রাজশাহী বোর্ডে মানবিকে ছেলেদের ভরাডুবি, জিপিএ-৫ পাওয়ায় মেয়েরা এগিয়ে
Published: 16th, October 2025 GMT
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় গতবারের চেয়ে পাসের হার কমেছে ২১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। সবচেয়ে ভরাডুবি হয়েছে মানবিক বিভাগের ছেলেদের। এবার বোর্ডে পাসের হার যেখানে ৫৯ দশমিক ৪০, সেখানে মানবিক বিভাগে ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ ছেলে পাস করেছেন।
পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুই ক্ষেত্রেই এগিয়ে আছেন মেয়েরা। বোর্ডে এবার ৬৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ মেয়ে পাস করেছেন। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থী, এর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ৫ হাজার ৬৮২ জন।
শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলছেন, বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীরা গত বছর বেশি বইবিমুখ ছিল। যে কারণে শুধু রাজশাহীতে নয়, সারা দেশের ফলাফলে এর প্রভাব পড়েছে। পাস ও জিপিএ-৫ পাওয়ার হার কমে গেছে।
২১ বছরে এইচএসসিতে সর্বনিম্ন পাস: শিক্ষায় ‘গলদ’ না অন্য কিছুরাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৪৩ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন ৭৭ হাজার ৭৪২ জন। গতবার পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৯৩ জন। পাস করেছিলেন ১ লাখ ১১ হাজার ৪৪৮ জন শিক্ষার্থী। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থী। গতবার এই সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ৯০২ জন। এক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও এবার বেড়েছে। এবার এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন ৩২ হাজার ৬৩৮ জন, যা গত বছরের চেয়ে ১ হাজার ৩০৭ জন বেশি। এবার ১৭টি কলেজ থেকে কেউ পাস করেনি। গত বছর এমন কলেজের সংখ্যা ছিল ১।
মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর হক বলেন, মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের আইসিটি বিষয়টি বোঝা কঠিন। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে তত কঠিন নয়। সাধারণভাবে ইংরেজিতে দুর্বলতা তো আছেই। এই দুটি কারণেই মানবিক বিভাগের ফলাফল খারাপ হতে পারে। একই কারণে ব্যবসায় শাখার পাসের হারও কম।
এইচএসসিতে গত বছরের চেয়ে পাসের হার কমেছে ১৯ শতাংশছেলেদের চেয়ে মেয়েদের পাসের হার ও জিপিএ-৫ বেশি পাওয়ার কারণ হিসেবে রাজশাহী নিউ গভ.
রাজশাহী সরকারি মডেল কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইফতেখার মাহমুদ জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তাঁর কলেজের ৯৩ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী পাস করেছেন। তাঁর ধারণা, গ্রামের কলেজের শিক্ষার্থীদের কম পাসের হার বোর্ডে ছেলেদের পাসের হারের ওপর প্রভাব ফেলেছে। তাই গড় পাসের হার কমে গেছে।
গ্রামের কলেজে খোঁজ নিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। পুঠিয়া উপজেলার পঁচামাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের পাসের হার এবার ২৫ দশমিক ১৫। অধ্যক্ষ বিষ্ণুপদ সাহা বলেন, তাঁর জীবদ্দশায় এমন ফলাফল দেখেননি।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হারে এগিয়ে ঢাকা, পিছিয়ে কুমিল্লাচারঘাটের ডাকরা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুর রউফ বলেন, গ্রামের শিক্ষার্থীরা যাঁরা এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন, তাঁদের প্রায় সবাই শহরের কলেজে চলে যান। দরিদ্র ও জিপিএ-৫ না পাওয়া শিক্ষার্থীরাই বেশি গ্রামের কলেজে ভর্তি থাকেন। এই শিক্ষার্থীদের নিয়ে এইচএসসিতে ভালো ফল করা চ্যালেঞ্জিং। তারপরও তাঁদের কলেজ থেকে ৫৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। তার মধ্যে বিজ্ঞান থেকে একজন ও মানবিক বিভাগ থেকে একজন জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা বাইরে সময় কাটান বেশি। মেয়েরা তাঁদের চেয়ে বেশি সময় পড়ার টেবিলে থাকেন। যে কারণে মেয়েরা পরীক্ষায় ভালো করেছেন। আর ফলাফল বিপর্যয়ের যে ঘটনা, সেটা সারা দেশেই হয়েছে। বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীরা গত বছর বেশি বইবিমুখ ছিলেন। যে কারণে শুধু রাজশাহীতে নয়, সারা দেশের ফলাফলে এর প্রভাব পড়েছে। পাস ও জিপিএ-৫ পাওয়ার হার কমে গেছে।
সর্বোচ্চ পাসের হার কোন বোর্ডে, দেখুন ফলাফলউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম নব ক ব ভ গ র প স কর ছ ন র হ র কম জন শ ক ষ র ফল ফল গত বছর র কল জ কল জ র পর ক ষ দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসিতে শতভাগ জিপিএ-৫ পেল মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল এস.এম ফয়সাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
‘এবার এইচএসসির ফলে বাস্তব চিত্র সামনে এসেছে’
দিনাজপুরের ৪৩ কলেজের সবাই ফেল
চলতি বছর এই ক্যাডেট কলেজ থেকে ৪৬ জন শিক্ষার্থী এচইএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদরে মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ছিলেন ৪২ জন এবং চারজন ছিলেন মানবিক বিভাগে।
কলেজ সূত্র জানায়, এই কলেজ ৪৬ জন ক্যাডেট এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে তাদের প্রত্যেকেই জিপিএ-৫ পেয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের ২২ জন পেয়েছেন গোল্ডেন এ প্লাস।
মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল এস. এম ফয়সাল বলেন, “১৯৬৩ সালে এই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই অসাধারণ অর্জনের পেছনে রয়েছে একাগ্র অধ্যাবসায় ও নিষ্ঠা, কলেজ কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক তদারকি। এই কৃতিত্ব ভবিষ্যতেও ক্যাডেট কলেজের গৌরব ও ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবে এমনটি আশা রাখছি।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ