ইবিতে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ, নিরাপত্তা শঙ্কায় শিক্ষার্থীরা
Published: 19th, October 2025 GMT
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাধে বহিরাগতদের প্রবেশে নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ উঠেছে, বহিরাগত নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন মাইকিং-বিজ্ঞপ্তি দিয়েই দায় সেরেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক, লালন শাহ হল ও শাহ আজিজুর রহমান হল ফটক দিয়ে অবাধে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছে বহিরাগতরা। এতে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা থাকলেও এসব নিয়ন্ত্রণে কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না তাদের।
আরো পড়ুন:
বেরোবি শিক্ষার্থীদের জন্য ২ দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
মোরাল প্যারেন্টিং বৃত্তি পেল অর্ধশতাধিক ইবি শিক্ষার্থী
সম্প্রতি বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ক্যাম্পাসে মাইকিং করলেও মোটরসাইকেল, অটো, ভ্যান নিয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ করতে দেখা যায়। এছাড়া ক্যাম্পাসে ছিন্নমূল ও ভিক্ষুকদের সংখ্যাও বেড়েছে। এমনকি তারা সাহায্যের জন্য কোনো বাঁধা ছাড়াই পরীক্ষার হল ও শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করছেন।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে প্রধান ফটক হয়ে অটো নিয়ে কয়েকজন বহিরাগত ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থানে টিকটক ভিডিও করতে দেখা যায়। এতে ক্যাম্পাসজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এসবের ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে নিরাপত্তা শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
বহিরাগতরা বলেন, আমরা শেখপাড়া ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসছি। ছবি ভিডিও ও টিকটক করছি। প্রবেশের সময় আমাদের কোনো বাঁধা দেওয়া হয়নি। ক্যাম্পাসটা খুব সুন্দর লাগছে।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, “ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ লাগামহীন। এদের নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না। ফলে আবাসিক হলগুলোতে বিভিন্ন সময়ে চুরির ঘটনা ঘটছে। এছাড়া আমাদের পরীক্ষার হলেও বহিরাগতরা যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরও অরক্ষিত। এছাড়া প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কোনো পরিচয়পত্রও দিচ্ছে না। ফলে আমরা সবসময়ই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড.
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ডজনখানেক নেতাকে হতাশ করে বিএনপির প্রার্থী শেখ মজিবুর ও মাজহারুল
কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) ও কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে গতকাল বৃহস্পতিবার দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। এতে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে ডজনের বেশি প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের অপেক্ষার সময় শেষ হলো।
কিশোরগঞ্জ-১ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম। এই আসনে মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিযোগিতায় একাধিক প্রার্থী মাঠে সক্রিয় ছিলেন।
কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেন বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ মজিবুর রহমান। তবে এত দিন আলোচনা ছিল, আসনটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১২–দলীয় জোটের সঙ্গী বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
গতকাল বিকেলে প্রার্থিতা ঘোষণার পর উভয় প্রার্থীর সমর্থকেরা খণ্ড খণ্ড আনন্দমিছিল বের করেন।
কিশোরগঞ্জ-৫বিএনপি প্রথম দফায় যে কয়টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা ঘোষণা করেনি, কিশোরগঞ্জ-১ ও কিশোরগঞ্জ-৫ আসন সেগুলোর মধ্যে ছিল। অনেকের ধারণা ছিল, জোটগত সমীকরণ ভাবনায় কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়নি। বিশেষ করে ১২–দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদার পক্ষে প্রচারণা চালানো ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়ে গত বছরের ২২ অক্টোবর কেন্দ্র থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের চিঠি দেওয়া হলে এমন ধারণা জোরালো হয়। এহসানুল হুদাও এই চিঠিকে মনোনয়নের সবুজ সংকেত হিসেবে প্রচার করেন। তবে বিএনপি নেতা শেখ মজিবুর রহমান এটি মানতে নারাজ ছিলেন। তিনি বা তাঁর সমর্থকেরা প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো প্রক্রিয়ায় মহড়া করতেন। শুধু তা–ই নয়, তাঁরা ট্রেন আটকে দেন এবং বাজিতপুর ও নিকলীর ২০ কিলোমিটার দূরত্বে একযোগে ২৩টি স্থানে মানববন্ধন করেন।
অপর দিকে এহসানুল হুদার সমর্থকেরাও নানা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে ছিলেন। পাল্টাপাল্টি শোডাউন উত্তেজনায় রূপ নেয়। দুই পক্ষের সহিংসতায় অনেকে আহত হন। অসংখ্য মোটরসাইকেল ও পিকআপ ভাঙচুর হয়। এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করে। এ অবস্থায় মনোনয়ন ঘিরে সংসদীয় এলাকাটিতে অস্থিরতা দেখা দেয়।
মনোনয়ন পাওয়া শেখ মজিবুর রহমান বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে আছেন ২০১৫ সাল থেকে। অষ্টম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। মনোনয়নের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘দল আমার ওপর আস্থা রেখেছে। আমারও দলের ওপর পূর্ণ আস্থা আছে।’
মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় এহসানুল হুদার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
কিশোরগঞ্জ-১কিশোরগঞ্জ-১ আসনে ১৯৯১ সালে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। এরপর ১৯৯৬ সাল থেকে এখানে একটানা পাঁচবার সংসদ সদস্য হন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তিনি মারা যান। এরপর সেখানে সংসদ সদস্য হন সৈয়দ আশরাফের ছোট বোন জাকিয়া নূর।
মাজহারুল ইসলাম ছাড়াও এবার এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ হিলালী, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রেজাউল করিম খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়ালীউল্লাহ্ রাব্বানী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ, হোসেনপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এম আতিকুর রহমান।
এখানে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে মোসাদ্দেক আলী ভূঁইয়া প্রচার চালিয়ে আসছেন। গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফও নির্বাচনী প্রচারণায় আছেন।
মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘দল যে আস্থা রেখে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে, আমি সেটি রক্ষার চেষ্টা করব।’
তবে অপর মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনেকে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। মনোনয়নপ্রত্যাশী রেজাউল করিম খান বলেন, ‘আমি দলের মন্দ সময়ে ছিলাম। নির্বাচন করেছি। এ অবস্থায় দল যাঁর নাম ঘোষণা করেছে, সেটি ঠিক হয়নি।’ তাঁর আশা এই আসনে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি বিএনপি পুনর্বিবেচনা করবে।