বাংলাদেশের ভোক্তারা দুধ-ডিম ও সবজি খাওয়ায় এখনো আদর্শ মানের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছেন। যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ গ্রাম সবজি খাওয়া হচ্ছে আদর্শ পরিমাণ, সেখানে এ দেশের একজন মানুষ খাচ্ছেন ২০২ গ্রাম। একইভাবে ৩০ গ্রাম ডিমের বিপরীতে তাঁরা গ্রহণ করছেন ১৩ গ্রাম। দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যে আরও পিছিয়ে। দৈনিক দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য প্রয়োজন ১৩০ গ্রাম, এর বিপরীতে এখানকার ভোক্তারা খাচ্ছেন মাত্র ৩৪ গ্রাম।

বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্যসচিব মো.

মাসুদুল হাসান। কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সেমিনারটির আয়োজন করে। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এইচ এম সাইফুল ইসলাম। এতে তিনি বিভিন্ন খাদ্যে আদর্শ মানের বিপরীতে বাংলাদেশের ভোক্তারা ২০১৬ ও ২০২২ সালে যে পরিমাণ ভোগ করেছেন, সে হিসাব তুলে ধরেন। এতে দেখা যায়, ফল ভোগে দেশের বেশ উন্নতি হয়েছে। ২০১৬ সালে দেশে মাথাপিছু ফল খাওয়ার পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৬ গ্রাম। ২০২২ সাল তা বেড়ে ৯৫ গ্রামে উন্নীত হয়েছে। যদিও আদর্শ মান ১০০ গ্রাম।

চাল গ্রহণ আগে আদর্শ মানের চেয়ে বেশি থাকলেও এখন তা কিছুটা কমেছে। ২০১৬ সালে দৈনিক চাল গ্রহণের হার ছিল ৩৬৭ গ্রাম, আর আদর্শ মান হলো ৩৫০ গ্রাম। তবে ২০২২ সালে চাল গ্রহণ কিছুটা কমে ৩২৯ গ্রাম হয়েছে। মাছ খাওয়াটাও আদর্শ মানের চেয়ে বেশি। দৈনিক ৬০ গ্রাম মাছ গ্রহণের কথা থাকলেও বাংলাদেশের ভোক্তারা গড়ে খাচ্ছেন ৬৮ গ্রাম। ২০১৬ সালে এই হার ৬৩ গ্রাম ছিল। একইভাবে তেল খাওয়ার পরিমাণও আদর্শ মানের চেয়ে বেশি আছে। দৈনিক ৩০ গ্রাম তেল খাওয়াটা আদর্শ মান হলেও এখানকার ভোক্তারা খাচ্ছেন ৩১ গ্রাম। ২০১৬ সালে যা ছিল ২৭ গ্রাম।

ইলিশ মাছ উৎপাদনে পোনা ছাড়তে হয় না, খাবার দিতে হয় না; তাতেও দাম এত বেশি কেন—সেটি জানতে চেয়ে কোনো ‘ভালো উত্তর’ এখনো পাইনি। দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই আমার মনে প্রশ্ন ছিল, ইলিশের এত দাম কেন? ইলিশের দাম বাড়ার বিষয়ে বলা হয়, মাছ ধরতে খরচ বেশি। আবার মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে দাম বেড়ে যায়। ঢাকা এলে দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, দেশে কৃষি উৎপাদনে সাফল্যের পেছনে প্রধান ভূমিকা কৃষক ও কৃষিবিদদের। যদিও উৎপাদনকারীদের সঙ্গে বাজারের সংযোগ খুবই সামান্য। তাই কৃষকদের অবস্থা এখন হাসন রাজার ‘পরের জায়গা পরের জমি’ গানের মতো।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, ‘ইলিশ মাছ উৎপাদনে পোনা ছাড়তে হয় না, খাবার দিতে হয় না; তাতেও দাম এত বেশি কেন—সেটি জানতে চেয়ে কোনো ‘‘ভালো উত্তর’’ এখনো পাইনি। দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই আমার মনে প্রশ্ন ছিল, ইলিশের এত দাম কেন? ইলিশের দাম বাড়ার বিষয়ে বলা হয়, মাছ ধরতে খরচ বেশি। আবার মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে দাম বেড়ে যায়। ঢাকা এলে দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। এসব নিয়ে আরও কাজ করার আছে।’

মাছ উৎপাদন নিয়ে আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, এখন ধানের জমিতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে কোনো মাছ হয় না। এগুলোর ব্যবহার কমানো নিয়ে গবেষণা করা দরকার। প্রাণিখাদ্যের দাম বাড়ার কারণে মাছ, দুধ ও ডিমের দাম বেড়ে যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রথম আলোর সংবাদ উদ্ধৃত করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, এখন বিড়ালের জন্যও বছরে ৪০০ কোটি টাকার বিদেশি খাদ্য আমদানি করতে হয়। কিন্তু আমাদের সময়ে বিড়ালের জন্য বাজার থেকে খাবার আনতে হতো না। এসব খাবার দেশেই তৈরি করতে হবে।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী খন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রায় ৭৬ শতাংশ জমি মোটামুটি অনুর্বর ধরনের, যার পরিমাণ বাড়ছে। বছরে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় আবার গড়ে ৮২ কেজি। তাই দুর্যোগপ্রবণ এই দেশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সব সময় প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কোনো একক প্রতিষ্ঠান বা কারও একার পক্ষে এটা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ জন্য শিক্ষক, গবেষক, সরকার, কৃষক সবাইকে মিলে কাজ করতে হবে।’

সেমিনারে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দিয়া সানো। তিনি বলেন, বিশ্বে মোট চাহিদার চেয়ে দেড় গুণ বেশি খাদ্য উৎপাদিত হয়। কিন্তু অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার কারণে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়। এর আগে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার করিম। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইফাদের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ভ্যালানটাইন আচাঞ্চো। অনুষ্ঠান শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। সভায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, গবেষক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত হ র ম হ ম মদ জ ব র আদর শ ম ন র চ য় ২০১৬ স ল পর ম ণ উৎপ দ গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

আহ্‌ছানিয়া মিশন মেডিকেল কলেজে নিয়োগ

আহ্‌ছানিয়া মিশন মেডিকেল কলেজে উপাধ্যাক্ষসহ ১০ ক্যাটাগরির পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তিতে পদসংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। আবেদনের শেষ সময় ১০ ডিসেম্বর ২০২৫।

পদের নাম ও বিবরণ
১. অধ্যক্ষ
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: বিএমঅ্যান্ডডিসি ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. উপাধ্যক্ষ
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: বিএমঅ্যান্ডডিসি ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৩. অধ্যাপক
বিভাগ: অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, মেডিসিন, গাইনি অ্যান্ড অবস, ইএনটি, অ্যানেসথেসিওলজি, নিউরোসার্জারি, প্লাস্টিক সার্জারি, পেডিয়াট্রিক, পেডিয়াট্রিক সার্জারি।
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: বিএমঅ্যান্ডডিসি ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও প্রকাশনা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) থাকতে হবে।

আরও পড়ুন৫০তম বিসিএসে প্রিলির নম্বরে এল পরিবর্তন, কমেছে ৩ বিষয়ে, বৃদ্ধি ৩টির৮ ঘণ্টা আগে

৪. সহযোগী অধ্যাপক
বিভাগ: অ্যানাটমি, ফার্মাকোলজি, ফরেনসিক মেডিসিন, মেডিসিন, পেডিয়াট্রিক, ইএনটি, ডারমাটোলজি, অর্থোপেডিকস, রেডিওলজি, সাইকিয়াট্রিকস, ইউরোলজি, নিউরোসার্জারি, প্লাস্টিক সার্জারি, পেডিয়াট্রিক সার্জারি।
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: বিএমঅ্যান্ডডিসি ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও প্রকাশনা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) থাকতে হবে।
৫. সহকারী অধ্যাপক
বিভাগ: অ্যানাটমি, কমিউনিটি মেডিসিন, প্যাথলজি, ইএনটি, ইউরোলজি, চক্ষু, সাইকিয়াট্রিকস, রেডিওলজি, অ্যানেসথেসিওলজি, রাড ট্রান্সফিউশন মেডিসিন, নিউরোসার্জারি, প্লাস্টিক সার্জারি, পেডিয়াট্রিক সার্জারি।
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: বিএমঅ্যান্ডডিসি ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও প্রকাশনা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) থাকতে হবে।
৬. আরপি/আরএস
বিভাগ: মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি অ্যান্ড অবস
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: বিএমঅ্যান্ডডিসি ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও প্রকাশনা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) থাকতে হবে।
৭. রেজিস্ট্রার
বিভাগ: চক্ষু, ইএনটি, অর্থোপেডিকস
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: বিএমঅ্যান্ডডিসি ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও প্রকাশনা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) থাকতে হবে।

আইটি স্কলারশিপ, ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ বিনা মূল্যে, কোর্স শেষে চাকরির সুযোগ

৮. সহকারী রেজিস্ট্রার
বিভাগ: মেডিসিন, সার্জারি, চক্ষু, ইএনটি, গাইনি অ্যান্ড অবস।
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: বিএমঅ্যান্ডডিসি ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও প্রকাশনা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) থাকতে হবে।
৯. লেকচারার (সব বিভাগ)
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: বিএমঅ্যান্ডভিসি ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ আইন ২০২২ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
১০. ল্যাবরেটরি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট
বিভাগ: ফিজিওলজি, প্যাথলজি।
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে বিএসসি ইন মেডিকেল ল্যাবরেটরি বা ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজি পাস থাকতে হবে।

বেতন–ভাতা
আলোচনা সাপেক্ষে

আরও পড়ুনজুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে বিশাল নিয়োগ, পদ ১১৫২২৩ নভেম্বর ২০২৫আবেদনের নিয়ম

উপরিউক্ত পদগুলোর বিপরীতে আগ্রহী প্রার্থীদের সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, জীবনবৃত্তান্ত, সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, অভিজ্ঞতার সনদ, জাতীয়তার সনদসহ ডাকযোগে বা সরাসরি অথবা ই-মেইলে আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।

আবেদনের ঠিকানা

অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত), আহ্‌ছানিয়া মিশন মেডিকেল কলেজ, প্লট: ৩, বেড়িবাঁধ–সংলগ্ন, সেক্টর: ১০, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০

আবেদনের শেষ তারিখ

১০ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আহ্‌ছানিয়া মিশন মেডিকেল কলেজে নিয়োগ
  • চট্টগ্রামে নভেম্বরে ডেঙ্গু সংক্রমণের রেকর্ড, ভোগাবে এ মাসেও
  • বাংলাদেশ একটি ‘দুষ্টচক্রের ত্রিভুজে’ আটকে ছিল: হোসেন জিল্লুর রহমান
  • বাবার ডিপিএসের টাকায় ফ্রিল্যান্সিং শুরু শফিকুলের, এখন চালাচ্ছেন স্থানীয় স্পোর্টিং ক্লাব