নারী এমপিরা শ্রমজীবী নারীর কথা বলছেন কি না, সেটিও দেখতে হবে
Published: 28th, November 2025 GMT
সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে শুধু নারীদের সংসদ সদস্য বানালেই হবে না। দেখতে হবে তাঁরা আদৌ দেশের অধিকাংশ শ্রমজীবী মেহনতি নারীর কথা বলছেন কি না। নারী শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য ও অনিরাপদ কর্মপরিবেশ দূর করা শুধু ন্যায্যতার প্রশ্নই নয়, এটি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত।
এমন অভিমত উঠে এসেছে আজ শুক্রবার রাজধানীর মতিঝিলের একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নারীর রাজনৈতিক কনভেনশনে। এই কনভেশনের আয়োজক ছিলেন দেশের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নারীরা।
বেলা ১১টায় গণসংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া নারীর রাজনৈতিক কনভেনশনে বিভিন্ন অধিবেশনে সভাপত্বি করেন চিকিৎসক আক্তার বানু, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন ও বস্তিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি কুলসুম বেগম। কনভেনশনের খসড়া ঘোষণা উত্থাপন করেন মোরসালিনা আনিকা। পরিচালনা করেন মাহমুদা দীপা ও মনীষা ওয়াহিদ।
কনভেনশনে উন্নয়ন অর্থনীতিবিষয়ক গবেষক মাহা মির্জা বলেন, ‘সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে শুধু নারীদের এমপি বানালেই হবে না। দেখতে হবে তাঁরা আদৌ দেশের অধিকাংশ শ্রমজীবী মেহনতি নারীর কথা বলছেন কি না। নারী শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য ও অনিরাপদ কর্মপরিবেশ দূর করা শুধু ন্যায্যতার প্রশ্নই নয়, এটি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত। এ জন্য কর্মপরিবেশ উন্নত করা এবং নারী-পুরুষের সমকাজের সমমজুরি নিশ্চিত করার সংগ্রাম আমাদের অপরিহার্য কর্তব্য।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপ্তি দত্ত বলেন, নারীর অধিকারহীনতা ও নারীর ওপর নিপীড়নের মূল উৎস রাষ্ট্র, পিতৃতন্ত্র ও পুঁজিবাদের যৌথ কাঠামো। শ্রম, সম্পত্তি, পরিবার, ধর্ম, সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রেই নারীর ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার উপাদান রয়েছে।
অধ্যাপক এ এন রাশেদা প্রশ্ন তোলেন, এই একবিংশ শতাব্দীতেও কি নারীমুক্তি সম্ভব হয়েছে? সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারীর অধিকার নেই। অবহেলিত দেশের নারী সমাজ। দারিদ্র্য বেড়েছে। সেখানে নারীরা আরও বেশি দরিদ্র। দেশের অবহেলিত নারী সমাজকে এক করতে হবে। রাজনৈতিক লড়াইয়ে অগ্রসর হতে হবে।
কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, মানবমুক্তির সংগ্রাম অগ্রসর করতে চাইলে অবশ্যই নারীমুক্তির সংগ্রামকে শক্তিশালী করতে হবে।
বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর নারীদের অধিকারহীনতা, বঞ্চনা, নির্যাতন, নিপীড়নের নেপথ্যে অর্থনৈতিক-সামাজিক ও রাজনৈতিক ভিত্তি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন সিপিবির এই নেতা। তিনি বলেন, এটি কেবল ব্যক্তি নারী-পুরুষ সম্পর্কের বিষয় নয়। রাষ্ট্রীয় কাঠামো, পুঁজিবাদ, সামন্ত-ধর্মীয় কর্তৃত্ব, পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এবং সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ—সবই নারীমুক্তির প্রতিপক্ষ। তাই নারীমুক্তির প্রশ্নকে শুধু পৃথক ও সংকীর্ণ নারী সংস্কারের মধ্যে নয় বরং রাষ্ট্র-অর্থনীতি-সংস্কৃতি-পরিবারসহ সব স্তরের মৌলিক পরিবর্তনের সংগ্রাম হিসেবে দেখতে হবে।
কনভেনশনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, নারীনেত্রী লীলা রায়, সীমা দত্ত, রুখসানা আফরোজ, শুভ্রা কুবি, ফারহানা আক্তার, নাছিমা আক্তার, পার্বতী রিচিল, শামীমা নাসরীন, ইতি রানী দাস, সেলিনা বানু, হামিদা খাতুন, সাহানারা বেগম, খোরশেদুন নাহার ভূঁইয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস, আসমা খাতুন, রিসালাযুন্নাহারসহ অনেকে।
কনভেনশনে বাউলগান পরিবেশন করেন এলিজা পুতুল ও আলমগীর বাউল। এ ছাড়া সংগীত পরিবেশন করেন জলি পাল ও সুইটি বেগম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নারী এমপিরা শ্রমজীবী নারীর কথা বলছেন কি না, সেটিও দেখতে হবে
সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে শুধু নারীদের সংসদ সদস্য বানালেই হবে না। দেখতে হবে তাঁরা আদৌ দেশের অধিকাংশ শ্রমজীবী মেহনতি নারীর কথা বলছেন কি না। নারী শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য ও অনিরাপদ কর্মপরিবেশ দূর করা শুধু ন্যায্যতার প্রশ্নই নয়, এটি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত।
এমন অভিমত উঠে এসেছে আজ শুক্রবার রাজধানীর মতিঝিলের একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নারীর রাজনৈতিক কনভেনশনে। এই কনভেশনের আয়োজক ছিলেন দেশের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নারীরা।
বেলা ১১টায় গণসংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া নারীর রাজনৈতিক কনভেনশনে বিভিন্ন অধিবেশনে সভাপত্বি করেন চিকিৎসক আক্তার বানু, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন ও বস্তিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি কুলসুম বেগম। কনভেনশনের খসড়া ঘোষণা উত্থাপন করেন মোরসালিনা আনিকা। পরিচালনা করেন মাহমুদা দীপা ও মনীষা ওয়াহিদ।
কনভেনশনে উন্নয়ন অর্থনীতিবিষয়ক গবেষক মাহা মির্জা বলেন, ‘সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে শুধু নারীদের এমপি বানালেই হবে না। দেখতে হবে তাঁরা আদৌ দেশের অধিকাংশ শ্রমজীবী মেহনতি নারীর কথা বলছেন কি না। নারী শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য ও অনিরাপদ কর্মপরিবেশ দূর করা শুধু ন্যায্যতার প্রশ্নই নয়, এটি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত। এ জন্য কর্মপরিবেশ উন্নত করা এবং নারী-পুরুষের সমকাজের সমমজুরি নিশ্চিত করার সংগ্রাম আমাদের অপরিহার্য কর্তব্য।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপ্তি দত্ত বলেন, নারীর অধিকারহীনতা ও নারীর ওপর নিপীড়নের মূল উৎস রাষ্ট্র, পিতৃতন্ত্র ও পুঁজিবাদের যৌথ কাঠামো। শ্রম, সম্পত্তি, পরিবার, ধর্ম, সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রেই নারীর ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার উপাদান রয়েছে।
অধ্যাপক এ এন রাশেদা প্রশ্ন তোলেন, এই একবিংশ শতাব্দীতেও কি নারীমুক্তি সম্ভব হয়েছে? সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারীর অধিকার নেই। অবহেলিত দেশের নারী সমাজ। দারিদ্র্য বেড়েছে। সেখানে নারীরা আরও বেশি দরিদ্র। দেশের অবহেলিত নারী সমাজকে এক করতে হবে। রাজনৈতিক লড়াইয়ে অগ্রসর হতে হবে।
কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, মানবমুক্তির সংগ্রাম অগ্রসর করতে চাইলে অবশ্যই নারীমুক্তির সংগ্রামকে শক্তিশালী করতে হবে।
বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর নারীদের অধিকারহীনতা, বঞ্চনা, নির্যাতন, নিপীড়নের নেপথ্যে অর্থনৈতিক-সামাজিক ও রাজনৈতিক ভিত্তি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন সিপিবির এই নেতা। তিনি বলেন, এটি কেবল ব্যক্তি নারী-পুরুষ সম্পর্কের বিষয় নয়। রাষ্ট্রীয় কাঠামো, পুঁজিবাদ, সামন্ত-ধর্মীয় কর্তৃত্ব, পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এবং সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ—সবই নারীমুক্তির প্রতিপক্ষ। তাই নারীমুক্তির প্রশ্নকে শুধু পৃথক ও সংকীর্ণ নারী সংস্কারের মধ্যে নয় বরং রাষ্ট্র-অর্থনীতি-সংস্কৃতি-পরিবারসহ সব স্তরের মৌলিক পরিবর্তনের সংগ্রাম হিসেবে দেখতে হবে।
কনভেনশনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, নারীনেত্রী লীলা রায়, সীমা দত্ত, রুখসানা আফরোজ, শুভ্রা কুবি, ফারহানা আক্তার, নাছিমা আক্তার, পার্বতী রিচিল, শামীমা নাসরীন, ইতি রানী দাস, সেলিনা বানু, হামিদা খাতুন, সাহানারা বেগম, খোরশেদুন নাহার ভূঁইয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস, আসমা খাতুন, রিসালাযুন্নাহারসহ অনেকে।
কনভেনশনে বাউলগান পরিবেশন করেন এলিজা পুতুল ও আলমগীর বাউল। এ ছাড়া সংগীত পরিবেশন করেন জলি পাল ও সুইটি বেগম।