ঝুপড়ি ঘরে দুর্বিষহ জীবন কাটছে প্রতিবন্ধী মেহেরুন নেছার
Published: 27th, October 2025 GMT
ঝুপড়ি ঘরে দুর্বিষহ জীবন কাটছে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৭৮ বছর বয়সী মেহেরুন নেছার। জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী তিনি। বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়েছে শরীর। স্বামী, সন্তান আর সংসারের স্বাদ মিলেনি জীবনে। জগতে অসংখ্য মানুষ থাকলেও তার দেখভালের কেউ নেই।
মেহেরুন নেছা প্রতিবন্ধী ভাতা পান। তবে, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। বাবা-মার রেখে যাওয়া ঝুপড়ি ঘরটি তার একমাত্র সম্বল। দিনে দিনে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে সে ঘরও। সেটি আর বসবাসের উপযোগী নেই।
ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের এক কোণে ফসলি মাঠের পাশে ছোট একটি মাটির ঘর। ছাউনির টিনগুলো মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই চুইয়ে পড়ে পানি। বারান্দার অনেক টিন নষ্ট হয়ে পড়ে গেছে। বাঁশের খুঁটিগুলো নড়বড়ে। একটু ঝড়েই উড়ে যেতে পারে ঘর-বারান্দার টিনগুলো।
জন্ম প্রতিবন্ধী মেহেরুন নেছা এই ঘরে একাকি সাপ ও শিয়ালের আতঙ্ক নিয়ে বাস করছেন। বাবা-মা বেঁচে থাকার সময় কিছুটা আদর-যত্ন পেয়েছেন। তারা মারা যাওয়ার পর থেকেই দুর্বিষহ জীবন শুরু হয় মেহেরুন নেছার। পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারেন না। চোখেও আলো নেই এখন। গ্রামবাসীদের সামান্য সহযোগিতায় বেঁচে আছেন মেহেরুন নেছা।
গ্রামবাসী রেজাউল করিম বলেছেন, আমি ছোটবেলা থেকেই এই প্রতিবন্ধী অসহায় মানুষটিকে দেখছি। তার আপন বলতে কেউ নেই। চলাফেরা করতে পারেন না। হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করতে হয়। তার কষ্ট দেখে খুব দুঃখ লাগে।
মর্জিনা ও আলেয়া বেগম নামে দুই গ্রামবাসী নারী বলেন, উনার বাবা-মা নেই, বিয়েও হয়নি। জন্মের পর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। এখন চোখেও দেখতে পান না। বাবা-মার রেখে যাওয়া কুঁড়েঘরে থাকেন। তার ঘরটি বসবাসের মতো নয়। দেয়াল ভেঙে যাচ্ছে। উনার অসহায়ত্বের কথা এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বার এবং উপজেলার লোকজনও জানেন। সবাই এখানে আসেন, দেখে যান; কিন্তু অসহায় মানুষটির ঘরের কোনো ব্যবস্থা করেন না তারা।
গ্রামবাসী ফরিদুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা গ্রামবাসী যতক্ষণ খাবার না দিই, ততক্ষণ তার আহার জোটে না। তার বয়স অনেক হয়েছে। ছেলেমেয়ে ও স্বামী নেই, কে দেখবে অসহায় হতদরিদ্র মানুষটিকে? সরকারি ঘর অনেকেই পায়, কিন্তু উনাকে আজও দেওয়া হয়নি। একটা ভালো ঘর থাকলে, তিনি একটু আরামে থাকতেন। চেয়ারম্যান-মেম্বার এবং ইউএনওসহ অনেকেই এখানে আসেন। তার আইডি কার্ড নিয়ে যান, কিন্তু, কোনো কাজ হয় না। আমরা আহ্বান জানাই, সরকার যেন এই প্রতিবন্ধী অসহায় মানুষটির দিকে একটু সুনজর দেয়।
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমি সংবাদ পেয়ে এই প্রতিবন্ধী নারীর এখানে কিছু খাবার নিয়ে এসেছি। এনজিওর মাধ্যমে এখানে ঘর তৈরির ব্যবস্থা করব।
ঢাকা/মোসলেম/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র মব স উপজ ল র অসহ য়
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলা, ৩ নারীসহ গ্রেপ্তার ৪
বন্দরে পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ নারীসহ ৪ মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই সময় স্থানীয় এলাকাবাসী আহত পুলিশ সদস্য জনী (৩৫)কে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেছে। বর্তমানে সে বন্দর থানার মদনগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে কনস্টেবল পদে কর্মরত রয়েছে।
সন্ত্রাসী হামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকার জয়নাল মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (৩০) একই এলাকার মৃত মনির হোসেনের মেয়ে ও রবিউল ইসলামের স্ত্রী লেডি সন্ত্রাসী মুন্নি আক্তার (২৭) সোনাকান্দা বেপারীপাড়া এলাকার নুরুল আমিন মিয়ার মেয়ে ফারজানা আক্তার (২৫) ও একই এলাকার মনির হোসেনের মেয়ে ও সোহেল মিয়ার স্ত্রী সুমা (২২)।
এ ব্যাপারে মদনগঞ্জ ফাঁড়ি উপ-পরিদর্শক সৈয়দ জাকির হোসেন বাদী হয়ে সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে গ্রেপ্তারকৃত ৪ হামলাকারিসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ্য করে ও আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে সংশ্লিষ্ট থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের সোমবার দুপুরে উল্লেখিত মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে গত রোববার (১৬ অক্টোবর) রাত ১০টায় বন্দর থানার ২০ নং ওয়ার্ডের দড়ি সোনাকান্দা এলাকায় এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে।
থানার তথ্য সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে মদনগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকায় মাদক উদ্ধারের অভিযান পরিচালনা কালে গ্রেপ্তারকৃত আসামীরাসহ অজ্ঞাত নামা মাদক কারবারিরা পুলিশের উপর লক্ষ করে অতর্কিত হামলা চালায়। ওই সময় হামলাকারিরা পুলিশ সদস্য জনীক বেদম ভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তারা দীর্ঘ দিন ধরে উল্লেখিত এলাকায় অবাধে মাদক বিক্রি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
এর ধারাবাহিকতা গত ১৫ অক্টোবর রাত ৮টায় বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকার মৃত জামাল হোসেনের ছেলে শওকত মিয়া কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে বন্দর থানাধীন দড়ি সোনাকান্দা বেপারীপাড়া সাকিনস্থ ধৃত লেডী সন্ত্রাসী মুন্নী বেগমের মুদি দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছামাত্র বিবাদী মুন্নীসহ অন্যান্য বিবাদীগন পথ গতিরোধ
অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ শওকতের নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।
আমি বিবাদীদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বিবাদীগন আমাকে মারপিট করার জন্য উদ্যত হয়।