মুন্সিগঞ্জে অস্ত্র চালানোর ভাইরাল ভিডিওতে থাকা যুবকসহ তিনজন গ্রেপ্তার
Published: 15th, October 2025 GMT
অস্ত্র চালানোর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ভিডিওতে থাকা এক যুবকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে মুন্সিগঞ্জের গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ভিডিওতে থাকা চার যুবকের একজন ‘রাসেল-ফয়সাল বাহিনী’র প্রধান রাসেল হাওলাদার ওরফে ম্যাগনেট রাসেল (৩০) এবং সাখাওয়াত ব্যাপারী (২৮) ও তারেক রহমান (৩০)। রাসেল ও সাখাওয়াত শ্রীনগর উপজেলার মধ্য বাঘড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং তারেক খানের বাড়ি উপজেলার পাটাভোগ গ্রামে।
আজ বুধবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো.
ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, জনশূন্য একটি স্থানে দাঁড়িয়ে আছেন চার যুবক। তাঁদের মধ্যে দুজনের হাতে দুটি পিস্তল। একজনকে পিস্তল দেখিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘দামি কিন্তু এইডা, দুইডা দিয়া শট করমু।’ জবাবে অন্যজন বলেন, ‘দুইডা দিয়া শট করা যাইব না, একটা দিয়া শট করতে হইব। গুল্লি রেয়ার, পাওয়া যায় না।’ একজন বলেন, ‘লকটা খুলে টিপ দিলেই গুলি বের হইব।’ এ সময় পিস্তল হাতে নিয়ে আকাশের দিকে গুলি করার চেষ্টা করেন একজন। কীভাবে গুলি করতে হবে, পাশ থেকে বলছিলেন আরেক যুবক।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ এলাকার ম্যাগনেট রাসেলের ভাড়া ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় গোয়েন্দা দল। সেখান থেকে রাসেলসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) মো. আনিছুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ভিডিও ধারণ ও অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার ও ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশ্রীনগরে চার যুবকের অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণের ভিডিও ভাইরাল২০ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ র নগর
এছাড়াও পড়ুন:
আলীকদম সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে মিয়ানমারের নাগরিক নিহত
বান্দরবানের আলীকদম সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে একজন মিয়ানমারের নাগরিক নিহত ও একজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির লাশ ঘটনাস্থলেই রয়েছে, আর আহত ব্যক্তি বাড়ি ফিরেছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে বিজিবি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
এর এক দিন আগে, রোববার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে একজন বিজিবি সদস্য আহত হন। ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই আলীকদম সীমান্তে নতুন করে হতাহতের ঘটনা ঘটল। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এর আগে এ এলাকায় মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি।
কক্সবাজারের রামু ৩০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কাজী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, নিহত মেনথাং ম্রো (৪০) এবং আহত মাংছার ম্রো (৩০) ৫৫ নম্বর সীমান্ত পিলারের পশ্চিম পাশে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে হটাও মগপাড়া এলাকায় জুম দেখার জন্য যাচ্ছিলেন। পথে মাইন বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মেনথাং ম্রো মারা যান। তিনি মিয়ানমারের নতুনপাড়ার বাসিন্দা। তাঁর লাশ এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছে। আহত মাংছার ম্রোর বাড়ি বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের গর্জনপাড়া এলাকায়। তিনি আহত অবস্থায় ফিরেছেন এবং তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে মেনথাং ম্রোর পরিবার সীমান্তঘেঁষা ইয়ংরিংপাড়ায় সাময়িকভাবে আশ্রয় নিয়েছিল। তিনি মাংছার ম্রোকে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারের নিজের জুমঘর থেকে ধান আনতে গিয়েছিলেন। পথে মাইন বিস্ফোরণে তিনি নিহত হন। তাঁর লাশ উদ্ধারে ইয়ংরিংপাড়ার লোকজন চেষ্টা করছেন। আহত মাংছার ম্রো পেটে আঘাত পেয়েছেন, তবে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।
চেয়ারম্যান ক্রাতপুং আরও বলেন, কুরুকপাতা ইউনিয়নের ইয়ংরিংপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থিত। স্থানীয় লোকজন সীমান্তের উভয় পাশে জুমচাষ করেন এবং মিয়ানমারের ম্রো জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।
আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর্জা জহির উদ্দিন বলেন, মাইন বিস্ফোরণে একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তি মিয়ানমারের এবং আহত ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক বলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। তবে সীমান্ত এলাকা দুর্গম হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছানো কঠিন।
আরও পড়ুননাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বিজিবি সদস্য আহত১২ অক্টোবর ২০২৫