রাকসু: ‘এক ঘষাতেই’ মুছে গেছে অমোচনীয় কালির দাগ
Published: 16th, October 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ(রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট-এ ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে ভোটারদের হাতে অমোচনীয় কালির দাগ দেওয়া হয়।
তবে সেটি ঘষা দিতেই মুছে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিবির-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
রাকসু নির্বাচনে নানা অসঙ্গতির অভিযোগ বাম সমর্থিত প্যানেলের
রাকসু নির্বাচন: ভোট গণনা শুরু, দেখানো হচ্ছে এলইডি স্ক্রিনে
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোরব) অন্তত ১০টি কেন্দ্রে ঘুরে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের নারী বিষয়ক সম্পাদক সাইয়েদা হাফসা ভোট প্রদান করতে কেন্দ্র যান। কেন্দ্র থেকে বের হয়ে সাংবাদিকের ক্যামেরার সামনে হাতে দেওয়া অমোচনীয় কালির দাগে ঘষা দেন তিনি। ঘষা দিতেই তার হাতের দাগ অস্পষ্ট হয়ে যায়। শুধু তার নয়, এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে ডিনস কমপ্লেক্স কেন্দ্র, শহিদুল্লাহ কেন্দ্র, চতুর্থ বিজ্ঞান ভবন কেন্দ্রসহ সকল কেন্দ্রে।
এ বিষয়ে অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা বলেন, আমরা ভোট দিয়েছি। কিন্ত কেন্দ্র থেকে বের হয়েই দেখি হাতের কলির দাগ উঠে যাচ্ছে। জালিয়াতি এড়াতে বিষয়টির দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কাফী নিজের আঙুলের কালি মুছে যাওয়ার চিত্র দেখিয়ে অভিযোগ করে বলেন, “আমি হাবিবুর রহমান হলের ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়েছি। দেখেন কালি মুছে গেছে। পানিও দিতে হয়নি।”
জিয়াউর রহমান হলের ভোটার আকিব বলেন, “ভোটের সামগ্রিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর, তবে কালি নিয়ে উদ্বেগ আছে। ভোট ঠিকভাবে চলছে, কিন্তু ব্যবহৃত কালি অমোচনীয় হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কালি সহজে মুছে যাচ্ছে। যার ফলে ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ তৈরি হতে পারে। আমি আশা করি নির্বাচন কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।”
রহমতুন্নেসা হলের ফাইন্যান্স বিভাগের (২০১৯–২০ সেশন) শিক্ষার্থী আশফিয়া তাবাসসুমও একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “আমি শুধু ভোট দিতে ক্যাম্পাসে এসেছি। ভোট প্রক্রিয়া সুন্দরভাবে হয়েছে। কিন্তু বের হওয়ার পর দেখি আঙুলের কালি সহজেই মুছে যাচ্ছে। এমনটা হওয়ার কথা নয়।”
সিনেট প্রতিনিধি প্রার্থী মীর কাদির বলেন, “আমার অনেক ভোটারই একই অভিযোগ করেছেন। নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে মারাত্মক গাফিলতি করেছে। আমি আশা করি নির্বাচন কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান রিটর্নিং কর্মকর্র্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান বলেন, “আমরা দেশের বাজারের সর্বোচ্চ দামের কালির কলম কিনেছি। এরপরেও যদি উঠে যায় তবুও সমস্যা হবে না। আমরা ভোট কেন্দ্রে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা দেখে পরিচয় নিশ্চিত করে ভোট নিচ্ছি। নারী শিক্ষার্থীদের যারা নেকাব ব্যবহার করেন তাদের জন্যও আলাদা করে চেকিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হবে না।”
তবে কালি মুছে যাওয়ার অভিযোগ মানতে নারাজ রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.
তিনি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বলেছেন, “অমোচনীয় কালি অবশ্যই উচ্চমানের। কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘষাঘষি করে, তাহলে তো উঠবেই। রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের কমিটমেন্টে শতভাগ সন্তুষ্ট। আমরা বেশ কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। কোথাও কোনো সমস্যা কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”
এর আগে, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। রাত ৮টার দিকে ভোট গণনা শুরু হয়েছে। ফলে ভোট শেষ হওয়ার পরবর্তী ১৭ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতি রক্ষা হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
রাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন, যার মধ্যে ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ নারী এবং ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ। মোট ৮৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় রাকসুর ২৩ পদে ৩০৫ জন, সিনেটের ৫ পদে ৫৮ জন এবং ১৭টি হল সংসদের ২৫৫ পদে ৫৫৫ জন প্রার্থী লড়াই করেছেন।
ভোটগ্রহণ হয় ৯টি একাডেমিক ভবনে স্থাপিত ১৭টি কেন্দ্রে। ভোট পরিচালনায় ছিলেন ২১২ জন শিক্ষক। এর মধ্যে ১৭ জন প্রিসাইডিং অফিসার এবং বাকি সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ৯১ জন পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে ২ হাজার পুলিশ সদস্য, ৬ প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র্যাব।
ঢাকা/কেয়া/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আগারকারের ওপর শামি কেন ক্ষুব্ধ
ভারতের জার্সিতে মোহাম্মদ শামির অধ্যায় কি শেষ? ৩৫ বছর বয়সী এই পেসার অনেক দিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে। অস্ট্রেলিয়া সফরের স্কোয়াডেও তাঁকে রাখেননি ভারতীয় নির্বাচকেরা।
ঠিক কী কারণে শামিকে দলে নেওয়া হচ্ছে না, এর জুতসই ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার। শামি চোটে ভুগছেন কি না, এ নিয়েও ‘কোনো আপডেট নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন আগারকার। এরপর আগারকারকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন শামি।
চোট শামিকে লম্বা সময় ভুগিয়েছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের পর এক বছরের বেশি সময় ভারতের হয়ে খেলতে পারেননি। বিশ্বকাপের পর অ্যাঙ্কেলের অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন। ভুগেছেন হাঁটুর সমস্যাতেও।
শামি দলে ফিরেছিলেন এ বছরের জানুয়ারিতে, ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজে। এরপর ভারতের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলেও ছিলেন। সেখানে ৫ ম্যাচে নেন ৯ উইকেট, যা যৌথভাবে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর পর থেকে শামিকে আর বিবেচনা করছেন না নির্বাচকেরা।
তাহলে কি শামি আবারও চোটে ভুগছেন? না, সেটাও না। শামি এরপর আইপিএল খেলেছেন। আগস্টে দুলীপ ট্রফিতে চার দিনের ম্যাচে খেলেছেন। এখন খেলছেন রঞ্জি ট্রফিতেও।
দলে সুযোগ পাচ্ছেন না ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি