আট দশক ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা পাবলো পিকাসোর একটি চিত্রকর্ম ৩ কোটি ২০ লাখ ইউরোতে বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪৫৫ কোটি টাকার বেশি (১ ইউরো সমান ১৪২ টাকা হিসেবে)।

এটি বিশ্ববরেণ্য স্প্যানিশ চিত্রশিল্পী পিকাসোর দীর্ঘদিনের অনুপ্রেরণা ও সঙ্গী ডোরা মারকে নিয়ে আঁকা এক রঙিন প্রতিকৃতি।

চিত্রকর্মটি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। তবে এটি নিলামে বিক্রি হওয়া পিকাসোর সবচেয়ে দামি শিল্পকর্ম নয়।

‘বাস্ট অব আ উইমেন উইথ আ ফ্লাওয়ারড হ্যাট (ডোরা মার)’ ছবিটি আঁকা হয় ১৯৪৩ সালের জুলাই মাসে।

ডোরা মার নিজেও একজন শিল্পী ও আলোকচিত্রী ছিলেন। তিনি প্রায় সাত বছর ধরে পিকাসোর সঙ্গী ও অনুপ্রেরণা ছিলেন। পিকাসো যখন ছবিটি আঁকেন, তখন তাঁদের সম্পর্ক একটি বেদনাদায়ক পরিসমাপ্তির পথে যাচ্ছিল।

পিকাসোর সঙ্গে ডোরা মারের যখন পরিচয় হয়, তখন তাঁর বয়স ২৯ বছর। দ্রুতই এই তরুণী শিল্পীর প্রেমে পড়েন এবং তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

শিল্পকর্মটি ১৯৪৪ সালে বিক্রি হয়। এরপর এটিকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। চিত্রকর্মটি এত দিন একটি পারিবারিক সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত ছিল। চিত্রকর্মটি পিকাসোর ‘উইমেন ইন আ হ্যাট’ সিরিজের অংশ।

প্যারিসের একটি নিলাম হাউসে ছবিটি বিক্রি হয়। নিলামকক্ষে উপস্থিত এক ব্যক্তি সেটি কিনে নেন। চিত্রকর্মটি বিক্রির পর নিলামকারী ক্রিস্টোফ লুসিয়ঁ বলেন, ‘এটি একটি অসাধারণ সাফল্য।’

তাঁদের গল্প খুব সাধারণ ছিল না। আপনি চিত্রকর্মটির দিকে তাকালে তাঁর চোখে পানি দেখতে পাবেন। কারণ, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন পিকাসো তাঁকে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

এ বছর এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে নিলামে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়া কোনো শিল্পকর্ম হচ্ছে এটি। লুসিয়ঁ চিত্রকর্মটিকে ‘ভালোবাসার গল্পের ছোট্ট একটি টুকরো’ বলে বর্ণনা করেন।

পিকাসোর সঙ্গে ডোরা মারের যখন পরিচয় হয়, তখন তাঁর বয়স ২৯ বছর। দ্রুতই এই তরুণী শিল্পীর প্রেমে পড়েন এবং তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

পরে আরেক তরুণী ফ্রাঁসোয়া জিলোর জন্য ডোরা মারকে ছেড়ে যান পিকাসো। পিকাসো ছেড়ে যাওয়ার পর ডোরা অন্তরালের জীবন বেছে নেন। তিনি ৮৯ বছর বয়সে মারা যান।

এটি এ বছর এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে নিলামে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়া কোনো শিল্পকর্ম।

লুসিয়ঁ বলেন, ‘তাঁদের গল্প খুব সাধারণ ছিল না। আপনি চিত্রকর্মটির দিকে তাকালে তাঁর চোখে পানি দেখতে পাবেন। কারণ, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, পিকাসো তাঁকে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।’

নিলাম শুরুর আগে নিলামকারী লুসিয়ঁ বলেছিলেন, বিশ্বজুড়ে এই চিত্রকর্ম নিয়ে বিপুল আগ্রহ আছে।

আরও পড়ুনপিকাসোর চিত্রকর্ম ১ হাজার ৫২৯ কোটি টাকায় বিক্রি০৯ নভেম্বর ২০২৩

নিলামে বিক্রি হওয়া পিকাসোর সবচেয়ে দামি চিত্রকর্মটি হলো ‘লেস ফেমিস ডি’আলজার’ (উইমেন অব আলজিয়ার্স)। ২০১৫ সালে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টি ১৭ কোটি ৯৩ লাখ ডলারে ওই চিত্রকর্ম বিক্রি করেছিল।

১৯৩২ সালে পিকাসোর আঁকা ‘উইমেন উইথ আ ওয়াচ’ চিত্রকর্মটি ২০২৩ সালে নিলামে ১৩ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলারে (১ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা) বিক্রি হয়েছিল। এটি পিকাসোর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া কোনো চিত্রকর্ম বলে জানিয়েছিল ব্রিটিশ নিলামকারী প্রতিষ্ঠান সদবি’স।

পিকাসো ১৮৮১ সালে স্পেনের মালাগায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বড় হয়েছেন বার্সেলোনায়। পরে পিকাসো ১৯০৪ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যান। সেখানেই তিনি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা চিত্রশিল্পী হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেন।

আরও পড়ুনপিকাসোকে ছেড়ে গিয়েছিলেন যে প্রেমিকা ০৯ জুন ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল পকর ম চ ত রকর ম উইম ন

এছাড়াও পড়ুন:

বাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবিতে অনশনে শিক্ষার্থী

বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ছাত্র সংসদ (বাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে অনশন শুরু করেছেন এক শিক্ষার্থী। গত দুইদিন ধরে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তিনি এ কর্মসূচি পালন করছেন।

তিনি হলেন, কলেজে ইতিহাস বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ফেরদৌস রুমি।

আরো পড়ুন:

বরিশালে ডেঙ্গুতে দুইজনের মৃত্যু

বরিশালে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ফেরদৌস রুমি বলেন, “৩২ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখর বিএম কলেজ। ছাত্র সংসদ নির্বাচন ছাত্রদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু ২৪ বছর ধরে কলেজটিতে নির্বাচন হচ্ছে না। ছাত্র সংসদ না থাকায় শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ভূমিকা রাখতে পারছে না বাকসু।”

তিনি বলেন, “নির্বাচনের দাবিতে ১ মাসের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত করছে না। তাই বাধ্য হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছি। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না করা পর্যন্ত এ অনশন চলবে।”

এ ব্যাপারে সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ড. শেখ মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে শিক্ষকদের নিয়ে একটি প্রাথমিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।

গত ২৩ অক্টোবর বাকসু নির্বাচনের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের দুইটি ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, বিএম কলেজের ছাত্র সংসদ শুধু নেতৃত্ব নয়, এটি ছিল শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের অন্যতম মাধ্যম। অথচ দীর্ঘ ২ যুগ ধরে প্রশাসন নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

ঢাকা/পলাশ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ