ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একই স্থানে ফের লাইনচ্যুত, ট্রেন চলাচল বন্ধ
Published: 10th, May 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৈরতলায় আট ঘণ্টা পর লাইনচ্যুত মালবাহী ট্রেনের বগি উদ্ধারের আধাঘণ্টা পর একইস্থানে আবারও লাইনচ্যুত হয়েছে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচ।
আজ শনিবার সকালে পৈরতলা রেলগেইট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার জানান, রাতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মালবাহী কন্টেইনার ট্রেনের কোচ উল্টে চট্টগ্রামগামী লাইনে গিয়ে পড়ে। এতে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-চট্রগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল।
পরে সকালে উদ্ধারকারী ট্রেন লাইনচ্যুত কোচ উদ্ধার করে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর একইস্থানে লাইনচ্যুত হয় কক্সবাজার এক্সপ্রেসের একটি কোচ। এতে আবারও বন্ধ হয়ে যায় ডাউন লাইনে রেল চলাচল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় ট র ন ল ইনচ য ত ল ইনচ য ত
এছাড়াও পড়ুন:
তিস্তা মহাপরিকল্পনার ‘আঁধার কাটাতে’ ৫ জেলায় আলোর মশাল
তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ দ্রুত শুরু করার দাবিতে আবারো উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তরাঞ্চল। 'জাগো বাহে তিস্তা বাঁচই’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা- এই পাঁচ জেলায় একযোগে ১১টি স্থানে মশাল প্রজ্জালন করা হয়েছে, সেই আলোর আহ্বান ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় একই সময়ে ১১টি স্থানে হাজার হাজার মশাল জ্বালিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে সব অন্ধকার দূর করার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে, ‘জাগো বাহে, কুন্ঠে সবাই’; ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’।
আরো পড়ুন:
জোটের বিষয়ে কোনো দলের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক হয়নি: আখতার
দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে: র্যাব মহাপরিচালক
আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু আলোর মশাল প্রজ্জ্বালন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তার সঙ্গে সঙ্গে মুহূর্তে লাখো হাত ঊর্ধ্বে তুলে ধরে মশাল।
প্রবাহিত ১৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের তিস্তা নদী রক্ষায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তার ভবিষ্যৎ ঠিক করা না হলে বৃহত্তর রাজনৈতিক আন্দোলন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আসাদুল হাবিব দুলু।
নভেম্বরের মধ্যে কাজ শুরুর আল্টিমেটাম, ‘অন্যথায় রংপুর অচল’
আসাদুল হাবিব দুলু নভেম্বরের মধ্যেই মহাপরিকল্পনার কাজ বাস্তবায়ন শুরু করার অনুরোধ করেছেন সরকারকে।
তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের তিন মাস আগেই তিস্তা মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেওয়া হোক। যদি সময়মতো কাজ শুরু না হয়, তাহলে রংপুরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে রংপুর বিভাগ অচল ও স্তব্ধ করে দেওয়া হবে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “তিস্তা শুধু উত্তরাঞ্চলের নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। অবিলম্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করতে হবে। জনগণ এখন তিস্তার ন্যায্য অধিকার আদায়ে রাস্তায় নেমেছে।”
তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে এবং সরকারের ধীরগতির কারণে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে রয়েছে বলে মন্তব্য করে আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, “তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিপক্ষে যারা দাঁড়াবে, তারা জাতীয় শত্রুতে পরিণত হবেন।”
‘তিস্তা জাতীয় সমস্যা, জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন’
দুলু বলেন, “তিস্তা সমস্যা কোনো স্থানীয় ইস্যু নয়, এটি একটি জাতীয় সমস্যা। দীর্ঘ ষোল বছর এক ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসন রংপুরের মানুষের বুকের ভিতরে জগদ্দল পাথরের মতো বসিয়ে দিয়েছে, তবু আমাদের কান্না থামেনি।”
গত কয়েক মাসে তিস্তার ভাঙন ও চর উত্থানের ফলে লক্ষাধিক মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষিজমি বিলীন হওয়া, বাড়িঘর ভেঙে পড়া ও পরিবেশগত ক্ষতির বিরুদ্ধে স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন। স্থানীয়রা বলছেন, “দীর্ঘদিনের অবহেলায় তিস্তার বুকে জেগে উঠছে অসংখ্য চর, ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি। ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লাখো মানুষ।”
দুলুর দাবি, “নদী রক্ষায় জনগণের এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান প্রমাণ করে যে, তিস্তা ইস্যুটি এখন আর কেবল পরিবেশগত বা অর্থনৈতিক বিষয় নয়, এটি উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন।” তিনি সতর্ক করে দেন, এই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ নেমে আসার আগেই সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
“তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের মানুষ খাদ্যের জন্য রাজধানী অভিমুখে লং মার্চ করতে বাধ্য হবে,” কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন দুলু।
এর আগে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের পক্ষ থেকে লালমনিরহাটে গণমিছিল, গণসমাবেশ, পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। মশাল প্রজ্জ্বালন কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, ছাত্র ও যুব সমাজের নেতাকর্মীরা। তাদের স্লোগান ছিল, ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’, ‘তিস্তার ন্যায্য হিস্যা চাই’।
ঢাকা/রাসেল