নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, “আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সরকারের যত অর্গান সংস্থা সবাই কাজ করছে। পুলিশ এরইমধ্যে বলেছেন নির্বাচন কীভাবে করা যায় তার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ বাহিনী তাদের অবস্থা সুদৃঢ় করছে।” 

শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জের এফআইবিডিবি কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সেন্টারে ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন চ্যালেঞ্জসমূহ নিরূপণ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালা প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 

নির্বাচন কমিশনার প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, “নির্বাচনে কাজ করার জন্য সাহসিকতা এবং প্রতিশ্রুতি বদ্ধ থাকতে হবে। ৫ আগস্ট মানুষ ছাত্রজনতা সবাই অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল তাই এই অভ্যুথান হয়েছে। নির্বাচনে সবাইকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে আপনার নিরাপত্তা অটোমেটিক নিশ্চিত করা হবে।” 

তিনি বলেন, “একটি ভোট কেন্দ্রের চিফ ইলেকশন কমিশনার হলেন একজন প্রিজাইডিং অফিসার। তার জন্য আপনাকে আইন জানতে হবে। একই সাথে কেন্দ্রের সবাইকে নিয়ে কাজ করতে সেখানে শুধু সিভিল লোক নয়, নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী বিজিবি পুলিশ আনসার থাকবে, তাদের সবাইকে পরিচালনা করবেন প্রিজাইডিং অফিসার।”

নির্বাচন কমিশনার মো.

আনোয়ারুল ইসলাম সরকার আরো বলেন, “নির্বাচন কমিশন আগের মত না এই কমিশন যে কোনো মূল্য এ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

তিনি বলেন, “সুনামগঞ্জ হাওর অঞ্চল। এখানে অনেক দুর্গম ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে, সেখানে বরাদ্দ বেশি দেওয়ার জন্য সুপারিশও করব। এই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য বিশ্বের সবাই তাকিয়ে আছে আমাদের দেশের দিকে। আমরা এই নির্বাচনকে কোনোভাবেই কলুষিত হতে দেওয়া হবে না।”

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ড. ইলিয়াস মিয়া, পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ-প্রধান (উপ সচিব) (বিটিইবি) প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা হাসান প্রমুখ।

ঢাকা/মনোয়ার/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র জন য র জন য স

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদে আইনি ভিত্তি না থাকলে জাতির সঙ্গে প্রহসন হবে: নাহিদ ইসলাম

জুলাই সনদের কোনো আইনি ভিত্তি না থাকলে সেটি শুধুই আনুষ্ঠানিকতার রূপ নেয় এবং সেটি জাতির সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা হিসেবেই গণ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। 

শনিবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকার বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আরো পড়ুন:

নির্বাচনের পূর্বেই শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে: মুকুল

শিক্ষকদের অনশনস্থলে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে এনসিপি

নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা আগেও বলেছি, আজকেও বলছি—যদি এই সনদের পেছনে আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে এর কোনো বাস্তব মূল্য থাকবে না। কেবল আনুষ্ঠানিকতা করে, জাতিকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। এমনটি হলে এটি এক ধরনের প্রহসন হয়ে দাঁড়াবে।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ দলের শীর্ষ নেতারা।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “৯০-এর দশকে গণ-আন্দোলনের সময় তিন দলের মধ্যে যে রাজনৈতিক সমঝোতা হয়েছিল, তার প্রতিফলন সংবিধানে হয়নি।” এবারও সেই একই ধরনের প্রতারণার শঙ্কা করছেন তিনি।

তার অভিযোগ, দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে পুরোনো ফ্যাসিস্ট কাঠামোকে টিকিয়ে রাখার নানা চেষ্টা চলছে। এ কাঠামোর সুবিধাভোগীদের চাপেই কিছু রাজনৈতিক দল আপস করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার চাপেই সরকার সংস্কার, ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং জুলাই সনদ পর্যন্ত এসেছে। কিন্তু এখন যদি আইনি ভিত্তি দেওয়া না হয়, তাহলে এই অর্জনও মূল্যহীন হবে।”

নাহিদ ইসলাম স্পষ্ট করে বলেন,“ রাজনৈতিক নেতৃত্ব পরিবর্তন করলেই গণতন্ত্র ফিরে আসবে না—বরং পুরোনো কাঠামো ভেঙে প্রকৃত সংস্কারের মধ্য দিয়েই যেতে হবে।”

পুলিশি সহিংসতা ও সনদ স্বাক্ষর নিয়ে সমালোচনা

জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ মঞ্চ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের কথা তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, “শহীদ পরিবারের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অপমানজনক। জনগণের কোনো প্রত্যাশার প্রতিফলন অনুষ্ঠানে আমরা দেখিনি।”

তিনি বলেন, “যদি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস (অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা) একটি আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি না দেন, তাহলে এটি জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছার প্রতিফলন হবে না।”

সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন জানান, এনসিপি জুলাই সনদের আইনগত স্বীকৃতির দাবিতে রাজপথে কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে। তিনি বলেন, “অনেক রাজনৈতিক দল এই সনদকে শুধুই একটি রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল হিসেবে রাখতে চেয়েছে, কিন্তু আমরা আইনি ভিত্তির দাবি জানিয়েছি শুরু থেকেই।”

গতকাল অনুষ্ঠিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ২৪টি দল স্বাক্ষর করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরাও সই করেছেন।

তবে এনসিপি এতে অংশ নেয়নি ও সই করেনি। এছাড়া চারটি বাম দল—সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ সনদে সই করেনি। গণফোরাম অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থাকলেও সই থেকে বিরত ছিল।

আন্দোলনের অংশ হিসেবে গতকাল ১৭ অক্টোবর  সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সংঘর্ষে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত ২৭ জন আহত হন। 

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ