নড়াইল সদর উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী ভিড় করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ষাঁড়ের লড়াই ঘিরে দুপুর থেকেই মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেল গড়াতেই বিদ্যালয়ের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মাঠের চারপাশে বসে যায় নানা পণ্যের দোকান। স্থানীয় খাবার, খেলনা, মাটির তৈজসপত্র, হস্তশিল্পসহ নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্করাও লড়াই দেখতে ভিড় করেন। প্রতিযোগিতায় আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩০টি ষাঁড় অংশ নেয়।  

দর্শনার্থীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি কিছুটা শঙ্কাও ছিল। রাফিয়া সুলতানা নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ‘ষাঁড়ের লড়াই দেখতে যেমন রোমাঞ্চকর, তেমনি ভয়ও লাগে। কারণ, মাঝেমধ্যেই ষাঁড়গুলো দৌড়ে মানুষের মাঝে চলে আসে। তবু এ খেলা দেখার আনন্দ আলাদা। তবে ষাঁড়গুলোর অনিয়ন্ত্রিত আচরণ ঠেকাতে এখানে মাঠের চারপাশে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এতে কিছুটা স্বস্তি নিয়েই প্রতিযোগিতা উপভোগ করা যাচ্ছে।’

দর্শনার্থীদের মতে, ষাঁড়ের লড়াই শুধু একটি সাধারণ খেলা নয়; এটি বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রাচীনকাল থেকেই এই লড়াই গ্রামবাংলার মানুষের বিনোদন ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা উচিত, যাতে বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতি ও ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে জীবন্ত থাকে।

কৃপাচার্জ বিশ্বাস নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, আগে বিভিন্ন মেলা, উৎসব ও বিশেষ উপলক্ষে এই লড়াই আয়োজন করা হতো, যেখানে আশপাশের গ্রামবাসী একত্র হয়ে আনন্দ উপভোগ করতেন। একসময় যা ছিল গ্রামীণ জীবনের রোমাঞ্চকর অংশ, এখন তা কেবল স্মৃতির পাতায় ঠাঁই নিতে চলেছে। অনেক দিন পর এই প্রতিযোগিতা দেখতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।

আয়োজকদের একজন মো.

জাহিদুল মোল্যা বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও নতুন প্রজন্মকে এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই এ আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজনে বিপুল দর্শনার্থীর উপস্থিতি প্রমাণ করেছে, এখনো মানুষ এই ঐতিহ্যের প্রতি আকৃষ্ট। প্রয়োজন শুধু ঐতিহ্য ধরে রাখার সচেতন উদ্যোগ। তাই ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র মব

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হলেন অধ্যাপক হযরত আলী

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী। 

বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এই পদে নিযুক্ত করা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম  কাসেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন উপাচার্য নিয়োগের আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য ড. মো. হযরত আলীকে কুয়েটের উপাচার্য পদের রুটিন দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।

এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ