প্রতীকী ছবি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নির্মাণকাজ শেষ করে দ্রুত চালু করুন

বিগত সরকারের আমলে স্বাস্থ্য অবকাঠামোয় অনেক প্রকল্প চরম সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থাপনা নির্মাণ হওয়ার পর সেগুলো ফেলে রাখা বা চালু না হওয়ার ঘটনা নিয়ে প্রথম আলো একাধিক সংবাদ প্রকাশ করেছে। কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি, এমন চিত্রও নতুন নয়। যেমন ময়মনসিংহে একটি অত্যাবশ্যকীয় শিশু হাসপাতাল প্রকল্পের নির্মাণকাজ ১৬ মাস ধরে বন্ধ হয়ে আছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এ হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০১৭ সালে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরও উপযুক্ত জায়গা খুঁজে না পাওয়ায় ২০২৩ সালে এ হাসপাতালের কাজ শুরু হয়, কিন্তু মাত্র ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ হতেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এই জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির কাজ থমকে গেছে। যেখানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধারণক্ষমতার তিন-চার গুণ শিশু রোগীর চিকিৎসা চলছে এবং আশপাশের ছয়-সাতটি জেলার মানুষ একমাত্র ভরসা হিসেবে এই হাসপাতালের দিকে তাকিয়ে আছে, সেখানে এমন জরুরি একটি প্রকল্পের কাজ এভাবে মাঝপথে থেমে থাকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

একটি বিভাগীয় শহরে জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য জমি খুঁজে বের করতে বছরের পর বছর সময় লাগা—তা সরকারি আমলাতন্ত্রের সমন্বয়হীনতাকেই তুলে ধরে। ২০২৩ সালে কাজ শুরু হওয়ার পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু প্রকল্পের সময়সীমা শেষ হয়ে যায় গত বছরের জুনেই। এই সমন্বয়হীনতা প্রমাণ করে যে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো কার্যাদেশ দেওয়ার আগেই প্রকল্পের আইনি ও অর্থায়নগত সময়সীমা সম্পর্কে অবগত ছিল না, অথবা তা গুরুত্ব দেয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ করে ১০ কোটি টাকা বিল নিলেও আরও ৯ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এই পাওনা পরিশোধ না হওয়ায় ঠিকাদারও কাজ শুরু করতে পারছেন না, যা আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি নির্মাণসামগ্রীতে মরিচা ধরাচ্ছে এবং সরকারি অর্থের অপচয় ঘটাচ্ছে।

বর্তমানে নতুন করে আরও ৩১ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ডিপিপি একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এর অর্থ, জনগণের কষ্টের টাকা দিয়ে শুরু হওয়া একটি কাজ শেষ করতে প্রথম বরাদ্দের অতিরিক্ত আরও অর্থ খরচ করতে হবে। এটি কেবল অর্থের অপচয় নয়, সময় ও জনস্বাস্থ্যেরও অপচয়। নতুন ডিপিপি দ্রুততম সময়ের মধ্যে একনেকে অনুমোদন করে অর্থছাড় নিশ্চিত করতে হবে। ঠিকাদারের পাওনা দ্রুত পরিশোধের ব্যবস্থা করে নতুন করে কাজ শুরু করতে হবে, যাতে হাসপাতালটি দ্রুত চালু করা যায়। হাসপাতালটির নির্মাণ ও চালুর বিষয়ে আর দীর্ঘসূত্রতা কাম্য নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ