সাত কলেজের ঐতিহ্য রক্ষার দাবি মাহমুদুর রহমান মান্নার
Published: 16th, October 2025 GMT
ঢাকার খ্যাতনামা সাত সরকারি কলেজের ঐতিহ্য রক্ষার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ঢাকা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান মান্না।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এটা কোনো আলোচনাযর ব্যাপার নয় যে সাত কলেজের ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। আমরা বরং বলি ইতিহাস রক্ষা করাই আমাদের কাজ।’
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাত কলেজের ঐহিত্য ও স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। সাত কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যে কলেজগুলোকে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, সেগুলোর চেহারা যদি বদলে দেওয়া হয়, তাহলে ইতিহাস থেকে বিরাট একটি জায়গা মুছে যাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে স্মৃতি, সেটিকে মুছে ফেলার চেষ্টা অন্যায়। আরও কলেজ বানান, আরও বিশ্ববিদ্যালয় বানান। আরও তো দরকার আমাদের কিন্তু একটা জিনিস যা আছে, যার নাম নিয়ে আছেন, সেটাকে মধ্যে দিতে হবে কেন? সেটিকে কেন বাদ দিয়ে দিতে হবে? সেটি রক্ষা করার পরেও তো আমরা সামনের দিকে যেতে পারি।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা ইতিহাসের কান টেনে লম্বা করে দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বোঝাতে চেয়েছেন, একজন মানুষ ইতিহাস তৈরি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে যে ৩০ লাখ লোক জীবন দিয়েছেন, তাঁরা ইতিহাসে নেই, আছেন একজন লোক। এভাবে যদি শিক্ষার ইতিহাসও রচনা করতে চাওয়া হয়, তাহলে সেটির নাম হবে কুশিক্ষা।’
নিজের ঢাকা কলেজে অধ্যয়নের স্মৃতি রোমন্থন করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ঢাকা কলেজ আমার কলেজ।…আমি আমার কলেজকে সেই রকমই দেখতে চাই।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ত কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে গণ-অবস্থান ও মানববন্ধন
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দ্রুত সংস্কার ও যাতায়াতের দুর্ভোগ দূর করার দাবিতে সিলেটে গণ-অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বর এলাকায় জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর আহ্বানে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে বিএনপির নেতা–কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক শুধু একটি রাস্তা নয়, এটি সিলেটবাসীর প্রাণরেখা। কিন্তু সরকারের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতায় এটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে, মানুষ দুর্বিষহ ভোগান্তিতে পড়ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহালের বিষয় উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বছরের পর বছর সংস্কারের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। যানজট, দুর্ঘটনা আর ভাঙা রাস্তায় অতিষ্ঠ সিলেটবাসী। এতে পর্যটন ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। তবু সরকারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সিলেটবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি বলেন, শুধু চট্টগ্রামে তিন ঘণ্টায় যাওয়া নিশ্চিত করলেই হবে না, সিলেটকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। সিলেটকে আর বঞ্চিত করা যাবে না। সিলেটকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। তিন দফা ভয়াবহ বন্যার পরও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসনে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সিলেটবাসীর দুর্ভোগের বিষয়ে অভিযোগ করে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সিলেটে গ্যাস উৎপাদন হলেও এখানকার মানুষ গ্যাসসংকটে ভোগেন। রেলপথে ট্রেন সময়মতো আসে না, বিমানের ভাড়াও বেশি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কারিগরি, সড়ক-রেলযোগাযোগ কিংবা বিমানবন্দর—সব ক্ষেত্রেই সিলেটকে বৈষম্যের মধ্যে রাখা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা মহাসড়ক সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করা, অতীত প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্ত ও জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করা, দুর্ঘটনায় নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও বিকল্প ট্রাফিক ব্যবস্থার দাবি জানান। কর্মসূচি শেষে ২০ অক্টোবর জেলা বিএনপি জেলা প্রশাসকের কাছে এবং উপজেলা বিএনপি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপি দেবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তাজরুল ইসলাম তাজুল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি নজমুল হোসেন পুতুল, যুগ্ম সম্পাদক হাসান পাটোয়ারী রিপন, উপদেষ্টা ফালাকুজ্জামান চৌধুরী জগলু, উপদেষ্টা বদরুল ইসলাম জয়দু, দক্ষিণ সুরমা থানা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক, গোয়াইনঘাট উপজেলার এম সাইফুর রহমান টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান সুয়েব, সিলেট বিভাগ শিক্ষক–কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিজাম উদ্দিন তরফদার প্রমুখ।
তিন সংগঠনের কর্মসূচি ঘোষণা
সিলেট-ঢাকা রেলপথকে ডাবল করা, নতুন ট্রেন চালু ও রেলের মানোন্নয়নের দাবিতে আগামী বুধবার রেললাইনে শোয়া কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে তিনটি সংগঠন—সিলেট কল্যাণ সংস্থা, সিলেট বিভাগ যুব কল্যাণ সংস্থা ও সিলেট প্রবাসীকল্যাণ সংস্থা। সংগঠনগুলোর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার বেলা তিনটায় দক্ষিণ সুরমা রেলগেটে নাগরিক সমাবেশ এবং ৩টা ৪০ মিনিটে ১০ মিনিটের জন্য রেললাইনে শোয়া কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
তাঁদের দাবির মধ্যে রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে বিরতিহীন নতুন ট্রেন চালু, ডাবল লাইন নির্মাণ, ট্রেনের মানোন্নয়ন, সিলেট-ছাতক রুটে ট্রেন চালু, অতিরিক্ত বগি সংযোজন ও ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন যুক্ত করা।