নতুন অধ্যাদেশে মুজিবনগর সরকারের সব সদস্যকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া আছে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

বুধবার (৪ জুন) সকালে ফেসবুকে তিনি এ তথ্য জানান। 

সেখানে তিনি লেখেন, “প্রিয় ভাই-বোনেরা, শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দিন আহমেদসহ মুক্তিযুদ্ধের নেতাদের মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট বাতিল- একটা ফেইক নিউজ। নতুন অধ্যাদেশে মুজিবনগর সরকারের সব সদস্যকে মুক্তিযোদ্ধার স্পষ্ট স্বীকৃতি দেওয়া আছে।”

এর আগে গত ৩ জুন রাত ১১টার দিকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশ করে। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামানের মতো নেতাদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে বলে একটি জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বঙ্গবন্ধু–তাজউদ্দীনসহ মুজিবনগর সরকারের সদস্যরা হবেন ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’, অন্যরা সহযোগী

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠিত মুজিবনগর সরকারের সদস্যরা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে বিবেচিত হবেন। অন্যদিকে মুজিবনগর সরকার গঠনে যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, তাঁরা হবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার এই সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অধ্যাদেশটি জারি করে।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার (মুজিবনগর সরকার) শপথ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী থাকায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। অর্থমন্ত্রী এম মনসুর আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ।

আরও পড়ুনবীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি১১ ঘণ্টা আগে

নতুন অধ্যাদেশে শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে বিবেচিত হবেন বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। তিনি বলেন, মুজিবনগর সরকারের যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সবাই মুক্তিযোদ্ধা। তবে মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে বিবেচিত হবেন।

ফারুক ই আজম বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাইবাছাই করতে গিয়ে দেখা যায়, মুজিবনগর সরকারের কিছু কর্মচারী ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে গণ্য হচ্ছেন। এখন থেকে তাঁরা হবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে কাউকে বাতিল করা হয়নি। শুধু সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। যিনি যে সুবিধা পাচ্ছেন, তিনি সেই সুবিধা পাবেন। শুধু যাঁরা সরাসরি রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন, তাঁরা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হবেন। অন্যরা হবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’।

সংশোধিত অধ্যাদেশে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীদের’ জন্য পাঁচটি শ্রেণি ঠিক করা হয়েছে। প্রথমত, যেসব বাংলাদেশি পেশাজীবী মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশে অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন এবং যেসব বাংলাদেশি বিশ্বজনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। দ্বিতীয়ত, যেসব ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) অধীন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা দূত, মুজিবনগর সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তৃতীয়ত, মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) সঙ্গে সম্পৃক্ত সব এমএনএ (জাতীয় পরিষদের সদস্য) বা এমপিএ (প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য), যাঁরা পরবর্তী সময়ে গণপরিষদের সদস্য হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন। চতুর্থত, স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের সব শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে দায়িত্ব পালনকারী সব বাংলাদেশি সাংবাদিক। পঞ্চমত, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ২১ জন সদস্য এত দিন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হতেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মোহাম্মদ জাকারিয়া পিন্টু, কাজী সালাহউদ্দিন, এনায়েতুর রহমান খান। এখন থেকে তাঁরা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে বিবেচিত হবেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা দেশের ভেতরে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং যেসব ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, তৎকালীন মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন, এরূপ সব বেসামরিক নাগরিক (ওই সময়ে যাঁদের বয়স সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়সের মধ্যে ছিল) তাঁরা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন। এর পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর), পুলিশ বাহিনী, মুক্তিবাহিনী, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার) ও সেই সরকার স্বীকৃত অন্যান্য বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স, আনসার সদস্যরাও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সকালেই পড়ুন আলোচিত ৫ খবর
  • বঙ্গবন্ধুর ‘মুক্তিযোদ্ধা’ মর্যাদা বাতিল হয়নি: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপ
  • নতুন অধ্যাদেশে মুজিবনগর সরকারের সব সদস্যকে মুক্তিযোদ্ধার স্পষ্ট স্বীকৃতি দেওয়া আছে: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
  • মুক্তিযুদ্ধের নেতাদের মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট বাতিল ফেইক নিউজ: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
  • মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন, তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা: উপদেষ্টা ফারুক ই আজম
  • মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ব্যাখ্যা
  • মুজিবনগর সরকারের যারা ছিলেন, তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা: উপদেষ্টা ফারুক ই আজম
  • মুজিবনগর সরকারের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিলের খবর ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’
  • বঙ্গবন্ধু–তাজউদ্দীনসহ মুজিবনগর সরকারের সদস্যরা হবেন ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’, অন্যরা সহযোগী