এবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের অবস্থান জানাল শিবির
Published: 4th, February 2025 GMT
গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমান্বয়ে নিজেদের প্রকাশ্যে এনে সংগঠনের অবস্থান জানান দিতে থাকেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে এলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) তারা পর্দার অন্তরালেই ছিল।
অবশেষে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রকাশ্যে এসেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) তার নিজের ফেসবুক আইডিতে তিনি এ পোস্ট শেয়ার করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ি ছাত্রশিবিরের ববি শাখার উদ্যেগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের বিপরীতে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে দুই দিনব্যাপী প্রকাশনা উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রকাশনা উৎসব নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন ববি শাখা শিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল।
ফেসবুকে তিনি বলেন, “সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সৎ দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির ভিশন নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে একটি শিক্ষা-বান্ধব ক্যাম্পাস বিনির্মাণে ছাত্রশিবির কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ছাত্রশিবির সহাবস্থানের ভিত্তিতে ইতিবাচক ছাত্র রাজনীতিতে বিশ্বাস করে এবং জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গত ১১ আগস্ট থেকে ক্যাম্পাসে সব ধরনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এজন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে এ উৎসবের আয়োজন করে বলে জানা গেছে।
ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মিষ্টি বিতরণসহ নানা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মিষ্টি বিতরণসহ নানা আয়োজনে উৎসব করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলের দিকে শিক্ষার্থীরা এসব আনন্দ উৎসব আয়োজন করেন। রাইজিংবিডির প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনা ও কামালকে হস্তান্তরে ভারতের প্রতি বাংলাদেশের আহ্বান
বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর মিষ্টি উৎসব এবং শেখ হাসিনার প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করেছেন জাবি শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) উদ্যোগে এ মিষ্টি বিতরণ উৎসব ও প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
এতে জাকসু নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন হল সংসদের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে দেখা যায়।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের মাধ্যমে জুলাইয়ে শহীদ ও আহত পরিবার এবং দেশের সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফল ঘটেছে। অতিদ্রুত যেন শেখ হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
রায় ঘোষণার পর উল্লাস প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) উদ্যোগে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। বিকেল পৌনে ৪টায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা যায় রাকসু নেতাদের।
মিষ্টি বিতরণের সময় রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “এই রায়কে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য যেভাবেই হোক ইন্টারপোলের মাধ্যমে খুনি হাসিনাকে দেশে এনে জনসম্মুখে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। সব শহীদ পরিবার, নির্যাতিতরা এটা দেখে শান্তি পেতে চায়।”
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডে রায়ে উল্লাস প্রকাশ করে মিষ্টি বিতরণ করেছেন ইবি শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, দুপুরে ঝালচত্বরে শেখ হাসিনার রায় পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা। সরাসরি রায় দেখতে ভিড় করেন শিক্ষার্থীরা।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)
শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় ঘোষণার পর বিকেল ৩টায় শহীদ আবু সাঈদ গেইট থেকে একটি আনন্দ মিছিল নিয়ে প্রধান ফটকে এসে মিষ্টি বিতরণ করেছেন বেরোবি শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনাকে দ্রুত ভারত থেকে এনে শাস্তি কার্যকরের জোর দাবি জানান।
বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, “আজ যে রায় হয়েছে, এতে আমরা খুশি হয়েছি। আগামীতে যারাই সরকার প্রধান হয়ে আসবে, তারা এ বিষয়ে সর্তক থাকবে। তারা জনগণের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করবেন।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এর রায়ে পাঁচটি অভিযোগের তিনটিতে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরো দুইটি অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলার অন্য দুই আসামির মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড। অপর আসামি সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন।
ঢাকা/মেহেদী