ঝুপড়ি ঘরে দুর্বিষহ জীবন কাটছে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৭৮ বছর বয়সী মেহেরুন নেছার। জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী তিনি। বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়েছে শরীর। স্বামী, সন্তান আর সংসারের স্বাদ মিলেনি জীবনে। জগতে অসংখ্য মানুষ থাকলেও তার দেখভালের কেউ নেই।

মেহেরুন নেছা প্রতিবন্ধী ভাতা পান। তবে, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। বাবা-মার রেখে যাওয়া ঝুপড়ি ঘরটি তার একমাত্র সম্বল। দিনে দিনে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে সে ঘরও। সেটি আর বসবাসের উপযোগী নেই। 

ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের এক কোণে ফসলি মাঠের পাশে ছোট একটি মাটির ঘর। ছাউনির টিনগুলো মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই চুইয়ে পড়ে পানি। বারান্দার অনেক টিন নষ্ট হয়ে পড়ে গেছে। বাঁশের খুঁটিগুলো নড়বড়ে। একটু ঝড়েই উড়ে যেতে পারে ঘর-বারান্দার টিনগুলো। 

জন্ম প্রতিবন্ধী মেহেরুন নেছা এই ঘরে একাকি সাপ ও শিয়ালের আতঙ্ক নিয়ে বাস করছেন। বাবা-মা বেঁচে থাকার সময় কিছুটা আদর-যত্ন পেয়েছেন। তারা মারা যাওয়ার পর থেকেই দুর্বিষহ জীবন শুরু হয় মেহেরুন নেছার। পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারেন না। চোখেও আলো নেই এখন। গ্রামবাসীদের সামান্য সহযোগিতায় বেঁচে আছেন মেহেরুন নেছা।

গ্রামবাসী রেজাউল করিম বলেছেন, আমি ছোটবেলা থেকেই এই প্রতিবন্ধী অসহায় মানুষটিকে দেখছি। তার আপন বলতে কেউ নেই। চলাফেরা করতে পারেন না। হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করতে হয়। তার কষ্ট দেখে খুব দুঃখ লাগে।

মর্জিনা ও আলেয়া বেগম নামে দুই গ্রামবাসী নারী বলেন, উনার বাবা-মা নেই, বিয়েও হয়নি। জন্মের পর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। এখন চোখেও দেখতে পান না। বাবা-মার রেখে যাওয়া কুঁড়েঘরে থাকেন। তার ঘরটি বসবাসের মতো নয়। দেয়াল ভেঙে যাচ্ছে। উনার অসহায়ত্বের কথা এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বার এবং উপজেলার লোকজনও জানেন। সবাই এখানে আসেন, দেখে যান; কিন্তু অসহায় মানুষটির ঘরের কোনো ব্যবস্থা করেন না তারা।

গ্রামবাসী ফরিদুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা গ্রামবাসী যতক্ষণ খাবার না দিই, ততক্ষণ তার আহার জোটে না। তার বয়স অনেক হয়েছে। ছেলেমেয়ে ও স্বামী নেই, কে দেখবে অসহায় হতদরিদ্র মানুষটিকে? সরকারি ঘর অনেকেই পায়, কিন্তু উনাকে আজও দেওয়া হয়নি। একটা ভালো ঘর থাকলে, তিনি একটু আরামে থাকতেন। চেয়ারম্যান-মেম্বার এবং ইউএনওসহ অনেকেই এখানে আসেন। তার আইডি কার্ড নিয়ে যান, কিন্তু, কোনো কাজ হয় না। আমরা আহ্বান জানাই, সরকার যেন এই প্রতিবন্ধী অসহায় মানুষটির দিকে একটু সুনজর দেয়।

এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমি সংবাদ পেয়ে এই প্রতিবন্ধী নারীর এখানে কিছু খাবার নিয়ে এসেছি। এনজিওর মাধ্যমে এখানে ঘর তৈরির ব্যবস্থা করব।

ঢাকা/মোসলেম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র মব স উপজ ল র অসহ য়

এছাড়াও পড়ুন:

সিকৃবিতে শিবিরের ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় ‘রান উইথ সাউ শিবির’ ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা। বিজয়ের ৫৪ বছর উদযাপন উপলক্ষে শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণে ও শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ‘৩৬ জুলাই’ গেইট থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে শাহী ঈদগাহ ময়দান এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। আয়োজকদের তথ্য মতে, প্রতিযোগিতায় অনলাইনে নিবন্ধন করেন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে পুরো আয়োজনে ছিল উৎসবের আমেজ। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে অংশগ্রহণকারীদের টিশার্ট ও বাংলাদেশের পতাকা দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতা শেষে সেরা দশ বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয় এবং সকল অংশগ্রহণকারীর জন্য সকালের নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়।

আরো পড়ুন:

শিবিরকে জড়িয়ে ছাত্রদল নেত্রীর পোস্ট, ইবি শিবিরের নিন্দা-প্রতিবাদ

সেমিনার: ১৫ বছরে গুম শিবিরের ২৫৫ জন, সাতজন ফেরেননি এখনো

ম্যারাথন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহাম্মেদ কনকের সঞ্চালনায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম সম্পাদক হাফেজ ইউসুফ ইসলাহি।

হাফেজ ইউসুফ এলাহী বলেন, "আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আমাদের সূর্য ওঠার সাথে সাথে জেগে উঠতে হবে, পরিশ্রমী হতে হবে। সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবির প্রচলিত কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের মতো নয়। ইসলামী ছাত্রশিবির একটি স্বতন্ত্রধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইসলামী ছাত্রশিবির বিশ্বাস করে এদেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।"

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি রাকিব হোসেন শান্ত বলেন, " শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, আগ্রহ এবং উদ্দীপনা দেখে আমরা আনন্দিত। আগামীতে শিক্ষার্থীদের এমন সাপোর্ট পেলে আমরা ছাত্রবান্ধব নতুন নতুন চমক নিয়ে হাজির হবো ইনশাআল্লাহ।"

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম সাজু, সিকৃবির সাবেক সভাপতি ও সিলেট মহানগরের এইচআরডি সম্পাদক ডা. কলিম উদ্দীনসহ ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।

ঢাকা/আইনুল/জান্নাত 

সম্পর্কিত নিবন্ধ