তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) মানববন্ধন করা হয়েছে। এ সময় ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর এলাকা।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ১টায় শুরু হওয়া এ মানববন্ধনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রংপুর বিভাগ ছাত্র কল্যাণ পরিষদ।

আরো পড়ুন:

জাবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি

ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলের দাবিতে মানববন্ধন

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তিস্তা নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে এবং উত্তরাঞ্চলের কৃষি, পরিবেশ ও মানুষের জীবনমান রক্ষায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন এখন সময়ের অনিবার্য দাবি। উত্তরবঙ্গের মানুষ সব সময় দেশের সংকটে পাশে থেকেছে, অথচ তাদের প্রাপ্য গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

তাদের দাবি, তিস্তা বাঁচলে উত্তরবঙ্গ বাঁচবে, আর উত্তরবঙ্গ না বাঁচলে গোটা দেশেই খাদ্য সংকট দেখা দেবে।

শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী আল জকি হোসেন বলেন, “জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই-এটা শুধু স্লোগান নয়, আমাদের সার্বভৌমত্ব ও উত্তরবঙ্গের মানুষের বাঁচার দাবির ঘোষণা। ভারতের বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তিস্তা আজ রক্তশূন্য। তিস্তা কোনো দান-খয়রাত নয়, এটা আমাদের অধিকার।”

তিনি বলেনন, “নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে দিতেই হবে। অন্যথায় এই জনতার প্রতিবাদ আরো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে। তিস্তায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় উত্তরবঙ্গের কৃষকরা বছরের পর বছর অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। বিগত সরকারের ব্যর্থতায় আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এখন জনগণ জেগে উঠেছে—তারা আর কোনো শোষণ মানবে না।”

একই বিভাগের শিক্ষার্থী ও রংপুর ছাত্র কল্যাণ সমিতির যুন্ম সাধারণ সম্পাদক মুজতবা ফয়সাল নাঈম বলেন, “তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ২০২৩ সালকে লক্ষ্য ধরা হলেও সেটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা নতুন আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের অবহেলায় এখনো প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রকল্পের মোট বাজেটের ১২ শতাংশ দেশের নিজস্ব অর্থায়নে হওয়ার কথা। অন্তত এ অংশ দিয়েই কাজ শুরু করতে হবে।”

ঢাকা/শফিউল্লাহ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে নদীবন্দরের সীমানা নিয়ে উত্তেজনা, বিক্ষোভে পিছু হটল বিআইডব্লিউটিএ

কক্সবাজার শহরে নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আজ রোববার দুপুরে শহরের বাঁকখালী নদীর কস্তরাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে পিছু হটেন বিআইডব্লিউটিএর (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ) কর্মকর্তারা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ কস্তুরাঘাট এলাকায় নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা আসবেন—এমন খবরেই সকাল থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হতে থাকেন। সকাল ৯টা থেকে বদরমোকাম, কস্তুরাঘাট ও পেশকারপাড়ার লোকজন গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এতে ওই এলাকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে একই জায়গায় কয়েক শ নারী-পুরুষ এক হয়ে মানববন্ধন করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা কস্তুরাঘাট এলাকায় পৌঁছান। এরপর উত্তেজনা আরও বাড়ে। শেষ পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণের কাজ বন্ধ করেই ফিরে যায় বিআইডব্লিউটিএ।

বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত ১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর বাঁকখালী নদীর ওই অংশে উচ্ছেদ অভিযানে ৪৯৬টি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে প্রায় ৬৩ একর জমি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার জমি আবার দখলের ঝুঁকি থাকায় কাঁটাতারের বেড়া ও সীমানা পিলার দেওয়ার উদ্যোগ নেয় বিআইডব্লিউটিএ।

যা বলছেন বিক্ষোভকারীরা

অবরোধকারীদের দাবি, উচ্ছেদ হওয়া স্থানের মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত জমিও রয়েছে। পারুল আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘আমাদের খতিয়ান আছে, খাজনাও দিচ্ছি। ক্ষতিপূরণ না দিয়ে বা আলোচনা না করে ঘরবাড়ি ভাঙা ও কাঁটাতার দেওয়া চলবে না।’

সাবিনা ইয়াছমিন নামের আরেক নারী বলেন, অনেক পাকা ভবন যখন তৈরি হলো, তখন কেউ থামাননি। এখন হঠাৎ উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে অনেকেই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষতিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এ জায়গায় স্থায়ী কোনো অবকাঠামো হতে দেবেন না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের এ মানববন্ধনে বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও অংশ নেন। তাঁদের একজন কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাসিমা আকতার। তিনি বলেন, বাঁকখালী নদীর দখল নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পৃথক তিনটি মামলা রয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ নিয়েও হাইকোর্টে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না করে ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করে জায়গাজমিতে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলা অন্যায়। আলোচনার মাধ্যমে সংকটের নিরসন না করলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
কর্মসূচিতে থাকা জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক ও আইনজীবী মো. ইসমাইল বলেন, বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ করা জমিতে অসংখ্য মানুষের খতিয়ানভুক্ত জমি রয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে তিনিসহ ৭৭ জন মামলা করেছেন।

নদী বন্দরের সীমানা নির্ধারণের খবর শুনে সড়কে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ সকালে কক্সবাজারের কস্তুরা ঘাট এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাগরে নিখোঁজ ছাত্র অরিত্রকে উদ্ধারে অভিযান শুরুর দাবি
  • কক্সবাজারে নদীবন্দরের সীমানা নিয়ে উত্তেজনা, বিক্ষোভে পিছু হটল বিআইডব্লিউটিএ
  • উত্তরবঙ্গের সম্ভাবনাকে ভারতের প্রেসক্রিপশনে নষ্ট করা হয়েছে: সাদিক কায়েম