বাংলাদেশিদের পছন্দকে সম্মান করে চীন
Published: 21st, January 2025 GMT
বাংলাদেশের জনগণের পছন্দকে সম্মান করে চীন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মঙ্গলবার বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন। ওয়াং ই বলেন, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আত্মমর্যাদা রক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থানকে সমর্থন করে চীন। আমরা আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখতে ইচ্ছুক। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তিতে গত সোমবার চার দিনের সফরে চীন যান উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। বিজ্ঞপ্তিতে তাঁর বরাতে বলা হয়েছে, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং জনগণের সমর্থন রয়েছে। চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, অবকাঠামো, চিকিৎসা, পানি সংরক্ষণ, মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা আরও গভীর করতে চায় বাংলাদেশ। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চীনের সমর্থনকে ধন্যবাদ জানায়। বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে এক চীন নীতি মেনে চলে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগে সহযোগিতায় সমঝোতা স্মারক সই করেছে।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে ছিল চীন। ড.
তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার দেশ প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্কের কূটনীতিকে গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশের জনগণের জন্য সুপ্রতিবেশী ও বন্ধুত্বের নীতি অনুসরণ করে। সম্পর্কের পঞ্চাশতম বার্ষিকী ‘চীন-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময়ের বছর’। চীন বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব অব্যাহত রাখা ছাড়া কৌশলগত যোগাযোগ শক্তিশালী করতে চায়। সহযোগিতা গভীর করার মাধ্যমে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে আগ্রহী।
চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ পলিট ব্যুরোর সদস্য ওয়াং ই বলেন, চীন ও বাংলাদেশ ভালো প্রতিবেশী এবং অংশীদার। একে অপরকে সাহায্য করে এবং উন্নয়ন চায়। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৫০ বছরে উভয় পক্ষ একে অপরকে সম্মান করেছে। পারস্পরিক লাভের এ সম্পর্ক অন্যদের জন্য উদাহরণ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
সরকার জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে টালবাহানা করছে: ফরহাদ মজহার
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ করেছেন কবি ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আপনারা গণঅভ্যুত্থানের সরকার। আপনাদের প্রথম কাজ—জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। কিন্তু, আপনারা এই ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে এখনো কোনো প্রক্রিয়া শুরু করেননি, টালবাহানা করছেন। বিভিন্ন এলিট কমিশন গঠন করে আমাদের মন ভোলানোর চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশের জনগণের এটা বোঝার মতো বুদ্ধি রয়েছে।”
শুক্রবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) স্বৈরাচারমুক্ত করার দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে ফ্যাসিস্টবিরোধী জুলাই নেটওয়ার্ক।
সমাবেশে ফরহাদ মজহার বলেন, “বিভিন্ন দাবিতে যখন আন্দোলন তৈরি হচ্ছে, তখন আপনারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে, তরুণদের বিরুদ্ধে নানা রকম প্রচারণা চালাচ্ছেন। আমরা তা পর্যবেক্ষণ করছি। আপনাদের এজেন্সি ছাত্রদের মধ্যে বিভক্তি তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আপনার ভাববেন না, এটা বোঝার মতো কাণ্ডজ্ঞান জনগণের নেই। ছাত্রদের সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতে যেসব এজেন্সি কাজ করছে, আমরা তাদের চিনি। তাদের বলব জনতার কাতারে দাঁড়াতে। ছাত্রদের বলব, তথাকথিত মতাদর্শিক তর্ক করে নিজেদের মধ্যে বিরোধ বাড়াবেন না। এটা ফ্যাসিস্টদের কৌশল।”
তিনি বলেন, “আমাদের কাজ হলো—জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আন্দোলন জারি রাখা। এজন্য অবিলম্বে জুলাই ঘোষণার ওপর সবার জোর দিতে হবে। মনে রাখবেন, ফ্যাসিস্ট শক্তি রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে ও ক্ষমতার অন্দরমহলে যেসব প্রাসাদ তৈরি করেছে, তা যদি ৩২ নম্বরের মতো গুঁড়িয়ে দিতে না পারি, তাহলে আগামী দিনে বাংলাদেশের জনগণের কপালে অনেক দুঃখ আছে।”
“অন্তর্বর্তী সরকারের শিথিলতা আমাদের অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাদের শিথিলতা বাংলাদেশকে বিপজ্জনক জায়গায় ঠেলে দিচ্ছে। আমরা ফ্যাসিস্ট শক্তিকে উৎখাত করেছি, কিন্তু তার আরোপিত সংবিধান এখনো বাতিল করতে পারিনি। ঠিক তেমনই টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতকে এখনো ফ্যাসিস্ট শক্তির কাছ থেকে মুক্ত করতে পারিনি।”
ফরহাদ মজহার আরো বলেন, “তথ্য প্রযুক্তি খাতকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, ইন্টারনেট বন্ধ করে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি করে যারা শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রেখেছিল, তারা এখনো বহাল আছে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ-সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে, এটাকে আমরা সমর্থন করি। এখন আপনাদের (সরকার) কাজ হলো ফ্যাসিস্ট শক্তির সহযোগী ইন্টারনেট ও টেলিকম প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করা, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা। এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে আমরা বিটিআরসির সামনে অবস্থান নেব।”
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন— লেখক জাহিদ জগৎ, কবি মোহাম্মদ রোমেল, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাফিউল ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকা/এম/রফিক