বড় জয়ে লিভারপুলের শিরোপা উদ্যাপনের অপেক্ষা বাড়াল আর্সেনাল
Published: 20th, April 2025 GMT
ইপসউইচ ০ : ৪ আর্সেনাল
ইউনাইটেড ০ : ১ উলভস
ফুলহাম ১ : ২ চেলসি
লিভারপুল আজকেই শিরোপা নিশ্চিত করতে পারত। সে জন্য পূরণ হতে হতো দুটি শর্ত। প্রথম শর্তটি ছিল ইপসউইচের বিপক্ষে আর্সেনালের হার এবং দ্বিতীয় শর্ত ছিল লেস্টার সিটির বিপক্ষে নিজেদের জয়। তবে প্রথম শর্তটি পূরণ না হওয়ায় আজ লেস্টার সিটির বিপক্ষে জিতলেও শিরোপা উৎসবে মাতা হবে না লিভারপুলের।
লিয়ান্দ্রো ত্রোসারের জোড়া গোলে ইপসউইচের মাঠে আজ আর্সেনাল জিতেছে ৪-০ গোলে। ফলে এখনো কাগজে-কলমে শিরোপা সম্ভাবনা বেঁচে থাকল ‘গানার’দের।
আজকের জয়ের পর ৩৩ ম্যাচে আর্সেনালের পয়েন্ট এখন ৬৬। এক ম্যাচ কম খেলা লিভারপুলের পয়েন্ট ৭৬।
আজ রাতে পরের ম্যাচে লেস্টারের মুখোমুখি হবে লিভারপুল। সেই ম্যাচ জিতলে পয়েন্ট ব্যবধান গিয়ে হবে ১৩। এরপর লিভারপুল যদি পরের ম্যাচে টটেনহামকেও হারায় তবে আর কোনো হিসাব ছাড়াই চ্যাম্পিয়ন হবে তারা। অর্থাৎ এখন হাতে থাকা ৬ ম্যাচ থেকে ৬ পয়েন্ট পেলেই লিগ চ্যাম্পিয়ন হবে লিভারপুল।
লিভারপুলের অপেক্ষা বাড়ানোর ম্যাচে অবনমন অঞ্চলের দল ইপসউইচকে শুরু থেকেই চেপে ধরে আর্সেনাল। ম্যাচে প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগই দেয়নি মিকেল আরতেতার দল। এমনকি পরিসংখ্যানের দিক থেকেও দুই দলের অবস্থান ছিল দুই মেরুতে।
৭৫ শতাংশ বদলের দখল রাখা আর্সেনাল ২৪ শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রেখেছে, বিপরীতে ২৫ শতাংশ বলের দখল রাখা ইপসউইচ ৪টি শট নিলেও কোনোটি লক্ষ্যে ছিল না। আর দাপুটে পারফরম্যান্স দেখানোর ম্যাচে ত্রোসারের জোড়া গোল ছাড়া অন্য গোল দুটি এসেছে গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি ও ইথান এনওয়ানেরির কাছ থেকে।
একই রাতে অন্য ম্যাচে আবারও হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। মৌসুমের ১৫তম হারটি ইউনাইটেডকে উপহার দিয়েছে উলভস। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে উলভসের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন পাবলো সারাবিয়া। এই হারের পর পয়েন্ট তালিকার ১৪ নম্বরেই থাকল ইউনাইটেড।
ইউনাইটেড না পারলেও শেষ মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়িয়ে দারুণ এক জয় পেয়েছে চেলসি। ফুলহামের বিপক্ষে চেলসির জয় ২-১ গোলে। এদিন ম্যাচের ২০ মিনিটে অ্যালেক্স আইওবির গোলে পিছিয়ে পড়ে চেলসি।
এরপর সমতা ফেরানোর জন্য চেলসিকে অপেক্ষা থাকতে হয় ৮৩ মিনিট পর্যন্ত। তাইরিক গিওর্গির গোলে সমতায় ফেরে ব্লুজরা। আর যোগ করা সময়ে পাবলো নেতোর গোলে জয় নিশ্চিত করেছে চেলসি। এই জয়ে ৩৩ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে চেলসি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীন থেকে গোপালগঞ্জে চীনা নাগরিক
প্রেমের টানে সুদূর চীন থেকে গোপালগঞ্জে ছুটে এসেছেন এক চীনা যুবক। জেলা শহরের নীচুপাড়া এলাকার প্রেমিকা সীমার বাড়িতেই উঠেছেন ওই চীনা নাগরিক। ইতিমধ্যে বিয়েও সম্পন্ন হয়েছে। এতে সীমার পরিবারে চলছে আনন্দের বন্যা। চীন দেশের নতুন জামাইকে দেখতে ভিড় করছেন আশপাশের লোকজনও। সকলের কাছে এই নব দম্পতির জন্য দোয়া চেয়েছেন সীমার পরিবার।
গতকাল সোমবার (৩০ জুন) জেলা শহরের নীচুপাড়া এলাকার সীমার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, গত ৬ মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে গোপালগঞ্জে মেয়ে সীমা আক্তারের (১৮) সাথে পরিচয় হয় চীনা নাগরিক লিউ সিলিয়ানের (৩৫)। এরপর বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। তাদের মধ্যে চলে ভিডিওকলে কথা বার্তা আর খোঁজখবর। দুই পরিবারের সাথেও ভিডিওকলের মাধ্যমে হয় পরিচয়।
এরপই জেলা শহরের নীচুপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. আবুল হোসেন হাওলাদারের মেয়ে সীমার প্রেমের টানে গত শুক্রবার (২৭ জুন) চীন থেকে বাংলাদেশে আসেন লিউ সিলিয়ান। এরপর সোজা চলে আসেন গোপালগঞ্জে। ওঠেন একটি হোটেলে। পরে মেয়ের মাধ্যমে জানতে পেরে হোটেল থেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন মো. আবুল হোসেন হাওলাদার। এরপর লিউ সিলিয়ানের মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনের সম্মতিতে লিউ সিলিয়ান নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং ওই দিনই কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে সীমা ও লিউ সিলিয়ানের বিয়ে সম্পন্ন হয়। লিউ সিলিয়ান ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় তার নতুন নাম রাখা হয়েছে মো. সাদেকুর রহমান সানি।
এদিকে, সোমবার (৩০ জুন) পরিবারের সকল সদস্য ও আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতে পালন করা হয় নানা আনুষ্ঠিকতা। মেয়ের প্রেমের কথা জানার পর প্রেমিক লিউ সিলিয়ানকে মেনে নেন সীমার মা-বাবা। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়েতে সম্মতি দেন তারা।
চীনা ওই যুবক ও জামাইকে দেখেতে সীমার বাড়িতে ভীড় করছেন আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা। বিয়ে হওয়ায় এই নবদম্পতিকে খুশি হয়ে দোয়া করছেন সবাই। যেন তাদের বিবাহ জীবন সুখের হয়।
সীমার বাবা মো. আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, “আমার মেয়ে চীনা নাগরিক লিউ সিলিয়ানের সাথে বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় বলে আমাদের জানান। আমি তাকে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে বললে লিউ সিলিয়ান বিয়ে করবে বলে আমাদের জানায়। পরে আমি আমার মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়েতে সম্মতি দেই। লিউ সিলিয়ান দেশে আসার পর তার মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনের সম্মতিতে এফিডেভিট করে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে রবিবার (২৯ জুন) ছেলে মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়। সোমবার আমার পরিবারের সকল সদস্য ও আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াতের মাধ্যমে নানা আনুষ্ঠানিকতা পালন করি।”
সীমা আক্তার বলেন, “মাস ছয়েক আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। এরপর বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে প্রতিদিনই কথাবার্তা চলতো। একদিন হঠাৎ করে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে। তখন আমি তাকে জানাই সে যদি বাংলাদেশে আসে তাহলে বিয়ে করব। সে আমাকে আশ্বস্ত করে বাংলাদেশে আসবে এবং বিয়ে করবে। সে চীন থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে এয়ারপোর্টে পৌঁছায়। তখন আমার মা-বাবাকে বিষয়টি জানাই। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। আমি ভালবাসার মানুষকে বিয়ে করতে পরে খুশি। ও খুবই ভাল মনের মানুষ। ও আমাকে অনেক ভালবাসে।
লিউ সিলিয়ান জানান, তিনি চায়নার একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। বাংলাদেশে আসার জন্য দুই মাসের ছুটি চেয়েছিলেন। ছুটি না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে প্রেমিকার টানে বাংলাদেশে এসেছেন। এক মাসের মধ্যে যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে বউকে সঙ্গে নিয়ে চীনে চলে যাবেন।
লিউ সিলিয়ান আরো জানান, নিজ ধর্ম ত্যাগ করে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তার নাম মো. সাদেকুর রহমান সানি।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ অনেক ভাল। আমার স্ত্রীর পরিবারের মানুষ অনেক ভাল। আমি ওদের সবাইকে ভালবাসি। সারা জীবন সীমাকে ভালবেসে যাবো। আর ওকে সাথে নিয়ে চীনে চলে যাব। সবার কাছে দোয়া চাই।”