১৭ অক্টোবর দিনটি 'ইন্টারন্যাশনাল ফরগিভ অ্যান এক্স ডে' বা ‘প্রাক্তনকে ক্ষমা করার দিন’। দিনটি পালনের উদ্দেশ্যই হলো সব ভুলে প্রাক্তনকে ক্ষমা করে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ২০১৮ সাল থেকে এই দিনটির যাত্রা শুরু হয়েছে।
প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী দিনটি পালিত হয়, যদিও এর কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এই দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন মন্তব্য ও পোস্ট শেয়ার করে থাকেন।
আরো পড়ুন:
ত্বক সতেজ রাখতে এই ফল খেতে পারেন
আজ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস
আজকের দিনটি আপনার পুরনো সম্পর্ককে মনে করিয়ে দিতে পারে। আবার একইসঙ্গে সেখান থেকে বের হওয়ার একটি উপায় খুঁজতেও সহায়তা করতে পারে। কারণ দিনটি মানুষকে শেখায়—অতীতকে ছেড়ে দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়াই সবচেয়ে ভালো পথ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিনটি নিয়ে নানা ধরনের পোস্ট, গল্প ও আবেগঘন বার্তা ভেসে বেড়াচ্ছে। আপনিও কোনো পোস্ট দিতে পারেন অথবা মনে মনে বলতে পারেন, ‘তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।’
প্রাক্তনকের ক্ষমা করলে আপনি যেভাবে উপকৃত হতে পারেন
মানসিকভাবে সুখী হয়ে উঠতে পারেন
অভিমান আর রাগ যত বেশি পুষে রাখবেন, ততই তা মানসিকভাবে আপনাকে ভারাক্রান্ত করবে। কিন্তু ক্ষমা করার মাধ্যমে আপনি নিজের ভেতরে তৈরি হওয়া সেই অপ্রয়োজনীয় বোঝা নামিয়ে ফেলতে পারবেন। মনে হবে যেন বুকের ভেতর জমে থাকা সব ক্লান্তি হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।
বর্তমান সম্পর্ককে আরও সুন্দর করে তুলতে পারেন
অতীতের কষ্টকে আঁকড়ে থাকলে কখনোই সামনে এগোনো যায় না। ক্ষমা মানেই অতীতকে বিদায় জানানো, যাতে আপনি নতুন করে জীবন গড়তে পারেন। নিজের ভবিষ্যতের জন্য অতীতকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ পাবেন
প্রত্যেক সম্পর্ক কিছু না কিছু শেখায়। আপনার প্রাক্তনের সঙ্গে সম্পর্ক যেমনই হোক না কেন, সেটি আপনাকে এক জীবনের শিক্ষা দিয়েছে। তাকে ক্ষমা করলে আপনি সেই অভিজ্ঞতাগুলো থেকে শিক্ষা নিতে পারবেন এবং ভবিষ্যতের সিদ্ধান্তগুলো আরও সংবেদনশীলভাবে নিতে পারবেন।
ক্ষমা করার মাধ্যমে আপনি নতুনভাবে জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। এই উপলব্ধি আপনাকে করবে আরও আত্মবিশ্বাসী, আরও আত্মনির্ভরশীল।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন প র ক তনক
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলে সহকারী শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে প্রাথমিকের পরীক্ষার হলে দায়িত্বে অভিভাবকেরা
পরীক্ষার হলে নেই চেনা শিক্ষকেরা, প্রশ্নপত্র হাতে নিয়ে কক্ষ পরিদর্শকের ভূমিকায় দাঁড়িয়েছেন অভিভাবকেরা। কোথাও বাবা দায়িত্বে, কোথাও মা হাঁটাহাঁটি করছেন বেঞ্চের ফাঁকে। তিন দফা দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির মধ্যে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আজ সোমবার এই দৃশ্য দেখা গেছে।
অভিভাবকেরা জানান, প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরু হলে উপজেলাজুড়ে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এমন অবস্থায় বাধ্য হয়ে প্রধান শিক্ষকেরা অভিভাবকদের ডাকছেন। আর সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে তাঁরা এই দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন‘স্কুলে আসার পর স্যাররা বলল আজ পরীক্ষা হবে না’৪৮ মিনিট আগেশিক্ষকদের সূত্রে জানা যায়, বেতন গ্রেড উন্নীতকরণসহ তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। কর্মসূচিতে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তাঁরা। আজ সখীপুর উপজেলার ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নতুন সিদ্ধান্ত না আসায় আন্দোলনকারী সহকারী শিক্ষকেরা বার্ষিক পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন না। তাই বাধ্য হয়ে প্রধান শিক্ষকেরা অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সখীপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষকেরা অফিস কক্ষে বসে আছেন। পরীক্ষার হলগুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন অভিভাবকেরা। তবে দু-একটি কক্ষে অভিভাবক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ ছিলেন না। পরে প্রধান শিক্ষক আগ্রহী অভিভাবকদের খুঁজে এনে কক্ষের দায়িত্ব দিচ্ছিলেন।
শিক্ষকদের পরিবর্তে অভিভাবক দিয়ে পরীক্ষা চালানো মোটেই ঠিক হচ্ছে না। কারণ, তাঁরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ নন।ফারজানা আক্তার, অভিভাবকউপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে পরীক্ষা চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শাহীনা আখতার। তিনি বলেন, ‘সহকারী শিক্ষকেরা আমাকে কোনো সহযোগিতা করছেন না। এমনকি অভিভাবকদেরও পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালনে বাধা দিচ্ছেন।’ তবে অভিযোগটি অস্বীকার করে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আফরোজা আক্তার বলেন, ‘আমরা পরীক্ষার চালাতে কোনো বাধা দিচ্ছি না, তবে সহযোগিতাও করছি না। প্রধান শিক্ষকই আমাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করছেন না।’
এদিকে পরীক্ষা গ্রহণে এমন বিশৃঙ্খল পরিবেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন অভিভাবক। তাঁরা বিদ্যালয়টির মূল ফটকের সামনে হইচই করে প্রতিবাদও জানিয়েছেন। ফারজানা আক্তার নামের এক অভিভাবক বলেন, শিক্ষকদের পরিবর্তে অভিভাবক দিয়ে পরীক্ষা চালানো মোটেই ঠিক হচ্ছে না। কারণ, তাঁরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ নন।
আরও পড়ুন‘শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা, বাজে নজির হয়ে থাকবে’৩ ঘণ্টা আগেআরেকজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন, এটা ভালো কথা। কিন্তু খুদে শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল।
এ ছাড়া পরীক্ষার হলে অভিভাবকদের দায়িত্ব পালনের সময় নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের কেউ কেউ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, ‘যেসব অভিভাবক পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁরা নিজেদের ও পরিচিত শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়েছেন।
পরীক্ষা গ্রহণে কোনো ধরনের স্বজনপ্রীতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সখীপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত এক অভিভাবক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই ব্যক্তি বলেন, ‘আমার বাচ্চা যে কক্ষে বসে পরীক্ষা দিচ্ছিল, সে কক্ষে দায়িত্ব পালন করিনি। আমি চেষ্টা করেছি, সহকারী শিক্ষকদের মতোই দায়িত্ব পালন করতে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনুরোধেই মূলত এটি করেছি।’
আমার বাচ্চা যে কক্ষে বসে পরীক্ষা দিচ্ছিল, সে কক্ষে দায়িত্ব পালন করিনি। আমি চেষ্টা করেছি, সহকারী শিক্ষকদের মতোই দায়িত্ব পালন করতে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনুরোধেই মূলত এটি করেছি।পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত এক অভিভাবকআরও পড়ুন‘স্কুলে এসে দেখছি পরীক্ষা স্থগিত’৫ ঘণ্টা আগেউপজেলার দু–একটি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের চাপ প্রয়োগ করে পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্ব পালনে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কালিদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন কমিটির সক্রিয় কর্মী মুক্তি মালেক। তিনি বলেন, তবে অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা বার্ষিক পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে বিরত ছিলেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক অধিদপ্তর থেকে বার্ষিক পরীক্ষা চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। তবে কিছু বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন বলে শুনেছি ও দেখেছি। তবে আমি মনে করি, সহকারী শিক্ষকদের অন্তত পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করা উচিত।’