দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে কম পাসের হার এবার কুমিল্লা বোর্ডে। এই বোর্ডে পাসের হার নেমেছে ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যেও সর্বনিম্ন। গত বছর যেখানে পাসের হার ছিল ৭১ দশমিক ১৫, এবার তা কমেছে প্রায় ২৩ শতাংশ। একই সঙ্গে কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছর শিক্ষা বোর্ডটিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৭০৭ পরীক্ষার্থী। গত বছরের এই সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৯২২ জন। শিক্ষা বোর্ডের অধীন ছয়টি জেলার মধ্যে চলতি বছর শতভাগ পাস করেছেন—এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫। আর একজনও পাস করেননি—এমন প্রতিষ্ঠান আছে ৯টি। এই বোর্ডে ছয়টি জেলার মধ্যে নোয়াখালীতে পাসের হার সবচেয়ে কম। আর সব সূচকেই মেয়েরা এগিয়ে আছেন ছেলেদের তুলনায়।

আরও পড়ুনবরিশালে জিপিএ–৫—এ এগিয়ে মেয়েরা, ১২ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেননি১৫ মিনিট আগে

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড মিলনায়তনে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো.

শামছুল ইসলাম। এর আগে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের হাতে ফলাফল তুলে দেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক রুনা নাছরীন।

ফলাফল ঘোষণার সময় পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ৫ বছরের মধ্যে এবার বোর্ডটিতে পাসের হার সর্বনিম্ন। ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৫ দশমিক ৩৯, ২০২২ সালে পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৭২ এবং ২০২১ সালে পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ৪৮।

এদিকে এবারের বোর্ডভিত্তিক ফলাফলের তুলনামূলক চিত্রে দেখা গেছে, ১১টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হারে এগিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১। অন্য বোর্ডগুলোর মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ৬২, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৬২ দশমিক ৬৭, বরিশালে ৬২ দশমিক ৫৭, রাজশাহীতে ৫৯ দশমিক ৪০, দিনাজপুরে ৫৭ দশমিক ৪৯, চট্টগ্রামে ৫২ দশমিক ৫৭, সিলেটে ৫১ দশমিক ৮৬, ময়মনসিংহে ৫১ দশমিক ৫৪, যশোর ৫০ দশমিক ২০ এবং কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী—এই ছয় জেলা নিয়ে কুমিল্লার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড গঠিত। এর অধীন চলতি বছর এসব জেলার ৪৫৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৯ হাজার ৫৭৬ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে মেয়ে পরীক্ষার্থী ৫৭ হাজার ৫২৪ ও ছেলে ৪২ হাজার ৫২ জন। ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪৮ হাজার ৬৫৭ জন। এর মধ্যে মেয়ে পরীক্ষার্থী ৩০ হাজার ৭০১ ও ছেলে ১৭ হাজার ৯৫৬ জন। মোট পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬। পরীক্ষার্থী হারে মেয়েদের পাসের হার ৫৩ দশমিক ৩৭ এবং ছেলেদের পাসের হার ৪২ দশমিক ৭০।

বোর্ডটিতে জিপিএ-৫ পাওয়া ২ হাজার ৭০৭ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৭৪৯ জন মেয়ে এবং বাকি ৯৫৮ জন ছেলে পরীক্ষার্থী।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শামছুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি বছর পরীক্ষার্থীদের ইংরেজি ও উচ্চতর গণিতে পাসের হার কম। এর পেছনে শিক্ষকদের দক্ষতারও কিছু ঘাটতি থাকতে পারে। আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। ফল খারাপ হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর পেছনের কারণ জানার চেষ্টা করা হবে।’

ফলাফল ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. সাদেকুর রহমান, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (উচ্চমাধ্যমিক) সালাউদ্দিন, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) মো. কবির আহমেদ, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (সনদ) কাজী আপনসহ বোর্ডের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র থ ফল ফল

এছাড়াও পড়ুন:

ফল খারাপের কারণ পর্যালোচনা করা হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল খারাপের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে আগামী সপ্তাহে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ডাটাভিত্তিক পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববার। 

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ফল প্রকাশ উপলক্ষে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “এবারের ফল অস্বস্তিকর হলেও বাস্তবভিত্তিক। কেন এমন হলো, তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে আগামী সপ্তাহে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ডাটাভিত্তিক পর্যালোচনা করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ দায় এড়াতে পারে না।” 

তিনি আরো বলেন, “দেশে একটি ভুল সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, যেখানে ফলাফলের সংখ্যাই হয়ে উঠেছিল প্রধান মানদণ্ড। ফল ভালো দেখাতে গিয়ে শেখার সংকট আড়াল করার প্রবণতা আমরা বন্ধ করতে চাই।” 

তিনি জানান, পরীক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, বিশেষ করে সীমান্তরেখায় থাকা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে যেন ন্যায্যতা বজায় থাকে।

এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম। ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭.৭৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল হক জানান, এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেন ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন এবং ফেল করেছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন।

ঢাকা/এএএম/ইভা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভিকারুননিসায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে
  • রাজশাহীতে পাসের হার ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ 
  • এইচএসসিতে শতভাগ পাসের প্রতিষ্ঠান কমেছে হাজারের বেশি
  • এইচএসসিতে সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ
  • সিলেট বোর্ডে ১৯ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার, কমেছে জিপিএ-৫
  • এইচএসসিতে শতভাগ জিপিএ-৫ পেল মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ
  • ২১ বছরে এইচএসসিতে সর্বনিম্ন পাস: শিক্ষায় ‘গলদ’ না অন্য কিছু
  • ফল খারাপের কারণ পর্যালোচনা করা হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা
  • না’গঞ্জ সদরে কৃষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন