ঢাকার কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের নাগরিক অধিকারের বিষয়ে সরকার কোনো তোয়াক্কা করছে না বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের চালিকা শক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কড়াইল বস্তির মানুষ। অথচ এই সরকার বা রাষ্ট্র তাঁদের জন্য ন্যূনতম কোনো দায়দায়িত্ব নিচ্ছে না। নাগরিক হিসেবে তাঁদের যে অধিকার ও মর্যাদা, তার কোনো তোয়াক্কা সরকার করছে না।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর কড়াইল বস্তির রাহাত আলী শাহ (রহ.

) খানকা প্রাঙ্গণের পাশে গণসংহতি আন্দোলনের স্থাপিত রিলিফ ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। দলটি ২৭ নভেম্বর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কড়াইল বস্তিবাসীর জন্য ত্রাণ হিসেবে চাল-ডাল-তেল-আলু, কম্বল-মশারি বিতরণ করছে।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের বিষয়ে সরকার দ্রুত উদ্যোগ নেয়নি অভিযোগ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, এটি একটি দুর্যোগ। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার উচিত ছিল দ্রুত এখানকার ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলা এবং খোলা আকাশের নিচে থাকা মানুষগুলোর জন্য অবিলম্বে তাঁবু খাটিয়ে থাকার ব্যবস্থা করা। তাঁদের প্রয়োজনীয় খাদ্য, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ করা সরকারের দায়িত্ব।

গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘আমরা সরকারকে ট্যাক্স দিই এই কারণেই যে জনগণ যখন বিপদে পড়বে, তখন সরকার এগিয়ে আসবে। কিন্তু আমরা সরকারের সেই উদ্যোগ বা নাগরিকের মর্যাদা রক্ষার কোনো ব্যবস্থা এখনো দেখতে পাচ্ছি না।’

অবিলম্বে সরকারকে কড়াইল বস্তির ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করে প্রত্যেকের খাবার, থাকার জায়গা, শীতবস্ত্র, চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন,আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানসহ দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। যত দিন না কড়াইল বস্তির বাসিন্দারা কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন এবং নিজেদের বাসস্থান গুছিয়ে নিতে পারেন, তত দিন পর্যন্ত তাঁদের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, আগুন লাগার কারণ হিসেবে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ বা শর্টসার্কিটের কথা বলা হয়। এ জন্য ইউটিলিটি সার্ভিস বা সেবামূলক ব্যবস্থাগুলো নিরাপদ হওয়া খুব জরুরি। অবিলম্বে এখানে নিরাপদ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে কড়াইল বস্তির ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পাশাপাশি গণসংহতি আন্দোলনের কড়াইল রিলিফ ক্যাম্পের সংগঠক শাহীদা আক্তার, মোহাম্মদ মোতালেব, আবুল কালাম, আবদুর রহিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, কড়াইল বস্তিতে ২৫ নভেম্বর বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুন লাগার পর ১৬ ঘণ্টার চেষ্টায় পরের দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এসব খাবার আপনাকে সারা দিন চনমনে রাখবে

কাজের চাপে ক্লান্ত লাগলে বা দুপুরের পর অফিসে ঘুম পেলে অনেকেই কফি বা মিষ্টি কিছু খেয়ে ক্লান্তি কাটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো আপনাকে সারা দিন চনমনে রাখতে পারে, আবার কিছু খাবার আছে যেগুলো উল্টো আপনাকে দুর্বল করে দেয়!

সকালের নাশতা বাদ দেওয়া আমাদের অন্যতম বড় ভুল। এতে ক্লান্তি ও মানসিক চাপ তুলনামূলক বেশি হয়। তাই সকাল শুরু হোক এমন খাবার দিয়ে, যা ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করবে; যেমন ওটস, চিড়া, ডিম ও পূর্ণ শস্যের টোস্ট, দুধ বা দইয়ের সঙ্গে ফল ও বাদাম—এই খাবারগুলো শরীরে শর্করা, প্রোটিন ও ফাইবার সরবরাহ করে, যা আপনাকে দীর্ঘ সময় সতেজ রাখবে।

সারা দিন শক্তি ধরে রাখার কৌশল

বাদাম, বীজ আর শস্যজাতীয় খাবার শক্তির অন্যতম বড় উৎস। এগুলোতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন ও ভিটামিন—যা রক্তে চিনির মাত্রা স্থির রাখে এবং হঠাৎ এনার্জি ড্রপ থেকে বাঁচায়। একমুঠো কাজু, আখরোট বা সূর্যমুখীর বীজের মতো স্ন্যাক হতে পারে আপনার দুপুরের ‘এনার্জি ব্রেক’।

প্রোটিন: ঠিকভাবে দেহের প্রতিটি কোষের কাজ চালাতে প্রোটিন অপরিহার্য। মাছ, মুরগি, ডিম, ডাল ও ছোলা হলো এমন কিছু প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, যা দ্রুত ক্লান্তি দূর করে। বিশেষ করে মাছ (যেমন ইলিশ, রুই, টুনা) শুধু প্রোটিন নয়, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও দেয়, যা মস্তিষ্ককেও সক্রিয় রাখে।

জটিল শর্করা: সাদা চাল বা পরিশোধিত ময়দা শরীরে দ্রুত শক্তি দেয়, কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি ফুরিয়েও যায়। এর পরিবর্তে বেছে নিন লাল চাল, ব্রাউন রাইস, গমের রুটি বা ওটস—এগুলো ‘কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট’, যা ধীরে হজম হয় এবং সারা দিন স্থিতিশীল এনার্জি দেয়।

শাকসবজি ও ফল: নিয়মিত রঙিন শাকসবজি ও ফল খান। আপেল, কলা, কমলা, পালংশাক, ব্রকলি, গাজর—এগুলোর ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরকে চাঙা রাখে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।

আরও পড়ুনকৈশোরে সঠিক পুষ্টি না পেলে যা হয়, যেসব খাবার খেতে হবে১৬ নভেম্বর ২০২৫যেগুলো এড়িয়ে চলা ভালো

অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টিজাত খাবার দ্রুত শক্তির জোগান দিলেও খুব দ্রুতই ক্লান্ত করে ফেলে।

অতিরিক্ত ক্যাফেইন সাময়িকভাবে মনোযোগ বাড়ায়, কিন্তু ঘুমের ছন্দ নষ্ট করে দেয়।

অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত বা ভারী খাবার। এগুলো হজমে সময় নেয়, ফলে ঘুম ঘুম লাগে।

ছোট ছোট টিপস

পানিশূন্যতা ক্লান্তি ডেকে আনে, নিয়মিত পানি পান করুন।

দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকবেন না।

পর্যাপ্ত ঘুম ও হালকা ব্যায়াম প্রাকৃতিকভাবে আপনার শক্তি বাড়াবে।

শক্তি ধরে রাখার কোনো ‘জাদুকরি খাবার’ নেই, তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাসই পারে আপনাকে সারা দিন প্রাণবন্ত রাখতে। তাই পরেরবার শক্তি কমে গেলে চিনি বা সফট ড্রিংকের দিকে না ছুটে, বেছে নিন প্রকৃতির দেওয়া সঠিক খাবারগুলো।

আরও পড়ুনএকবারে কতটা বাদাম খাওয়া নিরাপদ২১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্তিযুদ্ধের সরল গল্পের বাইরের গল্প
  • এবার পদ্মা ও মেঘনা কোম্পানিতে ডিজেল ‘গায়েব’, দেড় লাখ লিটার গেল কোথায়
  • পোশাক, ইস্পাত, সারসহ শিল্প খাতে উৎপাদন ৩০–৫০% কমেছে: ঢাকা চেম্বার সভাপতি
  • এসব খাবার আপনাকে সারা দিন চনমনে রাখবে