ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বর্তমান পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনের আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

এ রায়ের ফলে ওই মামলা থেকে মিনহাজ মান্নান অব্যাহতি পেলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মঈন ফিরোজী।

আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ওই মামলায় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নান ইমনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। পলাতক অপর চার আসামি হলেন সুইডেনপ্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরিপ্রবাসী সামিউল ইসলাম খান ওরফে স্যাম ওরফে জুলকার নাইন, আশিক ইমরান ও ওয়াহিদুন নবী।

দিদারুল ইসলাম ও মিনহাজ মান্নান নারাজি আবেদন দিলে তা নামঞ্জুর হয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে মিনহাজ মান্নান একই বছর হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মিনহাজ মান্নানের ক্ষেত্রে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। শুনানি শেষে আপিল মঞ্জুর করে আজ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে মিনহাজ মান্নানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৫ মে মামলাটি করা হয়। ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এতে কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ইসলামকে আসামি করা হয় এবং আটজনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।

আরও পড়ুন১০ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর০৪ মার্চ ২০২১

এ মামলায় কারাবন্দী মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান। এ কারণে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, অভিযোগ গঠনের সময় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির ছিলেন দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান। তাঁরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। সেদিন কার্টুনিস্ট কিশোর আদালতে হাজির না থাকায় তাঁর জামিন বাতিল করা হয়।

আরও পড়ুনআজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত লেখক মুশতাক২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ দ র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মেট্রোরেল দুর্ঘটনা: স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের, প্রতিবেদন দিতে হবে ৩০ দিনে

স্বাধীন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে পুরো মেট্রোরেল প্রকল্পের কাঠামোগত (সব লাইন ও পিলার) সক্ষমতা ও নিরাপত্তা নিরীক্ষা বিষয়ে বিস্তৃত তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

পৃথক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তা পালন করতে হবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবকে।

একই সঙ্গে একটি রুলও দিয়েছেন হাইকোর্ট। নিহত আবুল কালামের পরিবারকে পর্যাপ্ত এবং অবিলম্বে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলীসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এক বছর আগে ঢাকার মেট্রোরেলের স্তম্ভের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার পর গত রোববার (২৬ অক্টোবর) আবার একই ঘটনা ঘটে। এবার আবুল কালাম নামের পথচারী এক যুবকের মৃত্যু ঘটে। তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা সেদিনই দিয়েছিল সরকার, সেই সঙ্গে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।

ওই দুটি ঘটনার প্রেক্ষাপট, কারণ ও ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন এবং সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি বা অবহেলা আছে কি না, তা নিরূপণে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন গত সোমবার একটি রিট আবেদন করেন।

ভুক্তভোগী পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে এবং পুরো মেট্রোরেল প্রকল্পের কাঠামোগত সক্ষমতা ও নিরাপত্তা নিরীক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা চেয়ে একই দিন আরেকটি রিট আবেদন করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য আইনজীবী তনু হাওলাদার। আবেদন দুটির শুনানি নিয়ে আদালত আজ আদেশের জন্য রেখেছিলেন।

এদিকে মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দিতে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন এবং নিহত আবুল কালামের পরিবারকে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চেয়ে করা আরেকটি আবেদন আজ হাইকোর্টে দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর। এটি সম্পূরক কার্যতালিকায় ওঠে।

তিনটি আবেদনের ওপর একসঙ্গে আদেশ দেওয়া হয়। পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৩ ডিসেম্বর দিন রেখেছেন আদালত। আদালতে শুনানিতে রিট আবেদনকারী তিনজনই ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

আদেশের পর আইনজীবী তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, অবকাঠামো বিষয়ক প্রকৌশলী ও বেসরকারি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে স্বাধীন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ওই কমিটি গঠন করতে হবে। মেট্রোরেল দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ প্রদান বিষয়ে বিস্তারিত বিধান অন্তর্ভুক্ত করে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।

আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, মেট্রোরেল আইন ২০১৫ সালে প্রণীত হয়েছিল। এই আইনের ২৫ ধারায় বলা আছে যে মেট্রোরেল পরিচালনার সময় দুর্ঘটনার ফলে যদি কোনো ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হন বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান, তাহলে লাইসেন্সি তাঁকে বা ক্ষেত্রমতে তাঁর পরিবারকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও পরিমাণে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন। এই আইনের অধীনে ২০১৬ সালে মেট্রোরেল বিধিমালা হয়। তবে এতে ক্ষতিপূরণ বিষয়ে কোনো পদ্ধতি বা পরিমাণ উল্লেখ নেই। যে কারণে রিটে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের নির্দেশনাও চান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করবে রিয়াল মাদ্রিদ
  • যেভাবে বাঁচবে মেছো বিড়াল
  • পাকিস্তান ও আফগানিস্তান কেন কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারছে না
  • মেট্রোরেল দুর্ঘটনা: স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের, প্রতিবেদন দিতে হবে ৩০ দিনে
  • পাখি তাড়াতে কত কী করা হলো, তবু তারা এলাকা ছাড়েনি
  • জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবের কারণে পরিবার দেউলিয়া, তাই খুন করেছেন: আসামির স্বীকারোক্তি
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে চালু হলো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম
  • রেকর্ড সংখ্যাক কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে অ্যামাজন
  • অ্যামাজন ৩০ হাজার করপোরেট কর্মী ছাঁটাই করছে