নানা অসিলায় নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা চলছে: খন্দকার মোশাররফ হোসেন
Published: 16th, November 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘নানা ধরনের অসিলা সৃষ্টি করে নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা চলছে। নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে নির্বাচনকে বিলম্ব করার চেষ্টা চলছে। আজকে আমি আপনাদের অনুরোধ করতে চাই যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য। আপনারা গত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ভোট দিতে পারেননি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের ভোটটি যেন নিজেই দিতে পারেন, সে জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। দলকে সংগঠিত করতে হবে।’
আজ রোববার বিকেলে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা সদরের শহীদ রিফাত পার্কের সামনে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দাউদকান্দিতে প্রথম প্রাক্-নির্বাচনী গণমিছিলের আগে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা রকম অবান্তর কথাবার্তা হচ্ছে। আপনারা (নেতা-কর্মী) অবান্তর কথা কানে না নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ও ধানের শীষ প্রতীককে জয়যুক্ত করার জন্য প্রস্তুতি নেন। আমরা জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসাথে চেয়েছি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা মেনে নিয়েছে। সে জন্য বর্তমান সরকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এ দেশের মানুষ ১৬ বছর ধরে অপেক্ষা করেছেন। নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে নিজেদের পছন্দের প্রতিনিধিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। কিন্তু এই নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এত দিনের যে প্রত্যাশা, নিজেদের ভোট নিজেদের হাতে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে দিয়ে প্রতিনিধি বানিয়ে পার্লামেন্টে পাঠাবেন। নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা মিলে সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন। সেই সরকার হবে জনগণের সরকার। সংসদ সদস্যরা হবে জনগণের সংসদ সদস্য। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্বাচনের ঘোষণা করার পর কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনপদ্ধতিকে পিআর পদ্ধতি করতে হবে।.
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে আসছে। গত ১৬ বছর আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছি। তার জন্য আমরা আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী সরকারের হাতে নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছি।’
দাউদকান্দি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার মারুফ হোসেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবুল হাশেম, দাউদকান্দি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এম এ লতিফ ভূঁইয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক জসীম উদ্দীন, পৌর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সওগাত চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ব চনক দ উদক ন দ ব এনপ র র জন য সরক র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতি আগে যেমন ছিল, সে রকম হবে না, সেই সুযোগও নেই: সৈয়দা রিজওয়ানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের বিষয়ে নাগরিকেরা মনে করেন, কী আর হবে, আগে যেমন ছিল, তেমনই হবে। এটা মনে করলে আর কিছুই বদলাবে না। আগে যেমন ছিল যাতে সে রকম না হয়, সে জন্য সাড়ে আট শ বাচ্চা প্রাণ দিয়েছে, সাড়ে চার শ বাচ্চা অন্ধত্ব বরণ করেছে। এসব আপনার, আমার বাচ্চা। কাজেই আগে যেমন ছিল, সে রকম হবে না, সেই সুযোগও নেই।’
গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী দেশের রাজনীতির পরিস্থিতি নিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আজ শনিবার এ কথা বলেন। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা মহানগরী ও উপজেলা এলাকার ৪৪টি খাসপুকুর ও জলাশয় সংস্কার, উন্নয়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল আজ। এ উপলক্ষে দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের দড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জাতীয় সম্পদ হিসেবে খাসপুকুর ও জলাশয় রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। সংস্কারকাজের আওতায় সীমানা নির্ধারণ, সীমানা পিলার স্থাপন, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, পুনঃখনন, পাড়বাঁধাই, পানি প্রতিস্থাপন, দূষণমুক্তকরণ, ঘাট নির্মাণ, ওয়াকওয়ে, বেঞ্চ স্থাপন ও বৃক্ষরোপণ করা হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ জরুরি বলে উল্লেখ করেন সৈয়দা রিজওয়ানা। ঢাকার অধিকাংশ জলাশয় দখল, ভরাট ও দূষণের চাপের মুখে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি খতিয়ান অনুযায়ী ঢাকা মহানগরী ও জেলায় মোট ১১৩টি খাসপুকুর আছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৪৪টি জলাশয় চিহ্নিত করে সংস্কারকাজ শুরু করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনকে বাকি জলাশয়গুলোর তালিকা তৈরি করে ধাপে ধাপে পুনর্গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনসাধারণকে পলিথিন ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পলিথিন পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। সরকারি নজরদারি ও জনসচেতনতার কারণে সুপারশপগুলো এখন পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার কমিয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক দায়িত্ববোধ অত্যন্ত জরুরি। সে জন্য সবাইকে পলিথিনের ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
সিলেটে সাদাপাথর লুট প্রসঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘পাথর লুটপাটকারীরা বড় বড় স্লোগান দিয়ে আমাদের দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে রেখেছিল। কিন্তু জনগণের বিক্ষোভ প্রকাশের কারণে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়।’
পরিবেশ রক্ষায় জনগণের আন্দোলনের প্রসঙ্গে সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘গণতন্ত্রের শর্তে রয়েছে আপনার পরিবেশ আপনাকে রক্ষা করতে হবে। উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলা যাবে না। এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়ার মানুষদের আন্দোলন সফল হয়েছে। আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর করা যাবে না, সেটি এলাকার মানুষ সোচ্চার হয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।’
ঢাকার জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া প্রমুখ।