জাতীয় পার্টির সাথে বৈষম্য শুরু হয়েছে: জিএম কাদের
Published: 22nd, January 2025 GMT
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘‘জাতীয় পার্টির সাথে বৈষম্য শুরু হয়েছে। রাজনীতিতে আমাদের কোণঠাসা করতে চাচ্ছে সরকার। আমাদের স্বাভাবিক রাজনীতিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মামলা হচ্ছে। সে হিসাবে আমরা নব্য ফ্যাসিবাদের শিকার মনে হচ্ছে।’’
বুধবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে নরসিংদী জেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
‘দেশ এখন সঠিকভাবে চলছে না’ জানিয়ে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে, এমন গ্যারান্টি দিতে পারছে না কেউ। দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মাঝে হাহাকার উঠছে। সাধারণ মানুষ আয় দিয়ে ব্যয় নির্বাহ করতে পারছে না। আধাপেট খাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। বিভিন্ন কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার কারণে দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে।’’
‘‘এককথায় দেশে অভুক্ত ও অর্ধভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। দুর্বল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়লে তখন যে কোনো অজুহাতে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। এতে অর্থনীতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হলে রাজনীতিতে অস্থিতিশীল ও বিপজ্জনক অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে’’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার স্বাভাবিকভাবে দেশ চালাতে পারছে না। সরকার চেষ্টা করছে, তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। কিন্তু তারা সফল হতে পারছে না। তাদের নির্দেশ ও পরিকল্পনা অনেক সময় কার্যকর হচ্ছে না, এটাই বাস্তবতা।’’
‘‘এমন বাস্তবতায় দেশে একটি শক্তিশালী সরকার প্রয়োজন। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন যাতে জনগণের ইচ্ছার সঠিক প্রতিফলন হয়, সে ধরনের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার ছাড়া এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব মনে হচ্ছে না’’ বলেও মনে করেন তিনি।
সরকারের সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, ‘‘দেশ ও বিদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে যে পথে হাঁটতে হবে, সরকার সে পথে হাঁটছে বলে মনে হচ্ছে না। দেশের ৪০টির বেশি রাজনৈতিক দলের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি দলের সাথে বর্তমান সরকার ঐক্য করছে। এতে দেশের বেশিরভাগ মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলো থেকে যাচ্ছে আলোচনার বাইরে।’’
তিনি বলেন, ‘‘সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদ দিতে পারছে না গণমাধ্যম, যেটা বিগত সরকারের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। দেশের মানুষ বিচার পাচ্ছে না, সেবা পাচ্ছে না, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সহায়তা পাচ্ছে না। এ অবস্থায় দেশ একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতির দিকে ধাবিত বলে আশঙ্কা করছি।’’
জাতীয় পার্টি নরসিংদী জেলা শাখার ১১১ সদস্য বিশিষ্ট অনুমোদিত কমিটির সাংগঠনিক সভায় ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পার্টির মহাসচিব মো.
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হেনা খান পন্নি, চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হুমায়ুন খান, দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান ও জেলা নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স থ ত র জন ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা নাশকতাকারীদের অ্যালাউ করবো না: র্যাব ডিজি
র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান বলেছেন, সারা দেশের ৩৩ হাজার পূজা মণ্ডপের মধ্যে ৪৯ টি মণ্ডপে নাশতার চেষ্টায় ১৯ জন দুষ্কৃতিকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ধর্মীয় সংস্কৃতিতে বাঁধা সৃষ্টি কারীদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব তৎপর রয়েছে। আমরা কোনোভাবেই কোনো দুষ্কৃতিকারী বা নাশকতাকারীদের অ্যালাউ করবো না।
বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়া এলাকার রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছাড়া যেদিন করতে পারবো সেদিনই হবে প্রকৃত আনন্দ। আশা করি এদেশে সেদিন আসবে।
একেএম শহিদুর রহমান বলেন, দুর্গাপূজা সুন্দরভাবে সুষ্ঠুভাবে সফলভাবে আয়োজন করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রচেষ্টা ছিল। উৎসব এ পর্যন্ত যেভাবে চলেছে এতে আমরা সন্তুষ্ট।
সারাদেশে ৩৩ হাজারের বেশি পূজামণ্ডপে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছি। সেক্ষেত্রে সবার সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, উৎসবে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটামোটি ভালোভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৪৯টি পূজামণ্ডপে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা হয়েছে। আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা ১৯ জনের বেশি নাশককতাকারীকে গ্রেপ্তার করেছি। এই দেশ সব ধর্মের, সব গোত্রের।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সবার সমান অধিকার নিয়ে যার যার ধর্মের অনুষ্ঠান পালন করবো। একে অপরকে সহযোগিতা করবো। বাধা দেয়ার কোনো প্রশ্ন আসে না। যারা বাধা দেয় তারা আইন ভঙ্গ করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন, র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন, প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও আমলাপাড়া পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা প্রমুখ।