নড়াইলের কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আকরাম শেখ (৪০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।

বুধবার (১২ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে জয়নগর ইউনিয়নের চর জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আকরাম শেখ চর জয়নগর গ্রামের হেকমত শেখের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চর জয়নগর গ্রামের আনসার জমাদ্দার পক্ষের সঙ্গে একই গ্রামের হেকমত শেখের পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।

বুধবার রাতে হেকমত শেখের ছেলে আকরাম শেখ স্থানীয় একটি দোকানে চা খেতে গেলে আনসার জমাদার পক্ষের ১৫-২০ জন তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নড়াগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, ‘‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আকরাম শেখ নিহত হয়েছেন। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/শরিফুল/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আকর ম শ খ

এছাড়াও পড়ুন:

দিনমজুর বাবার ‘কষ্টের মর্ম বুঝে’ ২ মেয়ে এখন বিসিএস ক্যাডার

আবদুল হান্নান পেশায় দিনমজুর। পাঁচ কাঠা জমি আর টিনের ছাপরার একটি ছোট ঘরেই ছয় সদস্যের পরিবারের ঠিকানা। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চলে কোনোরকমে। তবে আর্থিক সংকটের মধ্যেও মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করেননি তিনি। তাঁর স্ত্রী গৃহস্থালি সামলানোর পাশাপাশি সব সময় মেয়েদের পড়াশোনায় উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। অনেক কষ্ট ও সংগ্রামের পথ পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত এ দম্পতির দুই মেয়ে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন। মা–বাবা ও ভাই–বোনদের নিয়ে এখন তাঁরা সেই পরিশ্রমের আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন।

আবদুল হান্নানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে। বিসিএস ক্যাডার হওয়া দুই মেয়ে হলেন সারমিন খাতুন ও খাদিজা খাতুন। ছোট বোন খাদিজা ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়েছেন। এবার বড় বোন সারমিন ৪৪তম বিসিএসে পশুসম্পদ ক্যাডার পেয়েছেন। দুই বোনের ভাষ্যমতে, তাঁদের এ অবস্থানে আসার পেছনে মায়ের অবদানই সবচেয়ে বেশি।

দুই মেয়ের সাফল্যে মা–বাবার আনন্দ সীমাহীন। বাবা আবদুল হান্নান বলেন, ‘কষ্ট কর‍্যাছি, মেয়েরা বাপ–মায়ের কষ্টের মর্ম বুঝ্যাছে। তারা সফল হয়্যা দ্যাখিয়্যা দিয়াছে। বাপ–মাকে সম্মানের জাগাতে লিয়া গেছে। গাঁয়ের মানুষ হামারঘে এ্যাখুন অনেক সম্মান দ্যাখায়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দ্যায়।’

সারমিন খাতুন ২০০৮ সালে বালিয়াডাঙ্গা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ–৫ পান। একই বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে জিপিএ–৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন খাদিজা খাতুন। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন আবদুর রাজ্জাক। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই দুই বোনের গল্প নিয়ে প্রথম আলোর ‘অদম্য মেধাবী’ সিরিজে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এরপর সারমিন পান প্রথম আলো ট্রাস্টের বৃত্তি এবং খাদিজা পান হামদর্দ লিমিটেডের সহায়তা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগে ভর্তির পর প্রথম আলো ট্রাস্টের বৃত্তির টাকাই ছিল সারমিন খাতুনের মূল ভরসা। ছোট বোন খাদিজাও ভর্তির সুযোগ করে নেন একই বিভাগে। তখন বৃত্তির টাকা ভাগাভাগি করে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন দুই বোন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সারমিনের জন্য বরাদ্দ সিঙ্গেল সিট ব্যবহার করতেন ছোট বোন খাদিজা খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে। একই বিষয়ে পড়ায় দুজনের জন্য আলাদা করে বইপত্র কিনতেও হয়নি।

কঠিন পথ পেরিয়ে বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সারমিন বলেন, ‘আমাদের পরিবারের কষ্টের পথ অনেক লম্বা ছিল। প্রথম আলো ট্রাস্টের বৃত্তির সহায়তা ও মা–বাবার ত্যাগ না থাকলে আজকের অবস্থানে আসা সম্ভব হতো না।’

নিজ বাড়িতে বাবার সঙ্গে বড় মেয়ে সারমিন খাতুন। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ