নড়াইল থেকে নিখোঁজের চারদিন পর বাগেরহাট থেকে গৃহবধূ সুরাইয়া শারমিন বৃষ্টির (৩৩) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ফকিরহাট উপজেলার নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের একটি পুকুরে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়। শুক্রবার নিখোঁজ হন নড়াইল সদর হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ের কর্মী বৃষ্টি। তিনি শহরের আলাদাতপুর এলাকার মৃত আব্দুল করিম মোল্যার মেয়ে।

নিহত গৃহবধূর মা সবেজান বেগম গত শনিবার নড়াইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এতে তিনি অভিযোগ করেন, যশোরে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন তিনি। 

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টি গত কয়েক বছর ধরে সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে চাকরি করছেন। তাঁর স্বামী মাহফুজ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, পরিবারের সদস্যরা বৃষ্টির লাশ আনতে বাগেরহাটে গেছেন। কথা বলার মতো কেউ নেই। পরে মোবাইল ফোনেও তাদের পাওয়া যায়নি। ফকিরহাটের পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক ইউপি সদস্য সলেমান শেখের পরিবারের লোকজন থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পুকুরে যান। এ সময় তারা দুটি পা ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। তাঁর শরীরে ইট বাঁধা ও গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দেওয়া ছিল।

ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আলমগীর কবীর বলেন, শরীরে ইট বাঁধা, গলায় কালো রশি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় পুকুরে মরদেহ পাওয়া গেছে। পাড় থেকে জুতাও উদ্ধার করা হয়েছে। পিবিআই ও সিআইডি সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, দু’দিন আগে নারীকে হত্যা করে পুকুরে লাশ ফেলে দেওয়া হতে পারে। কী কারণে কারা তাঁকে হত্যা করেছে, তা উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও খবর দেওয়া হয়েছে।

নড়াইল সদর থানার ওসি মো.

সাজেদুল ইসলাম বলেন, ফকিরহাট থানার পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। শোনা যাচ্ছে, তাঁর সঙ্গে একটি ছেলের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা, তা বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর হত্যা কিনা, বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র র মরদ হ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

মাদাগাস্কারে তরুণদের গণ-অভ্যুত্থানের সুবিধভোগী কি তাহলে সেনাবাহিনী

‘এটি কোনো অভ্যুত্থান নয়।’ কথাটি মাদাগাস্কারের সামরিক কর্মকর্তা কর্নেল মাইকেল র‍্যান্ড্রিয়ানিরিনার। তিনি ১২ অক্টোবর মাদাগাস্কারে ‘অভ্যুত্থান’ ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করেছেন। সিএপিএসএটি নামে একটি বিশেষ সামরিক ইউনিটের কর্নেল র‍্যান্ড্রিয়ানিরিনা ১৪ অক্টোবর নিজেকে মাদাগাস্কের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেন। তিনি দাবি করেছেন, মালাগাসি জনগণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। মালাগাছি বলতে মাদাগাস্কারের নাগরিকদের বোঝানো হয়।

কর্নেল মাইকেল র‍্যান্ড্রিয়ানিরিনা গতকাল শুক্রবার মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

কয়েক সপ্তাহ ধরে মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভোতে তরুণেরা প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিলেন। দেশটিতে বিদ্যুৎ ও পানির সংকটের কারণে প্রথমে সড়কে নেমেছিলেন তরুণেরা। ২৫ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া বিক্ষোভ সরকারের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে দমন করা হয়।

দেশটিতে বিক্ষোভ দ্রুত রূপ নেয় দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, মৌলিক সেবার অভাবসহ বৃহত্তর অসন্তোষের এক গণ–অভ্যুত্থানে। এ বিক্ষোভকে নেপাল, মরক্কোসহ অন্যান্য দেশে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে বিক্ষোভের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে গত শনিবার সমর্থন দেয় সিএপিএসএটি নামের সেনা ইউনিট। পরদিন এই ইউনিটের পক্ষ থেকে মাদাগাস্কারের পুরো সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর থেকে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা মূলত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

রাজধানী আন্তানানারিভোর ১৩ মে স্কয়ারে হাজারো বিক্ষোভকারী নেচেগেয়ে স্লোগান দিতে দিতে রাজোয়েলিনার বিরুদ্ধে মিছিল করেন। দ্বৈত নাগরিকত্ব ও সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের সমর্থন পাওয়ায় মাদাগাস্কারকে ‘ফরাসি দালাল’ বলে আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভকারীরা নানা ব্যানারও প্রদর্শন করেন। অনেক বিক্ষোভকারীর হাতে ছিল মাদাগাস্কারের জাতীয় পতাকা ছিল।

বিক্ষোভের এক পর্যায়ে সিএপিএসএটির কর্নেল মাইকেল র‍্যান্ড্রিয়ানিরিনা মঞ্চে উঠে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনারা কি সামরিক হস্তক্ষেপ মেনে নিতে প্রস্তুত?’ এরপরই জনতা উল্লাসধ্বনিতে ফেটে পড়ে।

কর্নেল মাইকেল র‍্যান্ড্রিয়ানিরিনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ