নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, তারিখ ঘোষণা আমাদের হাতে নেই: ইসি আবুল ফজল
Published: 15th, January 2025 GMT
এই মুহূর্তে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা নির্বাচন কমিশনের হাতে নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে রাজনৈতিক মতৈক্য যেখানে গিয়ে দাঁড়াবে আমরা সে অনুযায়ী নির্বাচন করব। এই মুহূর্তে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা নির্বাচন কমিশনের হাতে নেই। এটা একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতি, তাই একটি রাজনৈতিক সমঝোতা অনুযায়ী আমরা নির্বাচন করব।
আজ বুধবার বিকেলে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে খুলনা অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, খসড়া ভোটার তালিকা গত ২ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয়েছে এবং আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এই কার্যক্রমের পাশাপাশি আমরা ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং যাচাইকরণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকার হালনাগাদ করা হবে।
নির্বাচন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আবুল ফজল মো.
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন। খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গণভোট ভবিষ্যতে সংকট তৈরি করবে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন অর্থাৎ নিরপেক্ষ সরকার। তারা অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়। তবে, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল একে আরো জটিল করে দিল পিআর পদ্ধতি, তারপরে গণভোট আগে বলে। এখন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, গণভোটের কোনো আইনি ভিত্তি নেই। সেটার যদি আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে কিন্তু এটা ভবিষ্যতে সংকট তৈরি করবে।”
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর পক্ষ থেকে পটুয়াখালী সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নে গনি জমাদ্দার ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগমকে আর্থিক সহায়তা হস্তান্তর শেষে বিঘাই হাই স্কুল সংলগ্ন মাঠে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
এবার দিনের ভোট রাতে হবে না: আমির হামজা
দুর্নীতিতে ৩ বার চ্যাম্পিয়ন দলকে জনগণ আর ভোট দেবে না: তাহের
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ইউনূস সাহেবের সরকার জুলাই অভ্যুত্থান, আন্দোলন ও বিপ্লবের সরকার। এই সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের। আমরা এখনো সমর্থন প্রত্যাহার করিনি বরং এখনো আস্থা রাখি। কিন্তু, আস্থার জায়গাটি দুর্বল করায় নিশ্চয়ই আস্থা নেই অন্তর্বর্তী সরকারের।
তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন যে, বিদ্যুতের জন্য চুক্তি করেছিল শেখ হাসিনা ভারতের প্রাইভেট কোম্পানি আদানির সাথে। সেটা শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থে করেনি, জনগণের স্বার্থে করেনি। সেটা করেছে ওই বিদ্যুৎ কোম্পানির স্বার্থে। কারণ, ভারতের একটি কোম্পানির সাথে যদি তিনি দেশের স্বার্থ নষ্ট করে চুক্তি করেন তাহলে ভারত শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখবে। পৃথিবীতে একমাত্র শেখ হাসিনা এই কাজটি করেছেন। নদীবন্দর সমুদ্রবন্দর যদি ক্রমান্বয়ে বিদেশিদের হাতে যেতে থাকে, তাহলেও তো একটা নিরাপত্তার প্রশ্ন, তাহলেও তো এটি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। ড. ইউনূসকে তো অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে, শেখ হাসিনা যা যা করেছেন তা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে করেছেন। যার কারণে মানুষ মনে করেছে, একটা সময় তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। বাংলাদেশের জনগণের যে টাকা আমানত রাখা হয়, সেই ব্যাংকগুলোকে হরিলুট করার জন্য তিনি কাজ করেছেন। সেটার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেটা ড. ইউনূস সাহেবকে দেখতে হবে। বিদেশিদের সাথে চুক্তির ক্ষেত্রে দেশের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, জুলাই সনদ হয়েছে। এর ৮৪টি ধারা কয়জন মানুষ জানে। মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে জানতে চায় যে, আমার খাদ্য সরবরাহ ঠিক আছে কি না, চালের দাম কমল কি না, আলুর দাম কমল কি না। আলু ৮০ টাকা হয়ে যায়, এখন পঞ্চগড়ের দিকে আলু বিক্রিই করতে পারছে না। কৃষকের উৎপাদনে যে খরচ হয়েছে, সেই উৎপাদন খরচই তুলতে পারছে না। এজন্য সমন্বিত পলিসি থাকলে কৃষকরা এভাবে মাটির সাথে মিশে যেত না। সত্যিকারের জনবান্ধব সরকারের এটি একটি নীতি এবং নমুনা যে, তারা কৃষককে বাঁচাবে, শ্রমিককে বাঁচাবে, নিম্নআয়ের মানুষকে বাঁচাবে, ক্ষুধার্ত মানুষকে বাঁচাবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন— আমরা বিএনপি পরিবারে আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমান, যুগ্ম আহ্বায়ক পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার কুট্টি ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটনসহ বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
কয়েকদিন আগে একটি অনলাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয় যে, সাত দিন ধরে না খেয়ে আছেন মো. গনি জমাদ্দার (৭০) ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম (৫০)। বিষয়টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নজরে আসলে তিনি আমরা বিএনপি পরিবারের নেতাকর্মীদেকের ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন। বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে সহায়তা পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গনি ও মমতাজ।
ঢাকা/ইমরান/রফিক