জুলাই সনদে স্বাক্ষর, কারখানায় আগুন ও পাসপোর্টের সূচকে অবনতি
Published: 18th, October 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঐতিহাসিক জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে উল্লেখ করে দলমত, ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে সবাইকে এর অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানালেও সব দল শুক্রবারের আয়োজনে অংশ নেয়নি। তা ছাড়া এদিন জুলাই যোদ্ধা পরিচয় দেওয়া এক দল লোকের বিশৃঙ্খলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, যা অপ্রত্যাশিত ছিল।
সরকার শুরু থেকে যে তিনটি দলকে বাড়তি মর্যাদা দিয়ে আসছিল, তাদের অন্যতম জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনুপস্থিতি ছিল পীড়াদায়ক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টিই (এনসিপি) জুলাই ঘোষণাপত্রের মতো জুলাই সনদের দাবি জানিয়েছিল সবার আগে। অথচ তারাই আইনি ভিত্তি ছাড়া জুলাই সনদে সই করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরবর্তী সময়েও এ সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ রয়েছে। আশা করব এনসিপি সে সুযোগ গ্রহণ করে দেরিতে হলেও নিজেদের রাজনৈতিক পরিপক্বতার পরিচয় দেবে।
প্রশ্ন হলো, যে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো বিনির্মাণ করার কথা, সেই নির্বাচন সময়মতো এবং সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে কি না? সনদে সই করতে অস্বীকার করা এক বা একাধিক দল যদি নির্বাচন থেকেও দূরে থাকে, তখন সংকট আরও ঘনীভূত হবে।
তবে সনদে স্বাক্ষর করার পর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমরা যে ঐক্যের সুর বাজালাম, সেই সুর নিয়েই নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাব। সনদে যঁারা স্বাক্ষর করলেন, প্রয়োজন হলে তাঁরা আবারও বসেন। কীভাবে নির্বাচন সুন্দর করা যায়, তা ঠিক করেন।’ তবে সরকারের কাছে প্রশ্ন, ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্বাচনের মাত্র আর কয়েক মাস বাকি, কিন্তু নির্বাচনের সে প্রস্তুতি কোথায়?
২.জুলাই সনদ সইয়ের আগে কয়েকটি খবর ও ঘটনা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। রাজধানীর মিরপুরে পোশাক কারখানায় আগুন লেগে আবারও শ্রমিক পুড়ে মরার ঘটনা ঘটেছে। গণ–অভ্যুত্থানের পর একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া ও শ্রমিক বেকার হয়ে যাওয়ার মধ্যে এমন ঘটনা ঘটল। শ্রম খাত নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই গেল। আমাদের কারখানাগুলো কবে নিরাপদ হবে? অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের জন্য দায়ী কারখানামালিক ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কবে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে দেখব আমরা?
সনদে স্বাক্ষরের আগের দিন এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেল। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেশের ৯টি সাধারণ ও কারিগরি এবং মাদ্রাসা বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩। ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮। সেই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ পয়েন্ট।
গড় পাসের হার ধরলেও ৪১ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন। অথচ এইচএসসিতে যাঁরা পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে এসএসসি পাস করেই কলেজে ভর্তি হতে হয়েছে। এইচএসসিতে কেবল পাসের হারই কমেনি, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী সব আনুষ্ঠানিকতার পর পরীক্ষার হলে অনুপস্থিতও থেকেছেন।
পরীক্ষায় পাসের নিম্ন হার নিয়ে আমাদের শিক্ষার অভিভাবকদের মোটেও চিন্তিত বলে মনে হয় না। তাঁরা ঢালাও মন্তব্য করেছেন—আগে উত্তরপত্র উদারভাবে দেখা হতো, এখন সহানুভূতিহীনভাবে দেখায় এই ফল বিপর্যয় ঘটেছে; কিন্তু তাঁরা গত এক বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে (বিশেষ করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়) যে নৈরাজ্যকর অবস্থা চলে আসছে, তা স্বীকার করতে চান না। গত এক বছরে এসব কলেজে কত দিন ক্লাস হয়েছে, সেই হিসাব নিলে পরীক্ষায় পাসের হার কমার কারণটি বেরিয়ে আসবে। ১০–১২ বছর পাঠের পর একজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া কেবল শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের ক্ষতি নয়, বড় ধরনের রাষ্ট্রীয় অপচয়ও।
এইচএসসি পরীক্ষার বিপর্যয়কর ফল যখন ঘোষণা করা হলো, তখন এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা আন্দোলনে। তাঁদের ন্যূনতম ন্যায্য দাবিও সরকার পূরণ করে না আর্থিক অসচ্ছলতার দোহাই দিয়ে; কিন্তু উপদেষ্টা–আমলাদের বিদেশ ভ্রমণসহ অনেক অনুৎপাদনশীল খাতে সরকারের ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সদ্য প্রয়াত শিক্ষাবিদ ও লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষাসংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষকের বেতন কেন এক লাখ টাকা হবে না?’ আমরা যদি শিক্ষার উন্নয়ন চাই, তাহলে মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। আর ভালো বেতন ছাড়া তাঁরা শিক্ষকতা পেশায় আসবেন না। এই সত্য সবার আগে বুঝতে হবে।
৩.আরেকটি খবরও কম উদ্বেগের নয়। বাংলাদেশের পাসপোর্টের বৈশ্বিক মান নিয়ে প্রশ্ন অনেক বছর ধরেই ছিল। আমাদের আশা ছিল,গণ-অভ্যুত্থানের পর গণসম্মতি নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে পাসপোর্টের মান বাড়বে; কিন্তু বাংলাদেশি পাসপোর্টের মানের আরও অবনয়ন হয়েছে।
প্রতিবছর বিশ্বের ১৯৯টি দেশের পাসপোর্ট ও ২২৭টি ভ্রমণ গন্তব্য নিয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচক প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত ২০২৫ সালের সর্বশেষ (৭ অক্টোবর) পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশি পাসপোর্টের অবনমন ঘটেছে। বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম স্থানে নেমে গেছে। ২০২৪ সালের শুরুতে এ সূচকে বাংলাদেশি পাসপোর্টের অবস্থান ছিল ৯৭তম।
বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে আছে আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা উত্তর কোরিয়াও। এর অর্থ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের নাগরিকেরাও এখন বিশ্বের ২২৭টি ভ্রমণ গন্তব্যের মধ্যে মাত্র ৩৮টিতে (গত বছর ছিল ৪২টি দেশ) ভিসামুক্ত সুবিধা পাচ্ছেন। হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের সূচকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশি পাসপোর্টের অবস্থান ছিল ১০১তম। এর অর্থ আমরা ২০২৪ সালে যেটুকু এগিয়েছিলাম, বর্তমানে আরও পিছিয়ে পড়েছি। দুই দশক আগে, ২০০৬ সালে হেনলি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৬৮তম।
হেনলি পাসপোর্ট সূচকে ২০২৫ সালে বাংলাদেশের চেয়ে এখনো এগিয়ে আছে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমার—দেশটির অবস্থান ৯৬তম। একই অবস্থানে আছে আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া ও যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন। আর দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুদ্র দেশ ভুটানের অবস্থান আরও এগিয়ে—৯২তম। প্রতিবেশী ভারতের অবস্থান ৮৫তম। বাংলাদেশের সঙ্গে তৈরি পোশাক ব্যবসায় প্রতিযোগী থাইল্যান্ডের পাসপোর্টের অবস্থান ৬৬তম।
বাংলাদেশি পাসপোর্টের মান যাচাই করতে এসব বৈশ্বিক সূচক দেখার প্রয়োজন হয় না। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের পদে পদে বিদেশে গিয়ে হয়রানি ও বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। সম্প্রতি আমাদের এক বন্ধুর সন্তান পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে যায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে। সঙ্গে ছিলেন অভিভাবকও। অন্য দেশের পাসপোর্টধারীরা আধা ঘণ্টার মধ্যে ইমিগ্রেশন পার হলেও তাঁদের তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সমুদয় তথ্য কম্পিউটার স্ক্রিনে চলে আসার পরও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জেরা শেষ হয় না। এসব সমস্যা থেকে আমরা কবে চিরতরে মুক্তি পাব জানি না।
● সোহরাব হাসান সাংবাদিক ও কবি
[email protected]
* মতামত লেখকের নিজস্ব
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট র অবস থ ন জ ল ই সনদ সরক র র অন ষ ঠ পর ক ষ আম দ র সনদ স
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি ফলাফল: নরসিংদীর দেশসেরা কলেজেও ধস
নরসিংদী জেলার শিক্ষাব্যবস্থায় যেন এক ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। একের পর এক নামকরা কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এবার ধস নেমেছে। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা।
এমনকি দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি কলেজ হিসেবে পরিচিত আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের ফলাফলও আশানুরূপ নয়। পূর্বে এই কলেজটি জাতীয় পর্যায়ে সেরা ফলাফলের জন্য পরিচিতি থাকলেও এবার ভরাডুবি লক্ষ্য করা গেছে।
আরো পড়ুন:
এইচএসসির ফলাফল: পঞ্চগড়ে ৩ কলেজে পাস করেনি কেউ
এইচএসসির ফলাফল: টাঙ্গাইলের ৭ কলেজে শতভাগ ফেল
শুধু তাই নয়, মোছলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া কলেজে এ বছর শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করেছে, যা এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। নরসিংদী অক্সফোর্ড কলেজে ৪২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও মাত্র তিনজন পাস করতে সক্ষম হয়েছে।
অপরদিকে, উদয়ন কলেজে ১৩৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২০ জনই অকৃতকার্য। নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজে ফেল করেছে ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা সরকারি কলেজের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক একটি পরিসংখ্যান।
নরসিংদী সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের মোট ৯৯০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২০৩ জন ফেল, নরসিংদী আইডিয়াল কলেজের ১৯১ জনের ১১৩ জন ফেল এবং পলাশের ইউরিয়া সার কারখানা কলেজে শতভাগ ফেল করেছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান নিয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের এই বিপর্যয়ের পেছনে শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা, পাঠদানের মানহীনতা, পরীক্ষার প্রস্তুতির ঘাটতি ও প্রশাসনিক নজরদারির অভাবকে দায়ী করছেন অভিভাবকরা। কেউ কেউ দাবি করছেন, শিক্ষাব্যবস্থায় বড় সংস্কার প্রয়োজন।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, এটা শুধু ১ বছরের সমস্যা নয়, বছরের পর বছর ধরে তৈরি হওয়া দুর্বল ভিত্তির ফলাফল আমরা এবার স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যৎ আরো অন্ধকার হয়ে যাবে।
নরসিংদী সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের শিক্ষার্থী রিমা আক্তার বলেন, “আমরা ঠিকমতো ক্লাসই পাইনি। স্যাররা অনেক সময় ক্লাসে আসতেন না, আর এলেও পড়াতেন না। বোঝা না গেলে পরে বললেও কেউ সাহায্য করতেন না।”
মো. কামাল হোসেন নামে মোছলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া কলেজের এক শিক্ষার্থী বাবা জানান, বছরের পর বছর ধরে ছেলেমেয়েরা একটা দুর্বল শিক্ষাব্যবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। কলেজের নাম আছে, কিন্তু ভিতরে শিক্ষার পরিবেশ একেবারেই নেই। এভাবে তো হবে না।
শহীদ আসাদ কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া রহমান বলেন, “আমরা নিজেদের দায় এড়াতে পারি না। অনেকেই নিয়মিত পড়াশোনা করিনি। অবশ্য সঠিক গাইডলাইনও পাইনি। শেষ সময়ে এসে স্যার-ম্যাডামদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।”
জহুরা খাতুন নামে নরসিংদী অক্সফোর্ড কলেজের এক অভিভাবক বলেন, “আমার মেয়ে দিনরাত পরিশ্রম করেছে। কিন্তু কলেজের সাপোর্ট ছিল না। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস তো একেবারেই হয়নি। এসব দেখার কেউ নেই।”
শিক্ষাব্যবস্থার এই ধস ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি উঠছে সর্বস্তরে। স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসন বলছে, ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
নরসিংদী জেলা শিক্ষা অফিসার এএসএম আব্দুল খালেক বলেন, “যেসব প্রতিষ্ঠান একেবারেই অকৃতকার্য হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। ভালো ফলাফল করার জন্য শিক্ষার্থীদের মনোযোগ সহকারে যাতে পড়ানো হয়, সে ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।”
ঢাকা/হৃদয়/মেহেদী