যশোরের শত বছরের ‘জলযোগ’, লুচি, মিষ্টি, গরম ডালে শুরু সকাল
Published: 28th, October 2025 GMT
খাবারের ছোট একটি দোকান। কাকডাকা ভোর থেকেই শুরু মানুষের আনাগোনা। সকাল হতে না হতেই রীতিমতো ভিড়। কেউ দোকানে বসে খাচ্ছেন, কেউবা খাবার নিয়ে যাচ্ছেন—এক জমজমাট চিত্র। বলছি যশোরের ‘জলযোগ’-এর কথা। লুচি-ডাল-মিষ্টির জন্য বিখ্যাত দোকানটির বয়স শত বছরের বেশি।
জলযোগের ঠিকানা যশোর শহরের চৌরাস্তা, কোতোয়ালি থানা–সংলগ্ন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন সড়কের (রেল রোড) গা ঘেঁষে। দোকানটির লুচি-ডাল সবচেয়ে জনপ্রিয়। সকালে গরম–গরম লুচির সঙ্গে পাওয়া যায় ডাল। আর সন্ধ্যায় থাকে লুচির সঙ্গে সবজি। প্রতিটি লুচি সাত টাকা। ডাল ও সবজির প্লেট ১৫ টাকা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকানে লেগে থাকে খাদ্যরসিকদের ভিড়।
জলযোগে লুচির সঙ্গে নানা পদের মিষ্টির স্বাদও নেওয়া যায়। চমচম, কালোজাম, ক্ষীর চমচম, রসমালাই, ছানার পোলাও, মিহিদানা, পানতোয়া ও দই থাকেই। আর দোকানটির নলেন গুড়ের প্যাড়া সন্দেশ তো দেশজুড়ে প্রসিদ্ধ। শীতের মৌসুমে এই মিষ্টির জন্য একপ্রকার হইচই পড়ে যায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই সন্দেশ নিতে আসেন।
শুধু খাবারের স্বাদ নয়, জলযোগের সঙ্গে যশোরের পুরোনো স্মৃতিও জড়িয়ে আছে। পারিবারিক সূত্রে দোকানটির বর্তমান কর্ণধার সাধন বিশ্বাস। কথায়–কথায় বললেন, ১৮৯৩ সালে জলযোগের গোড়াপত্তন হয় তাঁর পূর্বসূরি কালীপদ বিশ্বাসের হাতে। সে হিসাবে বয়স ১৩২ বছর। দোকানের চেয়ার-টেবিলগুলোও বহু বছরের পুরোনো। যদিও সংস্কার হয়েছে, তা-ও খুবই সামান্য।
২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘বহরমপুর ভ্রমণ’ শিরোনামে লিখেছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। এতে তিনি যশোর শহরের চৌরাস্তার একটি দোকানে লুচি-মিষ্টি খাওয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন। বিষয়টির কথা তুলতেই সাধন বিশ্বাস বললেন, ‘আমাদের এখানেই এসেছিলেন। হুমায়ূন আহমেদও এসেছেন একবার। তখন আমি স্কুলে পড়ি।’
জলযোগের জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে রয়েছে লুচি আর ডাল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিকৃবিতে শিবিরের ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় ‘রান উইথ সাউ শিবির’ ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা। বিজয়ের ৫৪ বছর উদযাপন উপলক্ষে শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণে ও শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ‘৩৬ জুলাই’ গেইট থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে শাহী ঈদগাহ ময়দান এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। আয়োজকদের তথ্য মতে, প্রতিযোগিতায় অনলাইনে নিবন্ধন করেন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে পুরো আয়োজনে ছিল উৎসবের আমেজ। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে অংশগ্রহণকারীদের টিশার্ট ও বাংলাদেশের পতাকা দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতা শেষে সেরা দশ বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয় এবং সকল অংশগ্রহণকারীর জন্য সকালের নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়।
আরো পড়ুন:
শিবিরকে জড়িয়ে ছাত্রদল নেত্রীর পোস্ট, ইবি শিবিরের নিন্দা-প্রতিবাদ
সেমিনার: ১৫ বছরে গুম শিবিরের ২৫৫ জন, সাতজন ফেরেননি এখনো
ম্যারাথন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহাম্মেদ কনকের সঞ্চালনায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম সম্পাদক হাফেজ ইউসুফ ইসলাহি।
হাফেজ ইউসুফ এলাহী বলেন, "আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আমাদের সূর্য ওঠার সাথে সাথে জেগে উঠতে হবে, পরিশ্রমী হতে হবে। সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবির প্রচলিত কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের মতো নয়। ইসলামী ছাত্রশিবির একটি স্বতন্ত্রধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইসলামী ছাত্রশিবির বিশ্বাস করে এদেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।"
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি রাকিব হোসেন শান্ত বলেন, " শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, আগ্রহ এবং উদ্দীপনা দেখে আমরা আনন্দিত। আগামীতে শিক্ষার্থীদের এমন সাপোর্ট পেলে আমরা ছাত্রবান্ধব নতুন নতুন চমক নিয়ে হাজির হবো ইনশাআল্লাহ।"
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম সাজু, সিকৃবির সাবেক সভাপতি ও সিলেট মহানগরের এইচআরডি সম্পাদক ডা. কলিম উদ্দীনসহ ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
ঢাকা/আইনুল/জান্নাত