্টের জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠা হচ্ছে, অধ্যাদেশ জারি
  • তরুণ নেতৃত্বসহ নানা বিষয় নিয়ে হয়ে গেল অদম্য ইয়ুথ সামিট
  • বন্দরে বিনিয়োগ ছাড়া কি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়া সম্ভব