ভয়েস ফর রিফর্মের উদ্যোক্তা ও সংগঠক ফাহিম মাসরুর বলেছেন, ‘৫৩ বছর ধরে আমরা শুধু ঠকেই যাচ্ছি। জুলাই বিপ্লব আমাদের যে সুযোগ দিয়েছে, সেটি আর হাতছাড়া করা উচিত হবে না। আগামী নির্বাচনে সঠিক জায়গায় ভোট দিয়ে সুযোগের সঠিক ব্যবহার করতে হবে।’

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত চলমান গণ–ইফতারের ২৬তম দিনে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ফাহিম মাসরুর। রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় এবি পার্টির কার্যালয়সংলগ্ন এলাকায় এ গণ–ইফতারের আয়োজন করা হয়।

ইফতার মাহফিলে ফাহিম মাসরুর বলেন, ‘ছোট ছোট বাচ্চা এবং দিনমজুর ভাইয়েরা না থাকলে এই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সফল হতো না। যেসব প্রতিনিধি আমাদের সচ্ছলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন, তাদেরই আপনারা ভোট দেবেন। এবার দায়িত্বটা জনগণের। আপনারা যদি মন থেকে চান, তাহলে চাঁদাবাজির রাজনীতি আর থাকবে না।’

এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘সামনে নির্বাচনে নেতারা যখন ভোট চাইতে আসবেন, তখন প্রশ্ন করবেন, আমি যখন রাস্তায় ঘুমাইছি, তখন আপনি কোথায় ছিলেন? শীতে কম্বল পাইনি, তখন আপনি কোথায় ছিলেন? আমার বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতে পারি নাই, তখন আপনি কোথায় ছিলেন? কালো টাকার কাছে আপনাদের বিবেক কে বিক্রি করা যাবে না।’

সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান বি এম নাজমুল হক বলেন, ‘আমরা মাসব্যাপী গণ–ইফতারে বোঝানোর চেষ্টা করছি, মানুষ মানুষের জন্য। আমাদের একে অপরের পাশে দাঁড়াতে হবে। সব নাগরিকের মুখে খাবার তুলে দেওয়াই হচ্ছে এবি পার্টির রাজনীতি।’

এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় গণ–ইফতার কার্যক্রমে ভয়েস ফর রিফর্মের সংগঠক সাইয়্যেদ কবির, জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা লাবিব মহান্নাত, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ বি এম খালিদ হাসান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্বাস ইসলাম খান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান ব্যাপারী, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সদস্যসচিব সামিউল ইসলাম এবং ছাত্রপক্ষ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রাফি ফাত্তাহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মাছ ধরতে সাগরে যেতে প্রস্তুত জেলেরা

দীর্ঘ ২২ দিন সাগর ও নদীতে মাছ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় বেশিরভাগ জেলে এখন ধার-দেনায় জর্জরিত। অলস সময় কাটিয়েছেন তারা। অপেক্ষার প্রহর শেষে শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে শুরু হবে মাছ ধরা। ইলিশসহ কাঙ্ক্ষিত মাছ শিকারের আশায় গভীর সাগরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা।

মা ইলিশের বাধাহীন প্রজননের জন্য ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাগর ও নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। এ ২২ দিন অর্থকষ্টে দিন কাটালেও তেমন আক্ষেপ নেই জেলেদের। শনিবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। তাই, তাদের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। মাছ শিকারে গভীর সাগরে যেতে শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। 

দীর্ঘদিনের নিরবতা ভেঙে মাঝি ও জেলেদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠেছে মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য বন্দর। কেউ ট্রলারে নতুন রং করছেন। কেউ জাল বুনছেন বা মেরামত করছেন। কেউবা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলছেন ট্রলারে। জেলেদের আশা, তাদের জালে ধরা পড়বে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশসহ অন্যান্য মাছ। 

মহিপুর বিএফডিসি ঘাট সংলগ্ন এলাকার জেলে আবদুল আজিজ বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন আমরা সরকার থেকে মাত্র ২৫ কেজি করে চাল পেয়েছি। তাও প্রকৃত সব জেলে পায়নি। ২৫ কেজি চাল দিয়ে তো আর সংসার চলে না। নিষেধাজ্ঞার আগেও আমরা তেমন ইনকাম করতে পারিনি। তাই, বেশ ধার-দেনা হয়ে গেছে। এবারও যদি মাছ না পাই, তাহলে সারা বছরই ঋণের বোঝা টানতে হবে। 

কলাপাড়ার নীলগঞ্জ এলাকার জেলে সফিক হোসেন বলেন, আমরা সাগরে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। অনেক ট্রলার খাপড়াভাঙ্গা নদীর মোহনা পর্যন্ত গিয়ে নোঙর করে আছে। রাত ১২টার সঙ্গে সঙ্গেই সাগরে জাল ফেলব সবাই। আশা করছি, পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ পাব। তবে, যদি মাছ না পাই, তাহলে আমাদের দুশ্চিন্তার শেষ থাকবে না।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেছেন, এ জেলায় ৬৫ হাজার ইলিশ শিকারি জেলে আছে। নিষেধাজ্ঞা শতভাগ সফল হয়েছে। আশা করছি, জেলেরা জাল ফেললেই ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ পাবেন। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ