সারা হোসেনের প্রশ্ন, ‘পুলিশ কি পুরোনো নিপীড়ন বন্ধ করবে’
Published: 24th, November 2025 GMT
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেনের প্রশ্ন, পুলিশ কি পুরোনো নিপীড়ন বন্ধ করবে? আইনের অপব্যবহার হলে পুলিশ কি জবাবদিহির মুখোমুখি হবে? আদালত কি সাহস দেখাবেন?
‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন–সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ: ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা’বিষয়ক এক আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে সারা হোসেন এসব প্রশ্ন তোলেন। আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৫’ সম্মেলনের তৃতীয় দিনের একটি পর্বে এই আলোচনা হয়।
গত এক বছরে সাংবাদিকদের নির্বিচার গ্রেপ্তারের ধরন কমেছে বলে উল্লেখ করেন সারা হোসেন। একে ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু আদালতের ভূমিকা আরও বিশ্লেষণ করা দরকার। গবেষণায় বিচারিক আদেশগুলো বিশ্লেষণের পরামর্শ দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ জবাবদিহিহীন ছিল। একইভাবে বিচারব্যবস্থাও কতটা স্বাধীন ছিল, তা দেখা দরকার।
এখনো সাংবাদিকেরা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আটক হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন সারা হোসেন। তিনি বলেন, অর্থাৎ সমস্যা শুধু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ), সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) নয়। সমস্যা হলো বৃহত্তর মতপ্রকাশের স্বাধীনতায়।
সারা হোসেন বলেন, শুধু সাইবার আইন না, এখন যে অবস্থা, তাতে দেখা যাচ্ছে, আবার নতুন করে অনেকে বিশেষ আমলের দণ্ডবিধিকে আবিষ্কার করছে। সাইবার সুরক্ষা আইনের বাইরে গিয়ে নানা দিকে যাচ্ছে। একই সঙ্গে মব চলছে। মব দিয়ে মামলাটা যাতে ঠিকমতো না চলতে পারে, আইন নিজের মতো যাতে না চলতে পারে, জোরজবরদস্তির কারণে অন্যদিকে যাতে চলে যায়, সেই অবস্থা সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, পুরোনো আইনগুলো কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেটি দেখা দরকার। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের অনুমোদন ছাড়া এখন ম্যাজিস্ট্রেট মামলা নিয়ে নিচ্ছে। পুলিশও ব্যবস্থা নিচ্ছে।
প্রেস কাউন্সিল যথাযথভাবে কাজ করছে না বলে মন্তব্য করেন সারা হোসেন। তিনি বলেন, তাই গণমাধ্যম কমিশনের যে সুপারিশ এসেছে, তা ভালো। পাশাপাশি এই মুহূর্তে মানবাধিকার ও তথ্য কমিশনকে সক্রিয় করা প্রয়োজন, যাতে সবকিছু আদালতে না গিয়ে এসব কমিশনে সমাধান আসে।
সারা হোসেন বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছিল, তা কখনোই বিচার শেষ করার জন্য ছিল না; বরং কথা বলা বন্ধ করার জন্য, লেখা বন্ধ করার জন্য করা হয়েছিল।
এখন আইনি কাঠামোতে পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে সারা হোসেন বলেন, ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের গাইডলাইন এখন সিআরপিসি সংশোধনীতে যুক্ত হয়েছে। এটা বড় অগ্রগতি; কিন্তু বাস্তবায়ন এখনো দুর্বল।
সিজিএসের গবেষণা সহযোগী রোমান উদ্দিনের সঞ্চালনায় এই পর্বে আরও বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিতে শীর্ষে প্রথম আলো
দৈনিক পত্রিকা সমাজের দর্পণ। সংবাদ পরিবেশনায় মান, নিরপেক্ষতা ও পেশাদারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশের শীর্ষে আছে প্রথম আলো। উপমহাদেশের মধ্যে শক্তিশালী ও পেশাদার গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রথম আলো অন্যতম। দীর্ঘদিন ধরে তারা পাঠকের আস্থা ধরে রেখেছে। প্রথম আলো দেশের স্বার্থে কাজ করুক, এটাই পাঠকদের প্রত্যাশা।
শনিবার বিকেলে ঝালকাঠিতে প্রথম আলোর সুধী সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। পত্রিকাটির ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের কাজী খলিলুর রহমান মিলনায়তনে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, গবেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, সাংবাদিক, নারীনেত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার প্রতিনিধিরা প্রথম আলোর ভূমিকা, সাংবাদিকতা, নিরপেক্ষতা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে খোলামেলা মতামত ব্যক্ত করেন।
সমাবেশের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ঝালকাঠি প্রতিনিধি আসম মাহমুদুর রহমান। এতে জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সাকিনা আলম বলেন, এখন পরিবেশের ওপর চাপ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সংবাদপত্র হিসেবে প্রথম আলোকে পুনর্ব্যবহৃত (রিসাইক্লিং) কাগজ ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।
মুক্তিযুদ্ধের তরুণ গবেষক ইসমাইল মুসাফির প্রথম আলোর মুদ্রণের মান ও বিজ্ঞাপনের ভাষায় নতুনত্ব আনায় প্রশংসা করেন। গ্রন্থাগারের উদ্যোক্তা নারায়ণ চন্দ্র মিস্ত্রি বলেন, গুণী মানুষদের নিয়ে প্রথম আলোর ধারাবাহিক প্রতিবেদন করা উচিত।
ঝালকাঠি পৌর বিএনপির সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল হাসান বলেন, ‘লিমনের ঘটনায় রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রচণ্ড চাপের মুখে আমরা যখন আদালতে লড়ছিলাম, তখন প্রথম আলো নিয়মিত প্রতিবেদন করে লিমনের পক্ষে সত্য তুলে ধরেছিল। শুধু তখনই নয়, জুলাই অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তারা সাহসী প্রতিবেদন করে জাতিকে সঠিক তথ্য দিয়েছে। এই ভূমিকা দেশের স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
জেলা জামায়াতের আমির হাফিজুর রহমান বলেন, সংবাদ পরিবেশনায় মান, নিরপেক্ষতা ও পেশাদারির কারণে প্রথম আলো দীর্ঘদিন ধরে দেশের শীর্ষে আছে। গণমাধ্যমের কাজ হলো সমান দৃষ্টিতে সমাজকে দেখা—এটাই তাদের শক্তি।
ঝালকাঠিতে প্রথম আলোর সুধী সমাবেশে আগত অতিথিরা। শনিবার বিকেলে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের কাজী খলিলুর রহমান মিলনায়তনে