নাচোলে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে দুজন নিহতের ঘটনায় হত্যাসহ ৩ মামলা
Published: 16th, October 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে হামলায় দুই ভাই নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিহত মিলন আলীর ছেলে সাদেক আলী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এ ছাড়া হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হত্যা মামলায় ৮১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। হত্যা মামলা ছাড়া হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আরও দুটি মামলা করা হয়েছে। সব কটি মামলা করেন বিএনপি নেতা আবদুস সালাম (তুহিন) ও আবু তাহের (খোকন) পক্ষের কর্মীরা।
ওসি মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, পুলিশ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে। তবে এজাহারভুক্ত কোনো আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। স্থানীয় গ্রামবাসী এজাহারভুক্ত এক আসামির জামাতাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। হামলাকারীরা আমিনুল ইসলামের অনুসারী হলেও মামলায় আমিনুল ইসলামকে আসামি করা হয়নি।
গত মঙ্গলবার নাচোল উপজেলার মারকইল এলাকায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলামের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম ও আবু তাহেরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধের জেরে ওই ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৪ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে গতকাল সন্ধ্যায় মিলন আলী ও রাতে আলম আলী নামের দুই ভাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মারকইল সাহাপুকুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নিহত মিলন ও আলম আলীর লাশের জন্য অপেক্ষা করছেন স্বজনেরা। একই হামলায় আহত–নিহত ব্যক্তিদের দুই ভাই মো.
নিহতের স্বজনেরা জানান, হামলাকারীরা নিহত দুই ভাইয়ের বাড়ির জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে চার ভাই ও দুই ভাতিজাকে গুরুতর আহত করেন। মিলন আলীর ছেলে রাব্বানী এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুনচাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে হামলায় আহত ১৪, বাড়িঘর ভাঙচুর১৪ অক্টোবর ২০২৫বাড়ির বাইরে চারদিক খোলা একটি ছোট চালের নিচে দড়ির খাটে শুইয়ে রাখা হয়েছে হাসপাতাল থেকে আসা আমিরুল ইসলামকে। তাঁর এক পা ভাঙা। পায়ের পাতা থেকে উরু পর্যন্ত প্লাস্টার করা হয়েছে। তাঁকে ঘিরে কাঁদছিলেন তারা বানু নামে ছোট বোন ও তাঁদের এক ফুপু।
অপ্রকৃতিস্থের মতো করে আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুই ভাইকে আল্লাহর কাছে জমা দিয়্যা আইনু। চার ভাই, দুই ভাতিজা গেছনু দুই গাড়িতে কইর্যা। ফিইর্যা আইনু এক গাড়িতে। এক ভাতিজাও আল্লাহর কাছে বুঝিন চইল্যা যাইবে। ভালো হয়্যাছে, ভালো হয়্যাছে! এ্যার চাহ্যা আর কী ভালো হইবে। সব আল্লাহর ইচ্ছা।’
পুলিশ সুপার রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, রোববার আমিনুল ইসলামের অনুসারী তরিকুল আলমকে সালাম গ্রুপের লোকজন মারধর করেন। এর জেরে মঙ্গলবার আমিনুলের লোকজন ওই হামলা চালান।
আরও পড়ুননাচোলে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল দুই ভাইয়ের২২ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম ন ল ইসল ম র ল ইসল ম র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি ২ পক্ষের সংঘর্ষ: মিলনের পর ভাই আলমের মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত আরো এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাত ৯টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম আলম। ৫৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মারকইল-ছোনকাই এলাকার মৃত নওসাদ আলীর ছেলে। এর আগে, একই দিন সন্ধ্যায় আলমের বড় ভাই মিলন (৬০) মারা যান।
আরো পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু, আহত ৩০
প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপ ঘোষণা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১২
আরো পড়ুন: বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত রবিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলামের সমর্থক তরিকুলকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম তুহিন ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবু তাহের খোকনের লোকজনের বিরুদ্ধে। এরই জেরে গত মঙ্গলবার বিএনপির ওই দুই পক্ষের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় মিলন-আলমসহ ১৫ জন আহত হন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসক মিলন-আলমকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বুধবার সকালে ও সন্ধ্যায় দুই ভাই মারা যান।
নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, “গত মঙ্গলবার ফতেপুর ইউনিয়নের মারকইল এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আপন দুই ভাই মিলন-আলমসহ ১৫ জন আহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে বুধবার দুইজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়।”
তিনি বলেন, “হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সাড়ে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ভাই মারা গেছেন। এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।”
ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ