খাগড়াছড়িতে পাটাতন দেবে সেতুতেই আটকা কাভার্ড ভ্যান, যান চলাচল ব্যাহত
Published: 24th, October 2025 GMT
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাটাতন দেবে সেতুতেই আটকা পড়েছে মালবাহী কাভার্ড ভ্যান। আজ শুক্রবার সকাল আটটার দিকে উপজেলার বেতছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ কারণে সকাল থেকেই খাগড়াছড়ির সঙ্গে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বেলা তিনটা পর্যন্ত সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাভার্ড ভ্যানটি দিয়ে দীঘিনালা থেকে লংগদুতে যাচ্ছিল। তবে সেতুতেই উঠতে এর পাটাতন দেবে যায়। এরপর এটি উদ্ধার করতে অন্য যান যাওয়ার পর দেবে যায় আরও কয়েকটি পাটাতন। এ কারণে সেতুটি দিয়ে বড় ও মাঝারি আকারের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে এক পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে।
সেতু দিয়ে যান চলাচলের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা। লংগদু সড়কের বাসচালক জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বাস নিয়ে খাগড়াছড়ি হয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ায় কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সেতু দেবে যাওয়ায় যেতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে যাত্রীরাও বাড়তি টাকা খরচ করে বিকল্প পথে যাচ্ছেন।
জসিম মিয়ার বাসটিতে থাকা লংগদুর মাইনী এলাকার মো.
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও রাঙামাটির লংগদুর বাসিন্দাদের জন্য সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়ক দিয়ে খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, ঢাকা সহজেই যাতায়াত করা যায়। লংগদু থেকে এ সড়ক দিয়ে সাধারণত আদা, হলুদ, কলা, আনারস, বাঁশ-বেতসহ নানা কৃষিপণ্য দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি আনা হয়। এরপর সেখান থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে পাঠানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে তাঁদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। কিছুদিন পরপর সেতুর পাটাতন দেবে যাওয়ার কারণে ভোগান্তিতেও পড়তে হয়।
অবশ্য শুধু এ সেতু নয়। এ উপজেলার বাকি সেতুগুলোর অবস্থাও একই। এটি ছাড়াও উপজেলায় আরও পাঁচটি বেইলি সেতু রয়েছে। এগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বোয়ালখালী, মেরুং বাজার, হেডকোয়ার্টার, মাইনী ও জামতলী সেতু নামে পরিচিত। এর মধ্যে মাইনী সেতুর দৈর্ঘ্য ১১০ মিটার। আর বাকিগুলো ১৫ থেকে ৪০ ফুট।
আরও পড়ুন‘সেতুতে উঠলেই ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়’০৪ জুলাই ২০২৫স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নব্বইয়ের দশকে নির্মাণ হওয়া এসব সেতু নিয়েই এখন ভয় সবার। ভারী যানবাহন চলাচল ও বন্যার কারণে প্রায়ই ব্রিজের পাটাতন খুলে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি স্থবির হয় যোগাযোগব্যবস্থাও। উপজেলায় এসব সেতু দিয়েই রাঙামাটির লংগদু, বাঘাইছড়ি ও সাজেকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়। প্রতিদিন গড়ে ৪০০–৫০০ গাড়ি এই পথে চলে। তবে ছুটির দিনগুলোতে সাজেকগামী গাড়ির চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘সেতুটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি পাকা হবে। আমাদের লোকজন ঘটনাস্থলে রয়েছে। সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করার জন্য আমাদের কর্মীরা কাজ করছেন।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম টাই, প্রথম সুপার ওভার, এরপর বাংলাদেশের হার
কালো মাটির উইকেট, সাপের মতো বাঁক খাওয়ানো বল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুধু স্পিনারদের দিয়েই পুরো ৫০ ওভার করানোর রেকর্ডের পর শেষ ওভারের রোমাঞ্চ—ম্যাচটাকে মনে রাখার জন্য এটুকুই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু কে জানত, বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ওয়ানডের শেষটাতে লেখা ছিল আরও এক পরত নাটকীয়তা! সব ভুলিয়ে দিন শেষে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হবে তাতেই।
৫০ ওভার শেষে ম্যাচ টাই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সুপার ওভারের মুখোমুখি বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়ল হারের দীর্ঘশ্বাস নিয়ে। সুপার ওভারে অধিনায়ক শাই হোপের ৩ বলে ৭ রানের সৌজন্যে ১ উইকেটে ১০ রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ সৌম্য সরকারের উইকেট হারিয়ে করে ৯ রান। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, দুটি নো, একটি ওয়াইড ও একটি লেগ বাই থেকে অতিরিক্ত ৪ রান এবং ৩টি বাড়তি বল পেয়েও বাংলাদেশ ১০ রানের লক্ষ্য পেরোতে পারেনি। সুপার ওভারে নাজমুল হোসেনকে তিনে নামানোটাও অবশ্য কম বিস্ময়ের ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাটকীয় জয়ে সিরিজে এখন ১-১ সমতা। আগামীকালের শেষ ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে অলিখিত ফাইনাল।
দিন শেষে ফলাফলটাই আসল। তার ওপর সেটির নিষ্পত্তি যদি হয় এমন রোমাঞ্চকরভাবে, জয়-পরাজয় দুটোর অনুভূতিতেই ভর করে আবেগ। পরশু গভীর রাতে ঢাকায় পৌঁছে কাল দুপুরেই ম্যাচ খেলতে নামা আকিল হোসেনকে তাই ম্যাচ শেষে সতীর্থ প্রায় সবাই আলিঙ্গনে জড়ালেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে বাংলাদেশকে জয়বঞ্চিত করা সুপার ওভারটা যে করেছিলেন তিনিই! বাংলাদেশের ডাগআউট তখন শোকস্তব্ধ। এমন ম্যাচও যে এভাবে হারা যায়, সেটা যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না ক্রিকেটারদেরই।
১নিজেদের ৩৯ বছর ও ৮১৪ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতহাসে প্রথম টাই করল বাংলাদেশ।ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের অন্যতম নায়ক আকিল হোসেন